রাঙামাটিতে ইউএনও’র কাছে চাঁদা দাবি এনসিপির: কেন্দ্রীয় নির্দেশনার কথা বলছেন সর্বজিত চাকমা
![]()
নিউজ ডেস্ক
রাঙামাটি সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে সরাসরি উপস্থিত হয়ে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ (এনসিপি) পরিচয়ধারী সর্বজিত চাকমা নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ঘটনার পর জেলা প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করলেও অভিযুক্ত ব্যক্তি দাবি করছেন—তিনি কোনো চাঁদা চাননি, বরং বন্যাদুর্গতদের সহায়তা সংগ্রহে ইউএনও’র সহযোগিতা চেয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত গত ২ আগস্ট বিকেলে। রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ওইদিন বিকাল ৩টার দিকে সর্বজিত নামের ওই ব্যক্তি নিজেকে এনসিপির কর্মী পরিচয়ে ইউএনও’র অফিসিয়াল নম্বরে ফোন করেন। তিনি সরাসরি টাকা দাবি করেন এবং টাকা না দিলে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প দেয়ার দাবি তোলেন। ইউএনও সাফ জানিয়ে দেন, কোনো রাজনৈতিক দলের সুপারিশে উপজেলা প্রশাসন প্রকল্প বরাদ্দ দিতে পারে না। তখন সর্বজিত বলেন, ‘তাহলে সমিতির নামে দেন, অসুবিধা কী?’
বিষয়টি এখানেই থেমে থাকেনি। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে সর্বজিত চাকমা ও তার এক সহযোগী ইউএনও অফিসে সরাসরি উপস্থিত হন এবং ইউএনও’র প্রশাসনিক কর্মকর্তার কাছে নগদ ১০ হাজার টাকা দাবি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। তাদের আচরণে বিব্রত হয়ে ইউএনও বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা কমিটিতে অবহিত করেন।
তবে পুরো অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত সর্বজিত চাকমা। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবি করেন, ‘আমি কোনো চাঁদা চাইনি। বাঘাইছড়িতে পানিবন্দী মানুষদের সহায়তা দিতে কেন্দ্রীয় নির্দেশে আমরা কিছু অর্থ সংগ্রহ করছি। এনসিপির সাথে একাত্ম হয়ে কাজ করছি। ইউএনও’র কাছে শুধু সহায়তা চেয়েছি, উনি ভুল বুঝেছেন।’
ঘটনার ব্যাখ্যায় সর্বজিত আরও বলেন, ‘আমরা ব্যক্তিগতভাবে কিছু টাকা তুলে বন্যার্তদের সহায়তা করছি। বিপিন দাদা (জেলা এনসিপির সমন্বয়কারী) ঢাকায় নাহিদ ভাইয়ের রুমে আছেন, তিনিও বলেছেন সরকার থেকে যতটুকু পারা যায় সহায়তা নিতে। সেই প্রেক্ষিতেই ইউএনও’র কাছে গিয়েছিলাম।’
তবে বিষয়টিকে ভুল বুঝাবুঝি বলেই মেনে নিচ্ছেন এনসিপির জেলা শাখার প্রধান সমন্বয়কারী বিপিন জ্যোতি চাকমা। তিনি বলেন, ‘যার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি মূলত বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) সদস্য। আমাদের এনসিপির কেউ নন। আমি নিজেই ইউএনও’র সঙ্গে কথা বলেছি। সাংগঠনিকভাবে আমরা বিষয়টি দেখছি।’
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত সর্বজিতের ভাষ্যমতে এখনো রাঙামাটিতে বাগছাসের কোনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়নি। তিনি এনসিপির ব্যানারে ‘একাত্মতা’ দেখিয়ে মাঠে কাজ করছেন বলে জানান।
প্রসঙ্গত, প্রশাসনিক দপ্তরে গিয়ে এভাবে ব্যক্তিগত বা দলীয় পরিচয়ে সহায়তার নামে অর্থ দাবি করার ঘটনা সরাসরি চাঁদাবাজির শামিল কিনা, তা এখন তদন্ত সাপেক্ষ। স্থানীয় প্রশাসন ইতোমধ্যে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়েছে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।