অর্থনৈতিক সংকটে পালাচ্ছে মানুষ, ভারতীয় উপকূলে শ্রীলঙ্কান শরণার্থীর ঢল
নিউজ ডেস্ক
শ্রীলঙ্কায় চলমান অর্থনৈতিক সংকটের মুখে দেশটির নাগরিকরা ভারতে আসতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার ভারতের তামিলনাড়ুতে ১৬ শ্রীলঙ্কান শরণার্থীকে উদ্ধার করে উপকূল রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এরপর থেকেই বাড়ছে শরণার্থীদের আগমন।
তামিলনাড়ু ইন্টেলিজেন্সের বক্তব্য অনুযায়ী এটা কেবল শুরু। খুব শীঘ্রই আরও অন্তত দুই হাজার শ্রীলঙ্কার শরণার্থী ভারতে পাড়ি জমাবেন।
গত মঙ্গলবার শরণার্থীদের দুটি দল তামিলনাড়ুতে পৌঁছে। প্রথম দলে ৪ মাসের শিশুসন্তান নিয়ে এক দম্পতি এবং ছয় ও ১২ বছরের দুই সন্তান নিয়ে এক নারী উপকূলে এসে পৌঁছায়। পরবর্তীতে ১০ জনের দ্বিতীয় আরেকটি দল আসে।
শ্রীলঙ্কায় হু হু করে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। চাল ও দুধের মতো খাদ্যপণ্যের দামও আকাশচুম্বী। পেট্রোল ও ডিজেল না থাকায় জ্বালানি পাম্প স্টেশনগুলো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। প্রশ্নপত্র ছাপা ও পরীক্ষা নেওয়ার মতো পর্যাপ্ত কাগজ আমদানি সম্ভব না হওয়ায় স্কুল পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিন শিশুসহ উদ্ধার হওয়া দলটি জানায়, শ্রীলঙ্কায় তাদের কোনো চাকরি নেই। নিত্যপণ্যও মিলছে না। কালোবাজারে চড়াদামে বিক্রি হচ্ছে পণ্য। ফিলিং স্টেশনগুলোতেও দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে মানুষ।
তারা জানায়, ৫০ হাজার রুপির বিনিময়ে এক মাঝি মঙ্গলবার সকালে তাদের রামেশ্বরমের কাছে নামিয়ে দিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভারতীয় উপকূল রক্ষাকারী বাহিনী দলটিকে উদ্ধার করে। সেদিন বিকেলে আরও ১০ জনের একটি দল এলেও তাদের বিবরণ পাওয়া যায়নি।
বুধবার রামানাথপুরমের একটি আদালতে তাদের হাজির করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
১৯৪৮ সালের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে ভয়ংকর অর্থনৈতিক সংকটের মুখে শ্রীলঙ্কা। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটের কারণে শ্রীলঙ্কায় খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের মতো প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতেও চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
শরণার্থীরা জানান দেশটিতে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। প্রতি কেজি চালের দাম ৫০০ টাকা কেজি পর্যন্ত পৌঁছেছে। চিনির দাম প্রতি কেজি রাখা হচ্ছে ২৯০ টাকা। ৪০০ গ্রাম গুড়োদুধের দাম হয়েছে ৭৯০ টাকা।
এর আগে ৮০-র দশকের শুরুতে গৃহযুদ্ধের কারণে শ্রীলঙ্কা থেকে আসা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয় তামিল নাড়ু। বর্তমানে রাজ্যের ১০৭টি শিবিরে প্রায় ৬০ হাজার শরণার্থী বসবাস করছে। এর বাইরে শ্রীলঙ্কা থেকে আসা আরও ৩০ হাজার মানুষ সেখানে বসবাস করছেন।