ভারতে ৪১ বছর পর সাবেক পুলিশপ্রধানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
![]()
নিউজ ডেস্ক
পুরনো এক মামলায় ৪১ বছর পর আবারও আইনের মুখোমুখি হলেন ভারতের গুজরাটের সাবেক পুলিশপ্রধান (ডিজিপি) কুলদীপ শর্মা। তিনি ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি), বিশেষত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কট্টর সমালোচক হওয়ায় এ আইনি পদক্ষেপ নিয়ে তুমুল রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে।
১৯৮৪ সালের কচ্ছ জেলার চোরাচালানসংক্রান্ত এক মামলায় বেআইনি আটক রাখার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর আত্মসমর্পণ না করায় ভুজ সেশন আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
আদালত আগেই তাকে ১৫ দিনের মধ্যে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিল।
কিন্তু শর্মা সেই নির্দেশ অমান্য করায় আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করে তার অনুপস্থিতিতেই এই পরোয়ানা জারি করেন।
আদালতের নথি অনুযায়ী, মামলাটি ১৯৮৪ সালের এক ঘটনার সূত্র ধরে শুরু হয়। তখন শর্মা কচ্ছ জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। অভিযোগ, তিনি নিজ দপ্তরেই কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা আব্দুল হাজি ইব্রাহিমের (ইভলা শেখ) ওপর আক্রমণ চালান ও বেআইনিভাবে তাকে আটকে রাখেন।
ভুজ আদালত সম্প্রতি ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪২ ধারায় ‘বেআইনি আটক রাখার’ অপরাধে শর্মাকে তিন মাসের সাধারণ কারাদণ্ড ও এক হাজার রুপি জরিমানার সাজা দিয়েছে।
এই মামলায় তার সঙ্গে সাবেক পুলিশ পরিদর্শক গিরিশ বাসাভদাও দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, যদিও ইচ্ছাকৃত আঘাত, অপমান এবং ভয় দেখানোর মতো গুরুতর অভিযোগ থেকে দুজনকেই সন্দেহের সুবিধা দিয়ে খালাস দেওয়া হয়েছে।
মামলাটি শুরু হয় ১৯৮৪ সালের মে মাসে, যখন অভিযোগকারী শঙ্কর জোশি অভিযোগ করেন, তিনি ও কয়েকজন প্রতিনিধি নালিয়া থানায় আটক এক ব্যক্তির হয়রানির বিষয়ে অভিযোগ জানাতে এসপি শর্মার সঙ্গে দেখা করেন।
জোশির অভিযোগ, হাজির নাম শুনে শর্মা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং অন্যদের কক্ষ থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন।
এরপর তিনি হাজিকে লাঠি দিয়ে মারধর করে নিজের দপ্তরেই আটকে রাখেন।
যদিও আঘাত করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি, আদালত মনে করেছে শর্মা ও বাসাভদা যৌথভাবে বেআইনি আটক রাখার অপরাধে দায়ী।
শর্মা বারবার আদালতে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দাবি করেছিলেন, কোনো কর্মরত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা চালাতে সরকারের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। প্রায় ২৮ বছর পর, ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেই অনুমোদন মেলে।
পরে শর্মা এই অনুমোদনকে সেশন আদালত, গুজরাট হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেন।
অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট ভুজ আদালতকে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন।
১৯৭৬ ব্যাচের আইপিএস কর্মকর্তা কুলদীপ শর্মা পরবর্তীতে গুজরাট রাজ্যের ডিজিপি পদে উন্নীত হন। তিনি একসময় সোহরাবউদ্দিন শেখের কথিত ভুয়া মিথ্যা বন্দুকযুদ্ধের মামলা নিয়েও জনসমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। তিনি ২০১৪ সালে অবসর গ্রহণ করেন।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।