সিরাজগঞ্জ সদর ও রায়গঞ্জে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে অভিযান: ১৬ টন সরকারি চাল জব্দ

নিউজ ডেস্ক
সিরাজগঞ্জ সদর এবং রায়গঞ্জ উপজেলায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর পৃথক দুটি অভিযানে মোট ১৬ হাজার কেজি ন্যায্যমূল্যের সরকারি চাল জব্দ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে ২০২৫) রাত ৮টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
সিরাজগঞ্জ সদর সেনা ক্যাম্প এবং নিমগাছি আর্মি ক্যাম্প থেকে দুটি পৃথক পেট্রল দল অভিযানে অংশ নেয়।
সদরের মালসাপাড়ায় নর্থ বেঙ্গল ফ্লাওয়ার মিল এলাকায় অবস্থিত একটি গুদামে অভিযান চালিয়ে আনুমানিক ৫০০ বস্তা (প্রায় ১০ হাজার কেজি) সরকারি চাল জব্দ করা হয়। ঘটনাস্থলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফিফ আন নজমু এবং সদর থানা পুলিশের উপস্থিতিতে গুদাম মালিককে গ্রেফতার করা হয়।
অপরদিকে, রায়গঞ্জ উপজেলার চিরামপুর এলাকায় পরিচালিত অভিযানে আনুমানিক ৬ হাজার কেজি সরকারি চাল উদ্ধার করা হয় এবং ঘটনাস্থল থেকে ৭ জনকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন: মোঃ মাহফুজ হোসেন (২৫), মোঃ শাকিল হোসেন (২৮), মোঃ রাজু (২৫), মোঃ শরিফ হোসেন (৩৫), মোঃ আলমগীর হোসেন (৩৬), জাকির হোসেন (৩২) ও মোঃ সাইফুল (৩৫)।
আটকৃতদের রায়গঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সেনা সূত্রে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জ জেলায় গরিব-দুঃখীদের জন্য বরাদ্দকৃত ন্যায্যমূল্যের চাল যাতে কোনোভাবেই চোরাচালান বা মজুতদারির শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করতে ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা
বাংলাদেশে ন্যায্যমূল্যের চাল বিতরণ কর্মসূচি দেশের দরিদ্র জনগণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা। অথচ এই চাল নানা সময়ে অসাধু ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের হাতে অবৈধভাবে বিক্রি বা মজুত হওয়ার ঘটনা প্রায়ই সংবাদ শিরোনাম হয়।
এই প্রেক্ষাপটে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে পরিচালিত এই অভিযান কেবল একটি আইন প্রয়োগের ঘটনা নয়—এটি একটি শক্ত বার্তা। বিশেষ করে যখন অনেক সরকারি দপ্তর ও সংস্থা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়, তখন সেনাবাহিনীর সরাসরি হস্তক্ষেপে জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পায়।
রায়গঞ্জে একযোগে সাতজনকে আটক এবং এত বড় পরিমাণ চাল উদ্ধারের ঘটনা স্থানীয় প্রশাসনের জন্যও একটি সতর্ক সংকেত। এটি প্রশ্ন তোলে—কীভাবে এত বড় একটি মজুদের খবর এতদিন অজানা থাকলো? এর সঙ্গে কোনো প্রভাবশালী রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
স্থানীয়রা মনে করছেন, এ ধরনের অবৈধ মজুদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অভিযান চালাতে না পারলে গরিবদের জন্য বরাদ্দকৃত রেশন বরাদ্দ থেকে সুবিধাভোগীরা বঞ্চিত হতে থাকবে। এক্ষেত্রে প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর এই ধরনের জবাবদিহিমূলক তৎপরতা জাতীয়ভাবে একটি আদর্শ দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।