প্রথম ধাপে সাতশ রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসন- পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
নিউজ ডেস্ক
যেকোনো মুহূর্তে শুরু হতে পারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ঢাকা-নেপিদো। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, প্রথম ধাপে সাতশ রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে আগ্রহের কথা জানিয়েছে মিয়ানমার। তবে বাংলাদেশ চায় পরিবারভিত্তিক এগারশ জনকে একসঙ্গে ফেরত পাঠাতে।
মিয়ানমারের জান্তা সরকার এবার রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে নিজেদের আগ্রহের কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে সাতশ রোহিঙ্গাকে দ্রুত ফেরত নিতে তালিকাও পাঠানো হয়েছে ঢাকাকে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে নেপিদো জানিয়েছে, প্রথম ধাপে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুতে প্রস্তুত তারা। তবে বাংলাদেশ চায় রোহিঙ্গাদের পরিবারভিত্তিক প্রত্যাবাসন।
শাহরিয়ার আলম জানান, এখন পর্যন্ত ২৮ হাজার রোহিঙ্গার যাচাই-বাছাই শেষ করেছে মিয়ানমার। পর্যায়ক্রমে সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো সম্ভব বলে আশা করছে বাংলাদেশ। আর এই প্রত্যাবাসন স্বেচ্ছায় ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করেই সম্পন্ন হবার কথা রয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকবে জাতিসংঘও।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরো জানিয়েছেন, মিয়ানমারে নির্বাচন, সামরিক অভ্যুত্থান এবং করোনার কারণে বহুদিন রোহিঙ্গা ফেরত প্রক্রিয়া পুরো থমকে ছিল। চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি দু্দেশের টেকনিক্যাল কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে আবারো শুরু হয় আলোচনা।
বৈঠকে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন। অন্যদিকে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের প্রধান ছিলেন দেশটির ইমিগ্রেশন ও পপুলেশন মন্ত্রণালয়ের উপ-মহাপরিচালক ইয়ে তুন ও।
গত বছরের জানুয়ারিতে চীনের মধ্যস্থতায় ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পর মিয়ানমারের সঙ্গে বৈঠকে দ্রুততার সঙ্গে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত তিনটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আলোকে সব ধরনের সহায়তার প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ।
তাছাড়া উভয়পক্ষ রাখাইনে রোহিঙ্গাদের পূর্ববর্তী আবাসিকতা নিশ্চিতে দেরির কারণ খুঁজে বের করতে কারিগরি পর্যায়ের এই আলোচনায় নিজেদের স্বদিচ্ছার কথা জানায়। বৈঠকে কারিগরি জটিলতা ও তথ্যের ঘাটতির কথা তুলে ধরে মিয়ানমার প্রতিনিধিদল বৈঠকে অনিষ্পন্ন ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া শেষ করতে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছিল।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি।
