বান্দরবানে পনের বছরে ২৭শ কোটি টাকার উন্নয়ন

নিউজ ডেস্ক
বান্দরবানের সাত উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে যোগাযোগ, অবকাঠামো খাতে ক্ষমতাসীন সরকারের আমলে প্রায় ২৭শ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। পনের বছরে বাস্তবায়িত এসব প্রকল্প পর্যটন শিল্পের বিকাশ এবং উৎপাদিত কৃষি পণ্যের বাজারজাতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
প্রকৌশল বিভাগের তথ্যমতে, বান্দরবান জেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) ২৮টি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ১৪শ’ কোটি টাকার সড়ক যোগাযোগ, সেতু নির্মাণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অবকাঠামো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করেছে। অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড জেলার সাতটি উপজেলায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে সড়ক নির্মাণসহ এক হাজার ৯৮৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। যার মধ্যে বান্দরবান সদর উপজেলায় ৯৮৭টি, রোয়াংছড়িতে ১৫০টি, রুমায় ১৪৯টি, থানচিতে ১৫৮টি, লামায় ২৭৭টি, আলীকদমে ১২৪টি এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ১৪৪টি প্রকল্প রয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৩৮৬ কোটি ৯০ লাখ ৪৩ হাজার টাকা।
আলীকদম উপজেলা আ. লীগের সভাপতি জামাল উদ্দিন ও লামা উপজেলা আ. লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ কান্তি দাশ বলেন, পাহাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ও গ্রামীণ জনপদে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি খাতে অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বিগত পনের বছরে আগামী ত্রিশ বছরের উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে জেলায়। সবগুলো খাতেই উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে এ জেলায়। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সার্বজনীন গ্রহণযোগ্য নেতা বীর বাহাদুরের বিকল্প নেই বান্দরবান। যা উন্নয়ন হয়েছে জেলায় সবগুলোই দৃশ্যমান।
এদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল জানায়, বিগত পনেরো বছরে বান্দরবানের সাত উপজেলায় গ্রামীণ সড়ক মেরামত, পুনর্বাসন প্রকল্প, গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প, সার্বজনীন সামাজিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি, কৃষক সেবা কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প, মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ প্রকল্প, সেতু নির্মাণ প্রকল্প, নারী উন্নয়ন প্রকল্প, অসচ্ছল ও ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধাদের বাসস্থান নির্মাণ প্রকল্প, পিটিআই স্থাপন প্রকল্পসহ দৃশ্যমান নানা উন্নয়ন সম্পাদিত হয়েছে। বিশেষ করে সাঙ্গু নদীর উপর ২২০ মিটার ব্রিজ, নাইক্ষ্যংছড়ি বাঁকখালী নদীর উপর ৯৬ মিটার ব্রিজ, ফাসিয়াখালী ব্রিজ, বেঙছড়ি–বিলাইছড়ি ১৭ কিলোমিটার সড়ক, ঈদগড় বাইশারী–দোছড়ি ২৮ কিলোমিটার সড়ক, তুমব্রু ৩৩ কিলোমিটার সড়ক, আলীকদম–দোছড়ি ১১ কিলোমিটার সড়ক, রুমা মুননম পাড়ায় ১৩ কিলোমিটার সড়ক, হলুদিয়া–ভাগ্যকুল ২৭ কিলোমিটার সড়কসহ দৃশ্যমান বহুপ্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন সফর করতে আগে তিন থেকে চারদিন সময় লাগত। কিন্তু গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বর্তমানে একদিনেই ঘুরে দেখা সম্ভব। এই উন্নয়নের মূল কারিগর হলো ছয়বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুবিন ইয়াছির আরাফাত জানান, স্থানীয়দের চাহিদার ভিত্তিতেই জেলায় সড়ক যোগাযোগ, সেতু, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অবকাঠামোগহ বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নেও নানামুখী প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সোলার প্যানেল বিতরণের মাধ্যমে দুর্গম জনপদে পাহাড়ি পল্লীগুলো আলোকিত করা হয়েছে।
বান্দরবান স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগ (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে তৃণমূলের মানুষের সমস্যা ও সম্ভাবনাগুলো চিহ্নিত করে স্থানীয় সংসদ সদস্যের দিকনির্দেশনায় বহুমুখী উন্নয়ন কর্মকা্ড বাস্তবায়িত হয়েছে বান্দরবান জেলায়। গৃহিত প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে বান্দরবান জেলায় গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়নের আমুল পরিবর্তন এসেছে। যার সুফল ভোগ করছে পাহাড়ের মানুষ।