নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে হ্রদে নামার অপেক্ষায় রাঙ্গামাটির জেলেরা
নিউজ ডেস্ক
রাঙ্গামাটির সব চেয়ে বড় মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র হচ্ছে ফিসারী ঘাট। বছরের এ সময়ে মৎস্য আহরণের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে কর্ম চঞ্চল হয়ে ওঠে এই ঘাট। তবে এবার নেই সেই চিরচেনা রূপ। জেলে, ব্যবসায়ী আর শ্রমিকের হাঁকডাকে মুখর হওয়ার বদলে বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা। ফিসারী ঘাটের চিরচেনা রূপ দেখার অপেক্ষায় জেলেরা।
বৃষ্টি কম হওয়ায় কাপ্তাই হ্রদে প্রত্যাশিত পানি বাড়েনি। ফলে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও প্রত্যাহার করা হয়নি মৎস্য শিকারে নিষেধাজ্ঞা। নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আর এক মাস বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাই বছরের এ সময়ে চিরচেনা রূপে ফিরে যেতে পারেনি ফিসারী ঘাট। এতে জেলেরা হতাশ হলেও খুশি ব্যবসায়ীরা। আর বর্ধিত নিষেধাজ্ঞায় জেলেদের ভিজিএফ সহায়তা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে হ্রদে নামার সকল প্রস্তুতিও নিয়েছিল জেলেরা। জাল নৌকায় মেরামত শেষ করা হলেও সেগুলো পড়ে আছে ঘাটে। কারণ কাপ্তাই হ্রদের রুলকার্প অনুযায়ী এখন হ্রদে পানি থাকার কথা ৮৮ এমএসএল। কিন্তু বর্তমানে পানি রয়েছে ৭৮ এমএসএল। প্রত্যাশিত না পানি হওয়ায় হ্রদ পরিচালনা কমিটি গত ১৭ জুলাই এক জরুরি সভায় নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে আরও একমাস। সে হিসাবে আগামী ১৯ আগস্ট পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে চিন্তার ভাজ পড়েছে জেলেদের কপালে। আর সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ব্যবসায়ীরা।
মৎস্যজীবী সনাতন দাশ বলেন, হাতে টাকা পয়সা যা ছিল তা দিয়ে জাল নৌকা প্রস্তুত করেছিলাম। কিন্তু এখন বন্ধের মেয়াদ আরও এক মাস বাড়ানো হলো। এতে আমরা বিপাকে পড়েছি। হাতে কোন পয়সা নেই। এই এক মাস কিভাবে সংসার চালাবো জানি না। আমরা ভিজিএফ কার্ডে ২০ কেজি করে চাল পাই। দুই মাসের চাল পেয়েছি। আরও একমাসের এখনও বাকি। আর বাড়তি এই মাসের ভিজিএফ সহায়তা পাব কিনা জানি না।
অন্যদিকে রাঙ্গামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতি সাধারণ সম্পাদক উদয়ন বড়ুয়া বলেন, বাড়তি এক মাস বন্ধের সুফল আমরা সকলে পাবো। যদিও এখন সাময়িক কষ্ট হচ্ছে এটা সত্য। বর্তমান হ্রদে যে পানি আছে তাতে খুব বেশি হলে ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে হ্রদ মাছ শূন্য হয়ে যেত।
অতিরিক্ত এক মাস মাছ ধরা বন্ধে জেলেদের ভিজিএফ সহায়তা প্রদানে মন্ত্রণালয়ে চাহিদা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএফডিসির ব্যবস্থাপক কমান্ডার আশরাফ উদ্দিন ভূঁইয়া।
জেলা মৎস্য অফিসের তথ্য মতে কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে ২৫ হাজার জেলে।