রাবিতে চান্স পেয়েও অনিশ্চিত ছাইনুমের পড়াশোনা, পাশে দাঁড়াল পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ

রাবিতে চান্স পেয়েও অনিশ্চিত ছাইনুমের পড়াশোনা, পাশে দাঁড়াল পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

বান্দরবান পার্বত্য জেলার লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গম ভাজা পাড়ার মেয়ে ছাইনুমে মারমা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হলেও আর্থিক সংকটে তার উচ্চশিক্ষা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। চরম দারিদ্র্য ও প্রতিকূলতার মধ্যে বেড়ে ওঠা এই শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়িয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ, বান্দরবান পার্বত্য জেলা শাখা।

আজ বুধবার(৩০ জুলাই) ছাত্র পরিষদের একটি প্রতিনিধি দল ছাইনুমের নিজ বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করে এবং তার অদম্যতা ও সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ একটি সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেয়।

এ সময় ছাত্র পরিষদ বান্দরবান জেলা শাখার সভাপতি ছাত্রনেতা আসিফ ইকবাল, লামা উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আরমান হোসাইনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্র পরিষদের সভাপতি আসিফ ইকবাল বলেন, “ছাইনুমে মারমার মতো একজন শিক্ষার্থী সীমাহীন কষ্টের মধ্যেও নিজের মেধা ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে আজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছেছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, তার শিক্ষাজীবন এখন অর্থসংকটে থমকে যেতে বসেছে। আমরা পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে তার পাশে দাঁড়িয়েছি এবং ভবিষ্যতেও পাশে থাকবো।”

তিনি আরও বলেন, “ছাইনুমের এই লড়াই ও সাফল্য পাহাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য অনুপ্রেরণা। আমরা বিশ্বাস করি, রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা কয়েকটি বিশেষ সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সকল জাতি-গোষ্ঠীর মাঝে সমভাবে বিতরণ করা উচিত। ছাইনুমে মারমার গল্প সেই বৈষম্যের বাস্তব উদাহরণ।”

রাবিতে চান্স পেয়েও অনিশ্চিত ছাইনুমের পড়াশোনা, পাশে দাঁড়াল পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ

ছাইনুমে মারমা জানান, তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা বরাবরই দুর্বল। ছোটকাল থেকে অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে জীবন কেটেছে। খাবারের অভাবে দিন পার করেও তিনি কখনো পড়াশোনায় ছাড় দেননি। ২০২২ সালে হারবাং শাক্যমুনি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ এবং ২০২৪ সালে বান্দরবান সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষাতেও জিপিএ-৫ অর্জন করেন।

এইচএসসি পাসের পর ছাইনুমে একসঙ্গে ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পান। পছন্দের বিষয় ‘আইন’ বিভাগে পড়ার সুযোগ পেয়ে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। কিন্তু পরিবারিক আর্থিক সংকট তার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু করাই কঠিন করে তুলেছে।

ছাইনুমে বলেন, “ভর্তি হতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত ছিলাম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা, খাওয়া, লেখাপড়ার খরচ চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় ছাত্র পরিষদের সহযোগিতা আমাকে কিছুটা আশার আলো দেখিয়েছে।”

পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ জানায়, তারা শুধু ছাইনুমে নয়, ভবিষ্যতে আরও যেসব শিক্ষার্থী একই ধরনের সংকটে পড়বে, তাদের জন্যও পাশে থাকবে এবং সকল সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা-সহযোগিতার সুযোগ নিশ্চিত করার আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।