কঙ্গোতে থামছে না রুয়ান্ডা সমর্থিত এম ২৩ গোষ্ঠীর নৃশংসতা
![]()
নিউজ ডেস্ক
রুয়ান্ডা-কঙ্গোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের সমর্থনে সমঝোতা হলেও আখেরে তা খুব একটা ফলপ্রসূ হয়নি বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। বুধবার (২০ আগস্ট) সংস্থাটির প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, গেল জুলাই মাসেই রুয়ান্ডা সমর্থিত সশস্ত্রগোষ্ঠী এম ২৩-এর হাতে অন্তত ১৪০ জন কঙ্গোলিজের প্রাণ গেছে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
গত মাসে কঙ্গোর রুতশুরু অঞ্চলে হত্যাযজ্ঞের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছিল রয়টার্স। এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনে বলা হয়, সেখানে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়ে যাওয়াও অস্বাভাবিক নয়, যা জাতিসংঘের আশঙ্কার সঙ্গে মিলে যায়।
এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনের দাবিগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।
তাদের প্রতিবেদনে প্রাণে বেঁচে যাওয়া একাধিক ভুক্তভোগীর জবানবন্দি তুলে ধরা হয়। এক নারী বলেছেন, তার সামনেই ম্যাচেটে (এক ধরনের ধারালো অস্ত্র) দিয়ে কুপিয়ে তার স্বামীকে হত্যা করেছে এম ২৩ এর সদস্যরা। এরপর নারী-শিশুর প্রায় ৭০ জনের একটি দলকে সারাদিন হাঁটিয়ে নদীর পারে নিয়ে গুলি করা হয়। তিনি সরাসরি গুলিবিদ্ধ না হয়ে পানিতে পড়ে যাওয়ার কারণে প্রাণে বেঁচে যান।
প্রতিবেদনে আরেক ব্যক্তির বয়ান তুলে ধরা হয়, যার স্ত্রী ও চার সন্তানকে এম ২৩ সদস্যরা হত্যা করেছে।
অথচ এই হানাহানি বন্ধ করার জন্যই গত ২৭ জুন মার্কিন সমর্থিত এক শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল কঙ্গো ও রুয়ান্ডা। ধারণা করা হচ্ছিল, চলতি বছর শুরু হওয়া এই দ্বন্দ্বে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ও উচ্ছেদের পর এই বুঝি সব শান্ত হতে শুরু করলো।
তবে চলমান সহিংসতার খবরে ওই শান্তি চুক্তির সার্থকতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে। কঙ্গোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, এ ধরনের নৃশংসতা শান্তি আলোচনার আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
অন্যদিকে, কোনও রকম সহিংসতা বা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে এম ২৩। দলটির কর্মকর্তা বেনজামিন এমবোনিমপা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেছেন, তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সবকিছু সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হচ্ছে। হত্যাযজ্ঞের জন্য তাদের অযথাই দায়ী করা হচ্ছে বলে দাবি জানান তিনি।
এইচআরডব্লিউ বলেছে, প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান থেকে, জুলাই মাসে দেশটির পূর্বাঞ্চলে ভিরুঙ্গা জাতীয় উদ্যানের কাছাকাছি ১৪টি গ্রাম ও কৃষি এলাকায় এম ২৩ গোষ্ঠীর হামলার তথ্য নিশ্চিত করা গেছে। স্বাস্থ্য ও জাতিসংঘ কর্মীসহ মোট ২৫ জনের তথ্য যাচাই করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ভুক্তভোগীদের অধিকাংশই ছিলেন হুতু সম্প্রদায়ের। আর কিছু ঘটনার ভুক্তভোগী ছিলেন নানদে গোষ্ঠীর সদস্য।
সহিংসতা নিরসনে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং বিভিন্ন দেশের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এইচআরডব্লিউ। নিষেধাজ্ঞা, গ্রেফতারি পরোয়ানা বা আইনি লড়াইয়ের মতো ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট পক্ষের কাছে আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাটি।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।