রাঙামাটির বাজারে আনারস, ভালো দামে খুশি কৃষক
নিউজ ডেস্ক
রাঙামাটির বাজারে আসতে শুরু করেছে হানিকুইন খ্যাত মৌসুমী রসালো ফল আনারস। স্বাদ আর গন্ধে পাহাড়ের আনারসের সারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়। কোনরকম ক্ষতিকর ঔষধ মিশ্রন ছাড়াই জেলার এই আনারস উৎপাদন হয় বলে চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। আনারস চাষের চারণভুমি নানিয়ারচর ও রাঙামাটি সদরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আনারস চাষিরা ট্রাক ও নৌযানে নিয়ে আসছে জেলা শহরে। শহরের ট্রাক ট্রার্মিনাল, বনরুপা সমতাঘাট ও রিজার্ভ বাজার ঘাট এলাকা হয়ে পাইকারদের হাত ধরে আনারস চলে যাচ্ছে সারাদেশে।
জেলা শহরের তিনটি বাজারে সরেজমিনে দেখা গেছে, আগাম আনারসে ভরপুর হয়ে উঠেছে এই তিন বাজার। ব্যস্ততা বেড়েছে ক্রেতা, বিক্রেতা ও শ্রমিকদের মাঝে। চারদিকে রসালো আনারসের গন্ধে মৌ মৌ করছে। তবে আনারসের আগাম ফলন ভালো হওয়ায় এবং ভালো দামে বিক্রি করতে পেরে খুশি চাষিরা। বর্তমানে রাঙামাটি শহরের বাজারগুলোতে জমজমাট বিক্রি হচ্ছে আনারস। এছাড়াও নানিয়ারচর, বন্দুক ভাঙ্গা ইউনিয়নসহ পুরো জেলার আনারস সরবরাহ হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। স্বাদে-গন্ধে ভরপুর আগাম আনারস পেয়ে স্থানীয়রা অত্যন্ত খুশি।
সদর উপজেলার কুতুকছড়ি এলাকার আনারস বাগানি রনেন চাকমা বলেন, ‘এ বছর ১০ হাজার আনারস চাষ করেছি। ফলন হয়েছে ভালো, দামও ভালো পাচ্ছি। সাপ্তাহিক বাজারে খুচরো ১৫-২০ টাকা দরে মাঝারি ও বড় আকারের আনারস ২৫-৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।’
নানিয়ারচর উপজেলার বগাছড়ি এলাকার বাসিন্দা আনারসচাষি নজরুল ইসলাম জানান, আমি ৪০ হাজার আনারস চারা রোপণ করেছি। গতবারের তুলনায় এবার ভালো ফলন হয়েছে এবং ভালো দামে বিক্রিও হচ্ছে। আনারস চাষ করতে যা খরচ হয়েছে তার দ্বিগুণ লাভ করতে পারব বলে আশা করছি। বড় সাইজের আনারস বিক্রি হচ্ছে জোড়া ২৫-৩৫ টাকা ও ছোট সাইজের আনারস বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা দরে।
পাইকারি মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী মোঃ জানে আলম জানান, আগাম আনারস হওয়ায় মৌসুমের চেয়ে এখন দাম বেশি। ‘মৌসুমে প্রতি পিস ৪-৫ টাকা কিনলেও এখন কিনতে হচ্ছে ১০-১১ টাকা দরে। আমরা এগুলো ১৮-১৯ টাকা দরে বিক্রি করি,’ বলেন তিনি।
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক প্রসাদ মল্লিক বলেন, সাধারণত জুন-জুলাই মাসেই ব্যাপকভাবে উৎপাদন হতে শুরু হয় আনারস। বাজারে যে আনারস উঠছে, সেটি আগাম আনারস। তবে পার্বত্যাঞ্চলের মাটির গুনাগুন ভালো থাকায় এ অঞ্চলে আগাম আনারস ফলনে সুবিধা হয়, রসালো হয়। এ মৌসুমে জেলায় আনারসের চাষ হয়েছে ২১৩০ হেক্টর জমিতে। এবার আগাম ১১০০ হেক্টর জমিতে আগাম মৌসুমি আনারসের চাষ করা হয়েছে। হেক্টর প্রতি উৎপাদন ধরা হয়েছে ২০ মেট্রিক টন এতে করে প্রায় ২২ হাজার মেট্রিক টন আনারস উৎপাদন হয়েছে।