খাগড়াছড়ির সেনারী চাকমাকে ইউরোপে নিয়ে যাচ্ছে ফুটবল - Southeast Asia Journal

খাগড়াছড়ির সেনারী চাকমাকে ইউরোপে নিয়ে যাচ্ছে ফুটবল

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

অভাবের সংসারের জন্ম তার। সংসারে কেউ নেই শক্ত হাতে হাল ধরার। অনেক কষ্টের মাঝে গ্রামে বেড়ে উঠা। কখনো ভাবতেও পারেননি এই অবস্থানে আসবেন। গল্পটা পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ি সদরের পেরাছড়া ইউনিয়নের সেনারী চাকমার। ফুটবল যাকে নিয়ে যাচ্ছে ইউরোপে।

বাবা-মায়ের চার সন্তানের মধ্যে একমাত্র মেয়ে ১৭ বছরের সেনারী চাকমা। তিন ভাইয়ের পর জন্ম তার। ভাইদের সবাই দিন মজুরির কাজ করে সংসার চালান। এত কষ্টের সংসার থেকে নিজেকে আলাদা করে নিজেকে চেনাচ্ছেন সেনারী।

বিকেএসপির মাধ্যমে সারাদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া ৪০ জনের মধ্যে থেকে ১৬ জন ইউরোপে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। এরমধ্যে সেনারী একজন। তার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক। তার সকল কিছুর দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। এখন ইউরোপে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সেনারী।

নিজের স্বপ্নপূরণের গল্প শুনিয়ে সেনারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি অনেক কষ্ট করে সেই ছোট বেলা থেকে খেলতাম। আমার খুব ইচ্ছে ছিল খেলার মাধ্যমে ভালো কিছু করবো। কিন্তু বাবা-মায়ের অভাবের সংসার হওয়ার কারণে ইচ্ছে পূরণ করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। পরিবারের সবাই দিনমজুরি কাজ করে। তাই আমার পড়ালেখার খরচ চালিয়ে আবার খেলার জন্য খরচ করা সম্ভব ছিল না। ২০১৯ সালে যখন চেঙ্গী একাডেমিতে ভর্তি হই তখন স্টেডিয়ামে যাওয়ার জন্য গাড়ি ভাড়া দিতে অনেক কষ্ট হতো মায়ের। প্রায় তিন কিলোর পথ পায়ে হেঁটে গিয়ে খেলাও সম্ভব ছিল না।

সেনারী আরও বলেন, এখন আমি ইউরোপ যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আশাকরি ভালো কিছু করতে পারবো। আমার পরিবারের অভাব দূর হলে আমি অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারবো। দেশের এবং এলাকার সম্মান বৃদ্ধি করতে নিজের মেধা এবং শ্রম কাজে লাগাবো। আমার ভবিষ্যত নিয়ে সবার কাছে দোয়া চাই।

জেলা ফুটবল কোচ ক্যহ্লাসাই চৌধুরী বলেন, সেনারী চাকমা আমার চেঙ্গী একাডেমিতে ভর্তি হয় ২০১৯ সালে। এরপর থেকেই তার প্রতিভা দেখে আমি তাকে সবসময় বলতাম পরামর্শ দিতাম যেন সে আরও অনেক ভালো করতে পারে। তারই ধারাবাহিকতা সে সবসময় খুব চেষ্টা করতো ভালো কিছু পাওয়ার আসায়। তার যে প্রতিভা আছে আমার বিশ্বাস সে ইউরোপ থেকে প্রশিক্ষণ শেষ করে দেশে আসলে জাতীয় দলে সুযোগ পাবে। দেশ এবং জেলার সম্মান রক্ষার্থে নিজের মেধা ও প্রতিভা কাজে লাগাবে।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, সেনারি চাকমার অনূর্ধ্ব ১৭ নারী ফুটবলে খাগড়াছড়ি জেলা দলের এটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে খেলেছে। সারা দেশ থেকে এই বয়সী ৪০ জন সেরা ফুটবলার বাছাই করে বিকেএসপিতে ২ মাসের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেখান থেকে মাত্র ১৬ জনকে ইউরোপে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। সে আমাদের জেলার গর্ব। আমরা সকলে তার দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে সে অনেকদূর এগিয়ে যাবে।