নির্বাচন চলাকালীন সময়ে ভোট কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা, বিজিবির গুলিতে নিহত দুই
 
                 
নিউজ ডেস্ক
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নে ১৪ অক্টোবর সোমবার অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলাকালে দুপুর ৩টার দিকে জাল ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে ই্উনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ফাতরার ঝিরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের বাইরে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে সেখানে নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা বিজিবি সদস্যরা ফাঁকা গুলি করলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মংকিসা চাকমা নামে এক ব্যক্তি ঘটনাস্থলেই নিহত হয় এবং অংচাই মং মারমা নামে অপর এক ব্যক্তি আহত হয়, এসময় আহত অংচাই মংকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত থাকা লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৩টার দিকে নির্বাচনে ইউপি সদস্য প্রার্থী আজমত আলী ওরফে বুলু মেম্বারের কয়েকজন সমর্থক ফাতরার ঝিরি বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট দিতে আসে। এসময় অপর প্রার্থী বাবুল কান্তি তঞ্চঙ্গ্যার সমর্থকরা তাদের জাল ভোট প্রদানে বাঁধা দেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের লোকজন কেন্দ্রের বাইরে জড়ো হয়ে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। ভোট চলা অবস্থায় কেন্দ্রের বাইরে অনেক মানুষের বিশৃঙ্খলা দেখে দায়িত্বরত বিজিবি সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে কয়েক রাউন্ড গুলি চালান।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ফাতরার ঝিরি ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার এমদাদ উল্লাহ মোঃ উসমান বলেন, ঘটনাটি কেন্দ্রের বাইরে ঘটেছে। এ ঘটনায় উক্ত কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।
বান্দরবানের সহকারী পুলিশ সার্কেল (এএসপি) রেজোয়ানুল ইসলাম জানান, বেলা ৩টার দিকে কিছু লোক ফাতরার ঝিরির একটি কেন্দ্রে জাল ভোট দিতে আসে। এসময় স্থানীয় লোকজন তাদের বাঁধা দেয়। এ নিয়ে অনেক লোকজন সমবেত হয় সেখানে। কেন্দ্রের বাইরে অনেক মানুষের বিশৃঙ্খলা দেখে দায়িত্বরত বিজিবি সদস্যরা গুলি চালান। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন মারা গেছেন, অপর একজনকে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এই ঘটনার পর ওই কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সারাদেশের ৮ উপজেলা, ২ পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের অংশ হিসেবে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার নাইক্ষ্যংছড়ি, ঘুমধুম ও সোনাইছড়ি ইউনিয়নেও ১৪ অক্টোবর সোমবার সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, ১৯২৩ সালে থানা এবং ১৯৮৩ সালে উপজেলায় উন্নীত হওয়া বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার উত্তর-পূর্বে আলীকদম উপজেলা ও লামা উপজেলা; উত্তরে লামা উপজেলা ও কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলা; পশ্চিমে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলা, রামু উপজেলা ও উখিয়া উপজেলা এবং দক্ষিণ-পূর্বে মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশ অবস্থিত। মায়নমারের সীমান্ত লাগোয়া উপজেলা হওয়ায় নাইক্ষ্যংছড়িতে বাংলাদেশের আঞ্চলিক উপজাতি সশস্ত্র দল ছাড়াও মায়ানমারের কয়েকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী দলের আনাগোনা রয়েছে।
