খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফের সহিংসতা ও মিথ্যা নাটকের প্রতিবাদে ছাত্র-যুব পরিষদের মানববন্ধন

খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফের সহিংসতা ও মিথ্যা নাটকের প্রতিবাদে ছাত্র-যুব পরিষদের মানববন্ধন

খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফের সহিংসতা ও মিথ্যা নাটকের প্রতিবাদে ছাত্র-যুব পরিষদের মানববন্ধন
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

খাগড়াছড়িতে সম্প্রতি সশস্ত্র গোষ্ঠী ইউপিডিএফের সহিংস কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ ও যুব পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে বক্তারা ইউপিডিএফকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং প্রত্যাহারকৃত সেনা ক্যাম্প পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানান।

বক্তারা অভিযোগ করেন, ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগকে কেন্দ্র করে ইউপিডিএফ সম্প্রতি পাহাড়ে অবরোধ কর্মসূচির আড়ালে সাধারণ মানুষ, সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে। শুধু তাই নয়, মসজিদে অগ্নিসংযোগ, দোকানপাট লুটপাট এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উসকে দেওয়ার মাধ্যমে পাহাড়ের শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে অশান্ত করার চেষ্টা করেছে।

সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের (পিসিএনপি) চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা এডভোকেট পারভেজ তালুকদার, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন কায়েস ও সাধারণ সম্পাদক হাবীব আজম, যুব পরিষদের সভাপতি এডভোকেট নূর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আফসার রনি, বান্দরবান জেলা ছাত্র পরিষদের সভাপতি হাবীব আল মাহমুদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

কাজী মজিবর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, “পাহাড়ে এক ভয়ংকর ষড়যন্ত্র চলছে। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর প্রত্যক্ষ মদদে ইউপিডিএফসহ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো অশান্তি সৃষ্টি করছে। বিদেশি মদদ যতই থাকুক, রাষ্ট্রের দৃঢ় পদক্ষেপ ও জনগণের ঐক্যের কাছে এরা কোনোদিন সফল হবে না।” তিনি অবিলম্বে সেনা ক্যাম্প পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে বলেন, “এটি এখন সময়ের অপরিহার্য দাবি।”

ছাত্র পরিষদ ও যুব পরিষদের নেতারা তাদের বক্তব্যে বলেন, ইউপিডিএফসহ সব সশস্ত্র সংগঠন নিষিদ্ধ করা জরুরি। এসব গোষ্ঠী শুধু সন্ত্রাস ও রক্তপাতের মাধ্যমে জনগণকে আতঙ্কিত করছে এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম চালাচ্ছে। বক্তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে পাহাড়ের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

সমাবেশ থেকে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়:

১) ইউপিডিএফসহ সব সশস্ত্র গোষ্ঠীকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ ঘোষণা।
২) প্রত্যাহারকৃত সেনা ক্যাম্প পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
৩) হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ সাজানোদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
৪) পাহাড়ে বসবাসরত সবার সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা।
৫) সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ।

বক্তারা আরও বলেন, পাহাড়ের প্রকৃত সমস্যা উন্নয়ন, শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও মৌলিক অধিকার। অথচ ইউপিডিএফ এসব দাবি থেকে মানুষকে সরিয়ে নিয়ে ভিন্ন খাতে বিভ্রান্ত করছে। তারা জোর দিয়ে বলেন, পাহাড় বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এখানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উসকে দেওয়ার যে কোনো ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি খাগড়াছড়ি ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় ইউপিডিএফের সশস্ত্র তৎপরতা ও সহিংসতার ঘটনায় সাধারণ মানুষ চরম অনিশ্চয়তা ও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। পাহাড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সেনা ক্যাম্প পুনঃপ্রতিষ্ঠা এখন স্থানীয় জনগণের অন্যতম প্রধান দাবি হয়ে উঠেছে।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।

You may have missed