এবারও হবেনা বান্দরবানের ১৪৬ তম রাজপূণ্যাহ - Southeast Asia Journal

এবারও হবেনা বান্দরবানের ১৪৬ তম রাজপূণ্যাহ

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

বান্দরবান পার্বত্য জেলার ঐতিহ্যবাহী রাজকর আদায়ের উৎসব রাজ পূণ্যাহ মেলা প্রতিবছরের ডিসেম্বর বা জানুয়ারি মাসে আয়োজন করা হলেও এ বছরও ১৪৬ তম রাজপূণ্যাহ’র আয়োজন হবেনা বলে জানিয়েছে সার্কেল চীফ পরিবার।

বোমাং রাজ পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবান শহরের স্থানীয় রাজার মাঠে প্রতিবছরের শেষে বা শুরুর দিকে ৩ দিনব্যাপি রাজ মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে, কিন্তু ২০২০ ও ২১ সালে করোনা সংক্রামন আর গত বছর বান্দরবানে কেএনএফ এর সাথে যৌথ বাহিনীর অভিযান ও অস্থিতিশীল আইনশৃংখলা পরিস্থিতির কারনে রাজ পূণ্যাহ’র আয়োজন বন্ধ থাকলেও এবারও জাতীয় নির্বাচন, হরতাল ও অবরোধের কারনে রাজপূণ্যাহ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বোমাং সার্কেল চীফ।

প্রতিবছর মেলাকে ঘিরে জেলার ১১টি উপজাতি সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য মন্ডিত মনোজ্ঞ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এ সময় পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের মিলন মেলা পরিণত হয়, পর্যটকসহ দেশি- বিদেশী লক্ষাধিক মানুষ ভীর জমায় পর্যটন শহর বান্দরবানে। িউপজাতি সম্প্রদায়ের প্রবীণ নেতা হিসাবে বোমাং সার্কেল চীফের আর্শিবাদ পাওয়ার জন্য তিন পার্বত্য জেলার দুর্গম পাহাড়ী এলাকা থেকে পাহাড়ীরা চীফের দরবারে এসে ভীড় জমান।

বোমাং সার্কেল চীফ পরিবার সূত্র আরো জানায়, বৃটিশ শাসন আমলে পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি ৩ জেলাকে তিনটি সার্কেলে বিভক্ত করে খাজনা আদায় করা হতো। ১৮৬৬ সাল পর্যন্ত চাকমা সার্কেল চীফ পার্বত্য এলাকা শাসন করতো। ১৮৬৭ সালে কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ অঞ্চলের মারমা অধ্যুষিত এলাকাকে বোমাং সার্কেল, ১৮৭০ সালে রামগড় ও মাইনি উপত্যকার এলাকাকে নিয়ে মং সার্কেল গঠিত হয়।

বান্দরবান শহরের বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, গত তিন বছর রাজপূণ্যার আয়োজন না করার কারনে জেলার মানুষ তাদের ঐতিহ্যবাহী আয়োজন ভুলতে বসেছে, এই ঐতিহ্য সবার ধরে রাখা উচিত।

আরো জানা গেছে, রাঙ্গামাটিকে চাকমা সার্কেল, বান্দরবানকে বোমাং সার্কেল এবং খাগড়াছড়িকে মং সার্কেল হিসাবে গণ্য করা হয়। প্রায় ১৭৬৪ বর্গমাইল এলাকার বান্দরবানের ৯৫টি, রাঙামাটির রাজস্থলি ও কাপ্তাই উপজেলার ১৪টি মৌজা নিয়ে বান্দরবান বোমাং সার্কেল। দুইশত বছরের ঐতিহ্য অনুসারে বছরে একবার এই মেলা আয়োজন করা হয় বোমাং সার্কেলের পক্ষ থেকে।

প্রতিবছর শীত মৌসুম ও রাজ পূণ্যাহ মেলাকে কেন্দ্র করে জেলায় হাজার হাজার পর্যটকের আগমন ঘটলেও টানা তিন বছর রাজপূণ্যাহ’র আয়োজন না থাকার কারনে গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর রাজপূণ্যাহ আয়োজনের দাবী জানিয়ে বোমাং সার্কেল চীফ উ চ প্রু’র এর কাছে পত্র দিয়ে দাবি জানান, বোমাং সার্কেলের ২১৯ জন হেডম্যান ও কারবারি।

বান্দরবানের বোমাং সার্কেল চীফ উ চ প্রু চৌধুরী’র প্রধান সহকারী অং জাইউ খেয়াং বলেন, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের কারনে রাজপূণ্যাহ’র আয়োজন করা হবেনা, হেডম্যান ও কারবারীদের এই সংক্রান্ত পত্র দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।