খাগড়াছড়িতে অপহরণের এগারো দিনেও সন্ধান মেলেনি বাঙালি ব্যবসায়ীর, ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি
 
                 
নিউজ ডেস্ক
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মানিকছড়ি উপজেলাধীন যোগ্যাছোলা ইউনিয়নের খাড়িছড়া এলাকা থেকে আবদুল কাদের (৪২) প্রকাশ মইগ্যা কাদের নামের এক ব্যবসায়ী গত ৫ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে নিখোঁজ হয়। তখন থেকেই পরিবারের সদস্যরা তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে দাবি করেন। পরে নিখোঁজের ছোট ভাই ও স্ত্রীর মুটোফোনে পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠি তাকে অপহরণ করেছে বলে মোটা অংকের টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসছিলে। তবে অপহরণের এগারো দিন অতিবাহিত হলেও তার কোনো সন্ধান দিতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ এপ্রিল সোমবার রাত ৮টার দিকে বাড়ি ফেরার আগ মুহুর্তে মুটোফোনে কথা হয় তার স্ত্রী কহিনুর বেগম’র সাথে। পরে রাতে আর তিনি বাড়ি ফেরেননি। পরের দিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে স্থানীরা খাড়িছড়া মন্দির সংলগ্ন জঙ্গলে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, জুতা, কস্টেপ ও দড়ি দেখতে পেয়ে তাদের খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সেগুলো উদ্ধার করে।
অন্যদিকে, তাকে অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি) গত ৮ এপ্রিল শুক্রবার খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম আঞ্চলিক সড়কের মানিকছড়ি আমতল মোড়ে মানববন্ধন করেন এবং গত ৯ শনিবার এপ্রিল সন্ত্রাসীরা তাকে অপহরণ করেছে দাবী করে অক্ষত অবস্থায় তাকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবীতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন যোগ্যাছোলা ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনসাধারণ।
তবে অপহরণের দীর্ঘ এগারো দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান মেলেনি ও এ ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে আটকও করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। যার ফলে মানিকছড়ি উপজেলা যোগ্যাছোলা ইউনিয়নের কালাপানি, খাড়িছড়া ও পাশ্ববর্তী ছুদুরখীল এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। সন্ত্রাসীরা, তাকে ফেরত দেয়া না দেয়া নিয়ে এক ধরণের সংশয় কাজ করছে পরিবার ও এলাকাবাসীর মাঝে।
একটি সূত্র জানায়, অপহৃত কাদেরের মুক্তিপণ হিসেবে পাহাড়ি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্যরা ৩০ লক্ষ টাকা দাবী করেন। যদিও পরিবারের পক্ষের লোকজন এ ব্যাপারটি এড়িয়ে গেছেন। তাছাড়া গতকাল তাকে ফিরে পেতে পরিবারের পক্ষ থেকে ৬ লক্ষ টাকা প্রদান করার কথা লোকমুখে শুনা গেলেও অদ্যবধি তাকে ফিরিয়ে দেয়নি অপহরণকারীরা।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১লা ডিসেম্বর মানিকছড়ি উপজেলার তিনটহরী ইউনিয়নের একসত্যাপাড়া থেকে যুবলীগ নেতা ইমান হোসেনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। পরে সড়ক অবরোধসহ নানা আন্দোলনের মুখে তাকে লক্ষ্মীছড়ির দুর্গম দূল্যাতলী এলাকা থেকে অক্ষত অবস্থায় ফিরে পান তার পরিবার। অন্য দিকে গত বছরের ২৪ মে উপজেলার বাটনাতলী ইউয়ননের অন্তর্গত ঢাকাইয়া শিবির এলাকার লালটিলা থেকে প্রবাসী পুত্র সাগরকে অবহরণ করা হলেও এখনও তার কোনো সন্ধান পায়নি পরিবার।
