কারাগারে মারা যেতে পারেন সুচি, উদ্বিগ্ন ছেলে কিম

কারাগারে মারা যেতে পারেন সুচি, উদ্বিগ্ন ছেলে কিম

কারাগারে মারা যেতে পারেন সুচি, উদ্বিগ্ন ছেলে কিম
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

চলতি মাসে মিয়ানমারের জান্তা হেফাজতে মারা গেছেন ক্ষমতাচ্যুত ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) ডেপুটি চেয়ারম্যান ড. জাও মিন্ট মং। এরপর জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে যে, কারাবন্দি গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচিরও একই পরিণতি হতে পারে। এমন উদ্বেগ জানিয়েছেন সুচির ছেলে কিম অ্যারিসও।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের দিন থেকে সুচিকে কারাগারে বন্দি করে রেখে জান্তা সরকার। বার্ধক্য ছাড়াও তার নানা স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে খবরে বলা হয়েছে। কারাগারে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় জীবনযাপন করছেন বর্তমানে ৭৯ বছর বয়সি সুচি। পরিবার ও আইনজীবীদেরও তার সাথে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না।

ছেলে কিম অ্যারিস সম্প্রতি দ্য ইরাবতীর সাথে কথা বলেছেন। সেখানে তিনি মায়ের স্বাস্থ্য ও অন্ধকারে রাখা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি জান্তা সরকার জানায়, সুচিকে কারাগার থেকে সরিয়ে গৃহবন্দি করা হয়েছে। তবে ছেলে কিম অ্যারিস তা নাকচ করে জানিয়েছেন, তাকে গৃহবন্দি করা হয়নি। তিনি কর্তৃপক্ষকে তাকে গৃহবন্দি করা এবং তার সাথে নিয়মিত দেখা করার অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

চলতি মাসে বন্দি অবস্থায় মারা যান এনএলডির ডেপুটি চেয়ারম্যান ড. জাও মিন্ট মং। ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের পর সুচি ও অন্যান্য নেতার সাথে তাকেও গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, যথাযথ চিকিৎসার অভাবে তার মৃত্যু হয়েছে।

সুচিও একই পরিণতি ভোগ করবেন-দ্য ইরাবতীর এমন এক প্রশ্নের জবাবে তার ছেলে কিম অ্যারিস বলেন, আমি ড. জাও মিন্ট মং-এর মৃত্যুতে পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে চাই। যেসব রিপোর্ট আমার হাতে এসেছে, তাতে এটা স্পষ্ট যে, জান্তা কর্মকর্তারা তার মৃত্যুর কয়েক ঘন্টা আগে অচেতন অবস্থায় তাকে ক্ষমা করার কথা জানাতে দ্রুত হাসপাতালে গিয়েছিলেন।

তিনি আরও বলেন, কারাগারে থাকাকালীন তার (জাও মিন্ট মং) জন্য পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে তাদের যে ব্যর্থতা তা ঢাকার জন্য এমনটা করা হয়েছে। কারাগারে ঠিক মতো স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হলে তার জীবন বাঁচতে পারত। আমি বুঝতে পারছি, কারাগারে মার অবস্থাও ভয়াবহ। সুতরাং আমি তার সাথে যা ঘটছে সেজন্য অনেক চিন্তিত।

কিম অ্যারিস জানান, অভ্যুত্থানের পর গত তিন বছরে এনএলডির হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থককে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে কমপক্ষে ২ হাজার জন সামরিক হেফাজতে মারা গেছেন। যার মধ্যে অন্তত ১২৫ জন নারী ও ৪৪ জন শিশু। তাই জান্তা কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাব, তারা যেন সকল রাজনৈতিক বন্দিকে, বিশেষ করে বয়স্ক ও অসুস্থদের মুক্ত করে দেয় যাতে আরও মৃত্যু এড়ানো যায়।

২০২০ সালের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং এই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেন। বর্তমানে মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের প্রধান তিনি।

অভ্যুত্থানের পরপরই সুচি আটক ও কারান্তরীণ করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি দুর্নীতির অভিযোগ আনে সরকার। রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, সুচির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলোর সবগুলোতে যদি তার সাজা হয়, সেক্ষেত্রে কমপক্ষে আগামী ১৫০ বছর কারগারে থাকতে হবে।

কিম অ্যারিস বলেন, আগামী বছর মার বয়স হবে ৮০ বছর। গত সাড়ে তিন থেকে চার বছর তিনি নেপিদোতে কারাগারে কাটিয়েছেন। এর আগে গৃহবন্দি ছিলেন বহু বছর। সবমিলিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য জীবনের প্রায় এক চতুর্থাংশ বন্দি হয়ে কাটিয়েছেন তিনি।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।