পাহাড়ী সংগঠনের সহায়তা ছাড়া জঙ্গি প্রশিক্ষণ সম্ভব না- র্যাব
![]()
নিউজ ডেস্ক
পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে স্থানীয় সংগঠনের সহযোগিতায় জঙ্গিরা দুর্গম পাহাড়ে অবস্থান করে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে বলে মনে করেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে সহযোগিতা ছাড়া কেউ টিকে থাকতে পারে না। বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন জঙ্গিদের সহযোগিতা করছে। কিছু সংগঠনের সহযোগিতায় জঙ্গিরা দুর্গম পাহাড়ে অবস্থান করে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।’
বুধবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র্যাবের মুখপাত্র এ কথা বলেন।
বান্দরবানে জঙ্গি অভিযানের কারণে পর্যটন নিষিদ্ধ করার বিষয়ে খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘আপনারা জানেন নতুন একটি জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে দুটি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। কথিত হিজরতের নামে যারা বাসা থেকে বের হয়েছে, তাদের যারা বের করেছে এবং যারা ভোলা, পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন স্থানে প্রশিক্ষণ দিয়েছে, তাদের ১২ জনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। মূলত গ্রেপ্তার হওয়াদের তথ্যের ভিত্তিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি।’
‘আটক জঙ্গিরা বলেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রায় ৫৫ জনের মতো অবস্থান করছে, যাদের মধ্যে ৩৮ জনের তালিকা আমরা প্রকাশ করেছি। পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম অঞ্চলে তারা অবস্থান করছে এবং প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। এ তথ্য র্যাব ফোর্সেস বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে শেয়ার করেছে এবং গত ১০ অক্টোবর থেকে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। দ্রুতই তাদের অবস্থান শনাক্ত ও আইনের আওতায় আনা হবে। এই অভিযানের অনেকটা অগ্রগতি হয়েছে।’— যোগ করেন তিনি।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, ‘এলাকাটি বেশ দুর্গম ও ঝুঁকিপূর্ণ। আমাদের পর্যটকেরা অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই ঘোরাফেরা করেন। যেহেতু অভিযান চলমান, এ কারণে হয়তো জেলা প্রশাসন ও লোকাল প্রশাসন পর্যটকদের সাময়িক সময়ের জন্য যাতায়াত বন্ধ করেছে। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে আরও তথ্য জানাতে পারব।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নতুন জঙ্গি সংগঠনের ভাইরাল ভিডিও প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে সহযোগিতা ছাড়া কেউ টিকে থাকতে পারে না। সে জন্য আমরা বলেছি, বিচ্ছিন্নতাবাদী কিছু সংগঠনের তথ্য আমরা পেয়েছি, যারা জঙ্গিদের সহযোগিতা করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি র্যাবের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমরা নিয়ম মেনে অভিযান পরিচালনা করছি।’
কুকি-চীনের বিষয়ে র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘পুরো বিষয়টি আমরা গুজব বলছি না। তবে কিছু গুজব। আর যেসব ফেসবুক পেজে কনটেন্টগুলো ছড়ানো হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছে। আমাদের অভিযানের বিষয়ে যেসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, সেগুলো ভুল তথ্য। এগুলো কোনো প্রতিষ্ঠিত পেজ না। এগুলো গুজব ছড়ানোর জন্য খোলা হয়েছে। তবে যে ভিডিওটি ছড়ানো হয়েছে, সেটি আমাদের দেশের না। প্রশিক্ষণের বিষয়টি আমাদের দেশের।’
দেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যক্রম চলছে কি না, জানতে চাইলে র্যাবের এই মুখপাত্র বলেন, ‘হ্যাঁ চলছে। আমরা আগেই বলেছি, বিচ্ছিন্নতাবাদী যারা আছে, তাদের সহযোগিতা ছাড়া জঙ্গিরা দুর্গম এলাকায় টিকতে পারবে না। এখানে নানা বিষয় রয়েছে। তবে আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার বিষয়টি মনে হয় সঠিক না। আমাদের গোয়েন্দারা কাজ করছে। অভিযান শেষে বিস্তারিত বলতে পারব।’