৪০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদঃ বরখাস্ত কর্নেল শহীদ ও স্ত্রী-কন্যার বিরুদ্ধে চার্জশিট - Southeast Asia Journal

৪০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদঃ বরখাস্ত কর্নেল শহীদ ও স্ত্রী-কন্যার বিরুদ্ধে চার্জশিট

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

প্রায় ৪০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলায় বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর বরখাস্ত কর্নেল শহীদ উদ্দীন খান এবং তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার কমিশনের বৈঠকে চার্জশিট অনুমোদন দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন দুদকের সচিব মাহবুব হোসেন। শিগগিরই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিচালক মো. নাজমুল হুসাইন আদালতে চার্জশিট দাখিল করবেন।

দুদক সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, তদন্তে শহীদ উদ্দীন খান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মোট ৩৯ কোটি ৭৩ লাখ ৪০ হাজার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়ায় চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। এতেও আসামি হয়েছেন শহীদ উদ্দীন খান, তার স্ত্রী ফারজানা আনজুম খান এবং তাদের দুই মেয়ে শেওতাজ মুনাসী খান ও বারিশা পিনাজ খান।

শহীদ উদ্দীন খান আয়কর ফাঁকির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। ২০২০ সালের ২০ ডিসেম্বর আয়কর ফাঁকির মামলায় তাকে নয় বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০–এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। তিন অর্থ বছরে ১৭ কোটি ৬ লাখ ৪০ হাজার ১০৭ টাকা আয়কর ফাঁকি দেয়ার অভিযোগে শহীদ উদ্দীন খানের বিরুদ্ধে মামলা করেন সহকারী কর কমিশনার শেখ আলী হাসান। একই বছরের ১০ নভেম্বর অস্ত্র মামলায় শহীদ উদ্দীন খানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, পরিবারসহ বর্তমানে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন শহীদ উদ্দীন। ২০২২ সালের ২৮ এপ্রিল দুদকের উপপরিচালক জালাল উদ্দিন আহম্মদ বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, শহীদ উদ্দীন খান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মোট ৩৯ কোটি ৭৩ লাখ ৪০ হাজার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। অবৈধ সম্পদের মধ্যে রাজধানীর বারিধারায় একটি ফ্ল্যাট, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডে ২৬ কোটি টাকার এফডিআর ও ইস্টার্ন ব্যাংকে ৫ কোটি টাকার এফডিআরসহ বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের তথ্য রয়েছে। যার কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। অবৈধ সম্পদের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ দেয় দুদক। কিন্তু তার পক্ষ থেকে কোনো সম্পদের হিসাব দুদকে দাখিল করা হয়নি।

শহীদ উদ্দীন খান ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ২০১০ সালে সেনাবাহিনীর কর্নেল পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

২০২১ সালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে শহীদ উদ্দীনের কর্নেল পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি এবং অকালীন অবসর সংক্রান্ত আদেশ বাতিল করে সরকার। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০০৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর প্রজ্ঞাপনে কর্নেল মো. শহীদ উদ্দীন খানের (অব.) বরখাস্তের পরিবর্তে স্বাভাবিক অবসর সংক্রান্ত আদেশ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০১০ সালের ২৩ মার্চ প্রজ্ঞাপনে ওই কর্মকর্তার কর্নেল পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতিসহ অকালীন অবসর সংক্রান্ত আদেশ বাতিল করা হলো। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও ৩ মে জারি করা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

বিদেশে অবস্থানরত শহীদ উদ্দীন খানের বিরুদ্ধে অনলাইনে বিভিন্ন গুজব ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইনে বিভিন্ন টকশোতে সেনাবাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কে বিষোদগারমূলক বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন শহীদ উদ্দীন খান।