রাঙামাটিতে ৩৫৭ স্থানে ধস, ৫৯৯ ঘর ক্ষতিগ্রস্ত
নিউজ ডেস্ক
টানা এক সপ্তাহের বৃষ্টিতে রাঙামাটি জেলার ৩৫৭ স্থানে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি পরিসরে পাহাড় ধস হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৯৯টি বসতঘর।
বন্যার পানিতে জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় পৃথক ঘটনায় তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে এবং বরকল উপজেলায় এখনো নিখোঁজ রয়েছেন এক যুবক।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে। তবে পুরো এলাকা কাদায় ভরা। এরপর থেকে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। শ্রমজীবী মানুষদের কাজের গতি এখনো স্বাভাবিক হয়ে ওঠেনি। এখনো বেশকিছু স্থান কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ডুবে আছে। তবে বন্যার পর পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হতে পারেন ভেবে অনেকেই আতঙ্কিত।
বিলাইছড়ি ইউনিয়নের ফারুয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মনু মারমা বলেন, আমাদের এলাকা থেকে পানি সরে গেলেও বিশুদ্ধ পানি এবং খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যায় আমাদের ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকারি সাহায্য না পেলে আমাদের এলাকার সবাইকে খাদ্য এবং বিশুদ্ধ পানির অভাবে মরতে হবে।
বাঘাইছড়ি উপজেলার বাসিন্দা মো. শামীম বলেন, আমাদের কিছু জায়গা থেকে পানি সরে গেলেও কিছু স্থান এখনো ডুবে আছে। এখানে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
জুরাছড়ি উপজেলার সংবাদকর্মী স্মৃতি বিন্দু চাকমা বলেন, খুব কষ্টে আছি। চারদিক পানিতে তলিয়ে গেছে। বিশুদ্ধ পানি এবং খাদ্য সংকটে ভুগছেন এখানকার জনগণ।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৃষ্টিতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের (আশ্রয়ণ) ২৮টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাহাড়ধসে এক হাজার ৩১৩টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাস্তার ৬৯টি স্থানে ধরেছে ভাঙন। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সংস্কার না করা পর্যন্ত সড়কের ১২টি স্থানে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
ঝড়ে ১৬টি ব্রিজ এবং কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২১টি বিদ্যুতের খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুরো জেলায় ৬৮৩.৫ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেসে গেছে ৪৩টি পুকুরের মাছ। বন্যায় ১২৪টি ঘর এবং বাজার প্লাবিত হয়েছিল।
জেলা প্রশাসক মোশারফ হোসেন খান বলেন, এ দুর্যোগে জেলায় ২৬১টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছিল। ওইসব আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিলেন ৫৪৩১ জন। তাদের সবার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও কয়েকদিন লেগে যাবে। সংশ্লিদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে জেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে।