ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় খাগড়াছড়িতে পালিত হচ্ছে প্রবারনা পূর্নিমা
![]()
নিউজ ডেস্ক
যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ও ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে খাগড়াছড়িতে পালিত হচ্ছে বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের তিন মাস বর্ষাব্রত পালনের পর এ প্রবারনা উৎসব পালন করা হয়, এর অপর নাম আশ্বিনী পূর্ণিমা। মূলত আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাস বৌদ্ধ ভিক্ষুরা ধ্যান ভাবনা করে থাকেন। এই তিন মাস বৌদ্ধ ভিক্ষুরা নিজস্ব বৌদ্ধ বিহারের বাইরে অন্যকোন বিহারে গিয়ে রাত্রি যাপন করতে পারেন না। সাধনা সিদ্ধির জন্য বর্ষাব্রত পালন শেষে প্রবারনা উৎসব। এই উৎসবকে ঘিরে সকাল (১৩ অক্টোবর) থেকে প্রতিটি বৌদ্ধ বিহারে শুরু হয়েছে নানা ধর্মীয় প্রার্থনা। এ উপলক্ষে সারাদিন রয়েছে নানা আয়োজন। সকাল থেকে রয়েছে বুদ্ধ পুজা, ফুল পুজা, সংঘ দান,অষ্ট পরিস্কার দান চীবর দান ও বৌদ্ধ পিন্ড দানসহ নানা বিধ দান। এছাড়া সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ির ধর্মপুর আর্যবন বিহারে ৮৪ হাজার প্রদীপ জ্বালানো হবে ও চুলামনি ধাতুর উদ্দেশ্যে রয়েছে ফানুস উত্তোলন। এছাড়া মারমা সম্প্রদায়ের রয়েছে রিছমি, উপগুপ্ত বুদ্ধের উদ্দেশ্যে নদীতে নৌকা ভাসানো ও প্রদীপ প্রজ্জলন।
এ প্রবারণা পালনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় মাস ব্যাপী কঠিন চীবরদান। আশ্বিনী পূর্ণিমা থেকে পরবর্তী পূর্ণিমা পর্যন্ত মাস ব্যাপী কোন না কোন বৌদ্ধ বিহারে পালন করা হয় কঠিন চীবর দানোৎসব।
এই কঠিন চীবর দান ভগবান গৌতম বুদ্ধের সময় বিশাখা প্রর্বতন করেন। চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা, সেই সুতা রং করে কাপড় বানিয়ে চীবর সেলাই করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করা হয়। এটি অত্যন্ত কঠিন কাজ বলে একে কঠিন চীবর দান বলা হয়। শুধু তাই নয়, বৌদ্ধ ভিক্ষুরা সীমা ঘর বা ঘ্যাং ঘরে গিয়ে মন্ত্র দিয়ে পরিধানের জন্য কঠিনে পরিনত করেন। অনেক বৌদ্ধ বিহারে বাজার থেকে কাপড় কিনে ও চীবর সেলাই করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করেন। বুদ্ধ ধর্ম মতে, এ দানের ফল অপরিসীম। সুমেরু পর্বত ক্ষয়ে যাবে, সমুদ্র শুকিয়ে যেতে পারে, কিন্তু এ দানের ফল ফুরাবে না। এই জন্য এ কঠিন চীবর দান বৌদ্ধদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন।