পানছড়িতে ইসকনের প্রচারকেন্দ্র নির্মাণের চেষ্টা, রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতার শঙ্কা
 
                 
নিউজ ডেস্ক
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পানছড়ি উপজেলায় প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়াই ইসকনের একটি পরিত্যক্ত প্রচার কেন্দ্র ও কীর্তন মন্দিরের পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে ৩ বিজিবি’র পানছড়ি ব্যাটালিয়ন দ্রুত হস্তক্ষেপ করে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয়।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ১০টায় পানছড়ি ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তর থেকে মাত্র ২০০ গজ পশ্চিমে আদি ত্রিপুরা পাড়ায় ইসকন কমিটির সভাপতি সুকান্ত চক্রবর্তীর নেতৃত্বে ৮ থেকে ১০ জন সদস্য নির্মাণকাজ শুরু করেন। এ বিষয়ে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তারা বিজিবি’র কাছে অভিযোগ করেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিজিবি নির্মাণকর্মীদের কাছে উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি ও জমির বৈধ কাগজপত্র প্রদর্শনের অনুরোধ করে। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন। ফলে স্থানীয় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিজিবি নির্মাণকাজ স্থগিতের নির্দেশ দেয়।
স্থানীয় সূত্রমতে, পানছড়ি উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা প্রায় ১৪,৭৪০ হলেও ইসকনের অনুসারী সংখ্যা নগণ্য। উল্লেখযোগ্য হলো, ইসকনের কোনো স্বীকৃত স্থানীয় কমিটিও এখানে নেই। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, কেন এবং কী উদ্দেশ্যে গোপনে এই নির্মাণকাজ পরিচালিত হচ্ছিল।
স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরাও জানান, তারা ইসকনের এই উদ্যোগ সম্পর্কে পূর্বে কিছু জানতেন না। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, ইসকন স্থানীয়ভাবে নিজেদের প্রভাব বৃদ্ধি এবং গোপনীয় কার্যক্রম সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রশাসনিক বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে কার্যক্রম চালাতে চেয়েছিল।
কিছু সূত্র মনে করছেন, ইসকন স্থানীয়ভাবে নিজেদের প্রভাব বৃদ্ধির জন্য এই প্রচারকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে, যা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি করতে পারে।
ভারত সীমান্তবর্তী পানছড়িতে দীর্ঘদিন ধরে পার্বত্য জনসংহতি সমিতি (জেএসএস-সন্তু) ও ইউপিডিএফ (প্রসিত) গ্রুপের মধ্যে বৈরিতা এবং ভারত সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অস্ত্র চোরাচালানের তথ্য থাকায় পরিস্থিতি অত্যন্ত সংবেদনশীল। এমন বাস্তবতায় অনুমতি ছাড়া ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগকে স্থানীয়রা রাষ্ট্রবিরোধী এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির অপচেষ্টা হিসেবে দেখছেন।
স্থানীয় জনমতে, ইসকনের এই কার্যকলাপ শুধু আইন লঙ্ঘনই নয়, বরং এটি পার্বত্য অঞ্চলের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্যও হুমকি। এজন্য প্রশাসনিক নজরদারি বৃদ্ধির পাশাপাশি এ ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।
