জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মৈত্রীবানী প্রচার ও প্রসার ঘটাতে হবে- ভদন্ত নন্দপাল মহাস্থবির
 
                 
নিউজ ডেস্ক
পাহাড়ে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মৈত্রীবানী প্রচার ও প্রসার ঘটানোর আহবান জানিয়ে বনভান্তের অন্যতম শিষ্য ভদন্ত নন্দপাল মহাস্থবির বলেছেন, মাদক ও সকল অধর্ম কাজ ত্যাগ করে ভালোর পথে আসলেই সুন্দর সমাজ গঠন করা সম্ভব হবে। তিনি সবাইকে হিংসা-হানাহানি, লোভ-মোহ ত্যাগ করে গৌতম বুদ্ধের আদর্শ অনুসরনের আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সমাজে শান্তি ফেরাতে, মানষে-মানুষে সম্প্রীতি জোরদার করতে হিংসা-হানাহানি ত্যাগ করার বিকল্প নেই। ২রা নভেম্বর শনিবার দুপুরে বাঘাইছড়ি উপজেলার অজল চুগ বন বিহারে পঞ্চম কঠিন চীবর দান উৎসবে সমবেত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ও স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন তিনি।
বিহারধ্যাক্ষ সত্যমতি ভান্তের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে আরো বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রামের সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য বাসন্তি চাকমা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য শতরূপা চাকমা। অনুষ্ঠানে সাধনাটিলা বন বিহারের বিহারধ্যক্ষ বুদ্ধ বংশ মহাথের, দীঘিনালা বনবিহারের বিহারাধ্যক্ষ শুভ বর্ধন মহাস্থবিরসহ বৌদ্ধ ভিক্ষুসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে ঢাকা সিভিল এভিয়েশন থেকে ভাড়ায় চালিত স্কয়ার এয়ার এর হেলিকপ্টার যোগে তিন জন সফর সঙ্গী সহ ভদন্ত নন্দলাল মহাস্থবির খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে অবতরণ করেন। পরে সেখানে তাকে ফুল দিয়ে বরণ করেন পার্বত্য জেলার সংরক্ষিত মহিলা এমপি বাসন্তি চাকমা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, জেলা পরিষদ সদস্য জুয়েল চাকমাসহ ধর্মীয় ভান্তে ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। এরপর তিনি বাঘাইছড়ির অজলচুক বনবিহারে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সড়ক পথে বাঘাইছড়ির পথে রওনা দেন।
এদিকে কঠিন চীবর দান উপলক্ষ্যে বিহারে দেশ জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনায় পঞ্চশীল গ্রহন, বুদ্ধপূজা, সংঘদান, অষ্ট পরিস্কার দান কল্পতরু দান ও চীবর দান উৎসর্গ করা হয়।
সকালে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে নন্দপাল মহাস্থবির খাগড়াছড়িতে ষ্টেডিয়ামে অবতরণ করেন। এ সময় তাকে তিন পার্বত্য জেলার নারী সাংসদ বাসন্তি চাকমা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী ও জেলা পরিষদ সদস্য শতরুপা চাকমাসহ দায়ক দায়িকারা ঐতিহ্যবাহী মাঙ্গলিক ছাতায় তাঁকে বরণ করেন। ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ নারী পুরুষরা এ সময় তাকে এক নজর দেখতে ভিড় করেন।
প্রসঙ্গত, ভদন্ত নন্দপাল মহাস্থবির ভান্তে ১৯৫২ সালের ১০ই মে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা শহরে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। বর্তমান সময়ে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের কাছে সবচেয়ে প্রবীন ও শ্রদ্ধাশীল ভান্তেদের মধ্যে ভদন্ত নন্দপাল অন্যতম ধর্মীয় গুরু। সম্প্রতি তিনি রাঙামাটির বনভান্তের দায়িত্ব নেয়ার পর ভারতে বৌদ্ধ ধর্মীয় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারত সফরে যান। সেখান থেকে ফিরে ঢাকায় একটি বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান শেষে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি অজলচুক বৌদ্ধ বিহারে চীবর দান অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই তিনি হেলিকপ্টার যোগে খাগড়াছড়ি আসেন।
