আরাকান আর্মির মিথ্যা প্রচারণা প্রত্যাখ্যান করল বিজিবি, সমর্থন করে না আরসা ও আরএসওকে

আরাকান আর্মির মিথ্যা প্রচারণা প্রত্যাখ্যান করল বিজিবি, সমর্থন করে না আরসা ও আরএসওকে

আরাকান আর্মির মিথ্যা প্রচারণা প্রত্যাখ্যান করল বিজিবি, সমর্থন করে না আরসা ও আরএসওকে
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সম্প্রতি আরাকান আর্মির (এএ) রাজনৈতিক শাখা ইউনাইটেড লীগ অব আরাকান (ইউএলএ)-এর অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। ইউএলএ দাবি করেছিল, বিজিবি নাকি আরসা ও আরএসওকে সহযোগিতা করছে। তবে বিজিবি স্পষ্ট জানিয়েছে, এসব সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে তাদের কোনো যোগাযোগ নেই। বরং, বিজিবি নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আরসা ও আরএসও-কে নির্মূলের চেষ্টা করছে এবং ইতোমধ্যে শীর্ষ নেতা আতাউল্লাহ জুনুনিসহ বহু সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।

বিজিবির ম্যান্ডেট হলো সীমান্ত সুরক্ষা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার মানবিক দায়িত্ব পালন করা। ২০২৩ সালের শেষ দিকে মিয়ানমারে যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ার পর থেকে বিজিবি নাফ নদী ও পার্বত্য সীমান্ত এলাকায় টহল জোরদার করেছে, যাতে সহিংসতা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে ছড়িয়ে না পড়ে। বান্দরবান থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সীমান্ত জুড়ে বাড়ানো হয়েছে চৌকি, মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত সেনা, আধুনিক অস্ত্র ও সরঞ্জাম। প্রতিটি এলাকায় টানা ২৪ ঘণ্টা পালাক্রমে টহল দিচ্ছে বিজিবি সদস্যরা।

একই সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় মাইন শনাক্তকরণ ও সচেতনতামূলক কার্যক্রমও চালাচ্ছে বিজিবি। বিপজ্জনক স্থানগুলোতে লাল পতাকা দিয়ে সতর্কীকরণ চিহ্ন বসানো হয়েছে এবং মাইন বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য আর্থিক সহায়তা ও চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এসব পদক্ষেপে প্রতিফলিত হচ্ছে সীমান্ত নিরাপত্তা ও মানবিক সুরক্ষায় বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থান।

অন্যদিকে, ইউএলএ-এএর ভেতরেই দেখা দিয়েছে চরম সংকট। দীর্ঘ সংঘাতে তাদের সদস্যদের মনোবল ভেঙে পড়েছে। মাদক ব্যবসা, লুটপাটকৃত সম্পদের ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ এবং যুদ্ধ ক্লান্তির কারণে বহু যোদ্ধা দলত্যাগ করেছে। জনবল ঘাটতি মেটাতে অন্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সদস্যদের নিয়োগ দিলেও ভাষা ও ভৌগোলিক সমস্যার কারণে তারা অকার্যকর হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে বুথিডং অঞ্চলে খাদ্য সংকট তীব্র হওয়ায় সাধারণ রোহিঙ্গারা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে চেষ্টা করছে। এমনকি এক এএ লেফটেন্যান্ট সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আত্মসমর্পণ করেছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।

এছাড়া এএ শুধু রোহিঙ্গা নয়, ম্রো ও তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠীসহ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ওপরও নির্যাতন চালাচ্ছে। এমনকি নিজেদের রাখাইন জনগোষ্ঠীর সদস্যরাও চাঁদা না দিলে সহিংসতা ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এসব কারণে বহু মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

বিজিবি বলেছে, আরসা ও আরএসও-র নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়া, মাদক পাচার প্রতিরোধ এবং সীমান্ত এলাকায় শান্তি বজায় রাখা তাদের মূল দায়িত্ব। সীমান্তে এএ কর্তৃক স্থাপন করা ল্যান্ডমাইনই প্রমাণ করে যে বাংলাদেশ ভূখণ্ড থেকে এসব সন্ত্রাসী সংগঠন কার্যক্রম চালানো অসম্ভব।

বিজিবি দৃঢ়ভাবে জানিয়েছে, ইউএলএ-এর এ ধরনের প্রচারণা মূলত নিজেদের মানবাধিকার লঙ্ঘন, নির্যাতন ও অপরাধ গোপন করার কৌশল। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এএ-এর বর্বর কর্মকাণ্ডের জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা।

উল্লেখ্য, সীমান্ত নিরাপত্তা রক্ষা ও মানবিক দায়িত্ব পালনে বিজিবি সর্বদা সজাগ এবং দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।