এবার ফটিকছড়ির সংরক্ষিত বনে নজর উপজাতি সন্ত্রাসীদের
নিউজ ডেস্ক
পাহাড়জুড়ে চাঁদাবাজি, অপহরণ, খুনসহ সশস্ত্র কার্যক্রমের পাশাপাশি এবার খাগড়াছড়ির সীমান্ত ঘেঁষা ফটিকছড়ির সংরক্ষিত সরকারি বনে আধিপত্য বিস্তার করে মূল্যবান গাছ কেটে ফেলছে প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পাহাড়ি সংগঠন ইউপিডিএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। বনটি ঐ সন্ত্রাসী গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বর্তমানে। তাদের টানা হুমকিতে এক বন কর্মকর্তা হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় বনকর্মীরা পালিয়ে গেছে। ফটিকছড়ির কাঞ্চননগরের ধুরুং বনবিটটি অত্যন্ত দুর্গম এলাকা হওয়ায় ঐ সন্ত্রাসী গ্রুপ সেখানে তাদের আস্তানা গড়ে তুলেছে।
সূত্র বলছে, সংগঠনের অর্থ আয়ের জন্য সন্ত্রাসীরা বাগানের সেগুনসহ বিভিন্ন মূল্যবান গাছ কেটে সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী গ্রুপ কাঠ পাচারকারীদের কাছে দীর্ঘদিন ধরে সেগুলো বিক্রি করে আসছে। পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে সরকারি বাগানের এসব গাছ কিনে পাচারকারীরা মানিকছড়ির গাড়িটানা– যোগ্যাছলা সড়ক হয়ে ফটিকছড়ির কাজীরহাট বাজার এবং কালাপানি নেপচুন চা বাগান হয়ে দাঁতমারা, শান্তিরহাট ও হেঁয়াকোতে নিয়ে যায়। পরে এখান থেকে নারায়ণহাটের স্বেতছড়া (নারায়ণহাট-মিরেরসরাই রাস্তা) সড়ক হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করা হয়।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ওই সন্ত্রাসীরা সর্বশেষ গত ৩০ সেপ্টেম্বর ধুরুং বনবিট অফিস সংলগ্ন সরকারি সংরক্ষিত বাগানের ৪টি বিশালাকারের সেগুনগাছ কেটে ফেলে। যার বাজার মূল্য প্রায় ২৫ লাখ টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, এ গাছ কাটার ঘটনায় ধুরুং বনবিট কর্মকর্তা টিটু চাকমা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতার চাপে পড়েন। গাছ কাটা নিয়ে কোনো প্রকার আইনি ব্যবস্থা না নিতে সন্ত্রাসী গ্রুপ ও কাঠ পাচারকারীচক্রের কঠোর হুমকির সন্মুখিন হন তিনি। এ অবস্থায় ভয় ও আতঙ্কে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং ২ অক্টোবর হার্ট অ্যাটাকে মারা যান।
নারায়ণহাট রেঞ্জের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সহকারী বন সংরক্ষক হারুনুর রশিদ বলেন, জীবনের নিরাপত্তা না থাকায় ঐ বনবিটের ৪ বনকর্মী পালিয়ে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে নয়াবাজার নামক স্থানে অবস্থান করছে।
নারায়ণহাট বন রেঞ্জ কর্মকর্তা ইলিয়াছুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেয়ে কয়েকজন বনকর্মী ধুরুং বিটে সেগুনগাছগুলো আনতে গেলে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে তাদের তাড়িয়ে দেয়।
তিনি বলেন, এ বিষয়টি ফটিকছড়ি থানার ওসি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানোর পর তারা এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দেন।