সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানকে নিয়ে অপপ্রচারের গভীর ষড়যন্ত্র
![]()
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং এর সর্বাধিনায়ক, সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল দীর্ঘদিন ধরে নানা অপপ্রচার চালিয়ে আসছে। দেশের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব এবং গৌরবময় ইতিহাসের প্রতীক হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জনগণের আস্থা অর্জন করেছে। তবে, দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তাদের ভূমিকা ও নেতৃত্বের প্রতি এমন এক শ্রেণির পক্ষ থেকে প্রায়শই অযথা বিতর্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে।
সম্প্রতি সেনাপ্রধানের বক্তব্যের পর বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, যেখানে তিনি সতর্কতা প্রকাশ করেন যে, এই অপপ্রচার কখনও দেশের জাতীয় স্বার্থকে ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে চালানো হচ্ছে। সেনাপ্রধানের মন্তব্যের মাধ্যমে জনগণকে এ বিষয়ে সচেতন হতে বলার পাশাপাশি, সরকার এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই ধরনের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান। তার এই বক্তব্য রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রতি দায়বদ্ধতার চিহ্ন, যা দেশের বৃহত্তর স্বার্থের পক্ষে কাজ করছে।
অপপ্রচারের পেছনে কারা?
কিছু রাজনৈতিক গোষ্ঠী এবং তাদের আশ্রিত অপশক্তি সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানকে অস্থিতিশীল করতে চায়, বিশেষ করে তারা যে কোনোভাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে জাতির সামনে একটি বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে উপস্থাপন করতে চায়। এমনকি কিছু আন্তর্জাতিক শক্তি এবং দাতা সংস্থারও রয়েছে একটি নির্দিষ্ট এজেন্ডা, যার উদ্দেশ্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দেশের অখণ্ডতার রক্ষাকারী শক্তি হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকার ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত করা। এই মহলটি মনে করে, সেনাবাহিনী তাদের শত্রু, কারণ এটি দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও রাজনীতির বাইরে শক্তিশালী একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীকে নিয়ে অপপ্রচার
পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূখণ্ডে সেনাবাহিনীকে নিয়ে যে ধরনের অপপ্রচার চলমান, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীকে নিয়ে যে ভুল ধারণা এবং মিথ্যাচারের ফসল হিসেবে অপপ্রচার তৈরি হচ্ছে, তা স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। কিছু রাজনৈতিক গোষ্ঠী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন সেনাবাহিনীকে বরাবরই একটি দমনমূলক শক্তি হিসেবে তুলে ধরে তাদের বিরোধিতায় কাজ করছে। এই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে যেন পার্বত্য অঞ্চলের বাঙালি জনগণকে শত্রু হিসেবে উপস্থাপন করা যায় এবং সেখানে বৈদেশিক শক্তির হস্তক্ষেপের পথ সুগম হয়। এই ধরনের অপপ্রচার জাতীয় অখণ্ডতা, শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ।
সন্ত্রাসবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকেই দেশের নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। তারা পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শান্তি স্থাপনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে, দেশের ভেতরে এবং বাইরে যে সমস্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে সেনাবাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তবে, এই শক্তি গোষ্ঠীগুলো কখনও পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি জনগণের ভূমি, নিরাপত্তা ও মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করার মাধ্যমে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চায়। এতে তারা বাঙালির শান্তিপূর্ণ বসবাসকে বিঘ্নিত করতে পারে, আর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সেটি রুখে দেওয়ার কাজ করে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়ন, শান্তি এবং নিরাপত্তা বজায় রাখতে সেনাবাহিনীর ভূমিকাকে ছোট করা বা বিতর্কিত করা দেশীয় স্বার্থের বিপক্ষে এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্যও হুমকি হতে পারে।
বাস্তবতা ও দায়িত্ববোধ
সেনাবাহিনীর কাজ কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থে নয়, বরং দেশের সার্বভৌমত্ব, জনগণের নিরাপত্তা এবং জাতির একত্রিত অবস্থান রক্ষায়। তাদের প্রতি কোনো ধরনের অবমাননা বা অপপ্রচার সাধারণ জনগণের কাছে সন্দেহ সৃষ্টি করতে পারে, যা দেশের ভিতর থেকে বিভাজন সৃষ্টি করতে সাহায্য করতে পারে। তাই, সেনাপ্রধানের বর্তমান বক্তব্যের মাধ্যমে এটি স্পষ্ট যে, এই অপপ্রচার এবং ষড়যন্ত্রগুলির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। যারা দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা চায়, তাদের উচিত সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ, তবে শক্তিশালী হিসেবে সমর্থন দেয়া।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।
দেশের অখণ্ডতা রক্ষার জন্য সতর্কতা
এখন সময় এসেছে, আমরা দেশবাসী হিসেবে সজাগ হই এবং সেনাবাহিনীর প্রতি আমাদের আস্থা আরও দৃঢ় করি। যারা সন্ত্রাসবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির মাধ্যমে দেশের শান্তি নষ্ট করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে একযোগভাবে কাজ করতে হবে। একমাত্র একটি শক্তিশালী এবং দায়িত্ববান সেনাবাহিনীই আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে এবং দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সক্ষম।
এক্ষেত্রে, সেনাপ্রধানের বক্তব্য শুধুমাত্র সেনাবাহিনীর পক্ষে নয়, বরং দেশের বৃহত্তর স্বার্থের প্রতি দায়বদ্ধতা প্রকাশ। এটি দেশের নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা আমাদের সমর্থন ও সচেতনতার মাধ্যমে আরও শক্তিশালী হতে পারে।
শেষ কথা
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের গর্ব এবং শক্তি। তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যারা জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। আমরা সবাই যদি একসঙ্গে এই অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র রোধ করতে সচেতন হই, তবে দেশ নিরাপদ থাকবে এবং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মও একটি উন্নত, শান্তিপূর্ণ ও শক্তিশালী বাংলাদেশ পাবে।
-সম্পাদকীয় বিভাগ
সাউথইস্ট এশিয়া জার্নাল।