বান্দরবানের লামায় জীনামেজু উচ্চ বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু
নিউজ ডেস্ক
‘শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ’, ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’-এ শ্লোগানে বান্দরবান জেলার লামা উপজেলায় যাত্রা শুরু করল ‘জীনামেজু উচ্চ বিদ্যালয়’।
দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের রাজা পাড়ায় বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। সেনাবাহিনীর আলীকদম জোন অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. সাব্বির হাসান স্থাপিত বিদ্যালয়ের উদ্বোধন করেন।
রবিবার (১৮ মে) দুপুরে বিদ্যালয়ের হলরুমে প্রতিষ্ঠাতা ভদন্ত উ: নন্দ মালা মহাথের’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন আজিজুল হাকিম, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হোসাইন চৌধুরী, ইয়াংছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মফিজ উদ্দিন, ইউপি সদস্য আপ্রুচিং মার্মা ও মংয়েগ্য মার্মা, সাঙ্গু মৌজা হেডম্যান চম্পাট ম্রো ও বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য বদরুল ইসলাম প্রমুখ অতিথি ছিলেন।
এ সময় জোন অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. সাব্বির হাসান বলেন, পাহাড়ের সব শিশুকে পড়ালেখা করে সু শিক্ষিত হতে হবে। কেউ যেন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয়। এজন্য শিশুদের নিয়মিত বিদ্যালয়ে পাঠানোর পাশাপাশি অভিভাবককে সচেতন হতে হবে, যেন সন্তানেরা বিপথে যেতে না পারে।
তিনি আরও বলেন, সেনাবাহিনী মানুষের নিরাপত্তা, সম্প্রীতি, শান্তি শৃঙ্খলা ও উন্নয়নে কাজ করে চলেছে। কোন গোষ্ঠি সম্প্রীতি ও শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে কোন ছাড় দেওয়া হবেনা।
এলাকায় কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠির স্থান হবে না উল্লেখ করে লে. কর্ণেল মো. সাব্বির হাসান বলেন, এলাকায় কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠির আনাগোনা দেখা গেলে, এদের নির্মূলে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠা করা হলেও করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে বিদ্যালয়টি শুরুতেই বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আলীকদম সেনাবাহিনীর সহায়তায় বিদ্যালয়টি পুণরায় চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করেন ভদন্ত উ: নন্দ মালা মহাথের। বিদ্যালয়ে ৬জন শিক্ষক ও ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত অর্ধশতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছে বলে জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাংফ ম্রো।
তিনি বলেন, এ বিদ্যালয় এলাকায় আর কোন মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই। ফলে স্বাধীনতার পর প্রাথমিক শিক্ষার উত্তীর্ণ হয়েও এখানের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি সম্প্রদায়ের শিশুরা নানা কারণে উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছিল। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় দুর্গম এ পাহাড়ি এলাকা শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে যাবে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি চম্পট ম্রো জানায়, এক সময় এখনের প্রাথমিক শিক্ষার পর শিশুরা যোগাযোগ অসুবিধা ও অভিভাবকদের আর্থিক সংকটের কারণে উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছিল। এদিক চিন্তা করে বঞ্চিত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়। এখন থেকে আর কেউ উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবেনা আশা রাখি।