‘আদিবাসী’ পরিচয় দাবির আড়ালে পাহাড় নিয়ে চক্রান্ত, সুপ্রদীপ চাকমার অপসারণ দাবি
![]()
নিউজ ডেস্ক
রাষ্ট্রবিরোধী ‘আদিবাসী’ শব্দকে প্রতিষ্ঠিত করা ও ‘আদিবাসী’ পরিচয়ের দাবির আড়ালে পাহাড় নিয়ে চক্রান্ত করার অভিযোগে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার বক্তব্য এবং সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীর ভূমিকার প্রতিবাদে ও বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি)।
আজ সোমবার সকালে রাঙামাটি জেলা শহরের কাঠালতলী এলাকা থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে বনরূপা সিএনজি স্টেশন চত্বরে সমাবেশে মিলিত হয়।
সংগঠনটির রাঙামাটি জেলা সভাপতি মো. আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি রাঙামাটি জেলা সভাপতি মো. সোলায়মান, পিসিসিপি’র যুগ্ম সম্পাদক রবিউল ইসলাম, বরকল উপজেলা সভাপতি তসলিম উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক ইসমাঈল গাজী, লংগদু উপজেলা সম্পাদক মনির হোসেন প্রমুখ।
নেতারা অভিযোগ করেন, ২৩ জুন অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন, ২০১০’ সংশোধনের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত ‘নৃ-বৈচিত্র্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বিষয়ে আলোচনা হয়, যেখানে সাতটি সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের নাম পরিবর্তন করে ‘জাতি-বৈচিত্র্য ইনস্টিটিউট’ রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ সময় উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “আমরা আদিবাসী শব্দটি চাচ্ছি শুধু আমাদের আইডেন্টিফিকেশনের জন্য।” এই বক্তব্যকে নেতারা সংবিধানবিরোধী ও বিভাজনমূলক আখ্যা দেন।

পিসিসিপি নেতারা বলেন, “সংবিধানের ৬(২) অনুচ্ছেদে বর্ণিত জাতীয় পরিচয়ের বিপরীতে এমন বক্তব্য জাতিগত উত্তেজনা ছড়াতে পারে। সরকার যেখানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অধিকার সংরক্ষণে সচেষ্ট, সেখানে এসব অধিকারকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার রাষ্ট্রবিরোধীরা রাষ্ট্রীয় ঐক্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।”
বক্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, প্রস্তাবিত ৭(ঘ) ধারা অনুযায়ী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী প্রতিনিধিদের একচেটিয়া ক্ষমতা প্রদানের পরিকল্পনা পার্বত্য অঞ্চলে বাঙালি জনগণের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিত্ব সংকুচিত করতে পারে।
সমাবেশ থেকে চার দফা দাবি জানানো হয়:
১. ‘আদিবাসী’ শব্দের ব্যবহার ও প্রচার বন্ধে সুস্পষ্ট রাষ্ট্রীয় নির্দেশনা জারি করতে হবে।
২. রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থেকে কেউ সংবিধানবিরোধী বক্তব্য দিলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩. সাংস্কৃতিক অধিকার সংরক্ষণ হোক সংবিধানিক কাঠামোর ভেতরে, রাজনৈতিক স্বার্থে নয়।
৪. পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমবিকাশের ভিত্তিতে রাষ্ট্রকে পার্বত্য অঞ্চলে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
নেতারা আরও বলেন, অতীতে বরাদ্দ নিয়ে অনিয়ম ও পক্ষপাতের অভিযোগে সুপ্রদীপ চাকমা বিতর্কিত হয়েছেন। পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে হলে রাষ্ট্রবিরোধী অবস্থান পরিহার করতে হবে।
উল্লেখ্য, পিসিসিপি নেতারা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে বিতর্কিত কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হলে তারা বৃহত্তর ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলবে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।