সীমান্তে অস্বস্তিকর তৎপরতা: আরাকান আর্মিকে সহায়তা করছেন সাবেক জনপ্রতিনিধি!
 
                 
নিউজ ডেস্ক
মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মি (AA)–র সদস্যরা নিয়মিতভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে এবং এতে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করছেন নাইক্ষ্যংছড়ির সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমদ। গোয়েন্দা ও স্থানীয় সূত্রে পাওয়া তথ্যে উঠে এসেছে, সীমান্ত এলাকায় তাঁর প্রভাব এবং একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই তৎপরতা নির্বিঘ্নে চলছে।
বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, বান্দরবান-টেকনাফ সীমান্ত হয়ে আরাকান আর্মির সদস্যরা তোফায়েল আহমদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় বাংলাদেশে ঢুকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে। কখনও তারা পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মাঝে মিশে যাচ্ছেন, কখনও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নিচ্ছেন। বিনিময়ে তোফায়েল সিন্ডিকেট পাচার, অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা ও সীমান্তজুড়ে চোরাচালান কার্যক্রমের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
এই সিন্ডিকেটের প্রধান সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন ক্যানু মারমা নামে এক ব্যক্তি, যার মাধ্যমে আরাকান সদস্যদের বাংলাদেশে প্রবেশ ও অবস্থান তদারকি করা হয়। স্থানীয় সূত্র মতে, বর্তমানে প্রায় ৫০০ পাহাড়ি তরুণ গোপনে আরাকান আর্মিতে যুক্ত হয়ে ওপারে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তোফায়েল ও ক্যানু নিয়মিতভাবে মিয়ানমারেও যাতায়াত করছেন বলে জানা গেছে।
আরও ভয়াবহ তথ্য হলো—বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া আহত আরাকান সদস্যদের চিকিৎসাসেবা, থাকা-খাওয়া ও গোপন চলাচলের দায়িত্ব নিচ্ছে এই সিন্ডিকেট। কক্সবাজার, রামু, চট্টগ্রাম, এমনকি ঢাকায়ও তাদের গোপন বিচরণ রয়েছে।
একজন স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, “আরাকান সদস্যরা স্থানীয়দের মাধ্যমে বিয়ে করে বাংলাদেশে বসবাসের বৈধতা নিচ্ছে। এর মাধ্যমে তারা অনায়াসে যাতায়াত ও সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।”
সম্প্রতি বিজু ও বৈসাবি উৎসবকে কেন্দ্র করে অন্তত ১০–১৫ জন আরাকান আর্মি সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে জানা গেছে। কেউ উৎসবে অংশ নিয়েছে, কেউ মিশে গেছে পাহাড়ি এলাকায় কিংবা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে।
এ বিষয়ে বান্দরবান জেলার পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছার গণমাধ্যমকে বলেন,
“আমরা জানতে পেরেছি আরাকান সদস্যরা থানচিতে বৈসাবি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছে। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে এসেছে এবং আমরা তা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি।”
এদিকে স্থানীয়দের অনেকেই আতঙ্কে মুখ খুলতে না পারলেও এই বিষয়টি এখন ‘ওপেন সিক্রেট’। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পার্বত্য সীমান্তে এভাবে বিদেশি সশস্ত্র গোষ্ঠীর গোপন বিচরণ জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।
