জাতিসংঘে মিয়ানমার নিয়ে প্রস্তাব: পশ্চিমাদের সঙ্গে মতপার্থক্য বাংলাদেশের - Southeast Asia Journal

জাতিসংঘে মিয়ানমার নিয়ে প্রস্তাব: পশ্চিমাদের সঙ্গে মতপার্থক্য বাংলাদেশের

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

মিয়ানমারের চলমান সংকটের সমাধান নিয়ে বাংলাদেশ ও পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ মনে করে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সবচেয়ে বড় সমস্যা। আর পশ্চিমা বিশ্ব মনে করে, আগে মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরুক। এরপর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনসহ বাকি সমস্যার সমাধান করা যাবে।

ঢাকা ও জেনেভায় কর্মরত কূটনীতিকেরা জানিয়েছেন, জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের চলমান অধিবেশনে মিয়ানমারের সমস্যা, বিশেষ করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে এ মতবিরোধের প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা নির্যাতন ও প্রত্যাবাসনকে প্রাধান্য দিয়ে মানবাধিকার পরিষদে একটি প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই প্রস্তাবে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতিকে প্রাধান্য দিতে চায় পশ্চিমা বিশ্বের কয়েকটি দেশ। শুধু তা–ই নয়, প্রত্যাবাসন বিষয়টি নিয়ে তাদের বক্তব্য হচ্ছে, সহায়ক পরিস্থিতি তৈরি হলে এটি নিয়ে আলোচনা করা হবে। এ বিষয়ে কানাডার রাষ্ট্রদূত লিলি নিকোলাস সোমবার বিকেলে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে আলোচনা করেন।

কানাডার হাইকমিশনারের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বাংলাদেশের প্রধান অগ্রাধিকার হচ্ছে প্রত্যাবাসন। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ তো অনন্তকাল আশ্রয় দিতে পারে না। তাই সহায়ক পরিবেশ ফিরলে প্রত্যাবাসনের আলোচনা হবে, এ অবস্থান নেওয়ার সুযোগ বাংলাদেশের নেই।

জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের চলমান ৫০তম অধিবেশনে রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতার ন্যায়বিচার ও প্রত্যাবাসনে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রসচিব। তিনি বলেন, ‘এই সমস্যা সমাধানের জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের আলোচনা করতে হবে এবং ওই আলাপ রোহিঙ্গাদের সমস্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা বা অন্য কোনো বিষয় এখানে আসার সুযোগ নেই।’

পররাষ্ট্রসচিবের মতে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে আশা জাগিয়ে রাখতে হবে। তা না হলে তাদের বিপথে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

জেনেভায় ওআইসির প্রস্তাব
জেনেভার কূটনৈতিক সূত্র সোমবার এই প্রতিবেদককে জানিয়েছে, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বৃহস্পতিবার প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার কথা রয়েছে।

এ বিষয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, মুসলিম দেশগুলোর জোট ওআইসির সদস্য সব দেশের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করে প্রস্তাবটি জমা দিয়েছে।

প্রত্যাবাসন নাকি গণতন্ত্র—কোনটিকে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হবে, এ বিষয়ে মতবিরোধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো গণতন্ত্রের পক্ষে বেশি জোর দিচ্ছে, কিন্তু ওই প্রস্তাবে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।

এর প্রভাব বিষয়ে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, গত কয়েক বছর রোহিঙ্গাদের নিয়ে যত প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে, তার সহপ্রস্তাবক হিসেবে পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো যুক্ত হতো। কিন্তু গত বছর থেকে তারা রোহিঙ্গা প্রস্তাবে যুক্ত হচ্ছে না।

উল্লেখ্য, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মিয়ানমার নিয়ে উত্থাপিত একটি প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গ ঠিকমতো উল্লেখ না করায় বাংলাদেশ ওই প্রস্তাব সমর্থন করেনি।