প্রতিবন্ধী মারমা নারী ধর্ষণের বিচারের দাবিতে রাঙামাটিতে পিসিসিপির বিক্ষোভ

প্রতিবন্ধী মারমা নারী ধর্ষণের বিচারের দাবিতে রাঙামাটিতে পিসিসিপির বিক্ষোভ

প্রতিবন্ধী মারমা নারী ধর্ষণের বিচারের দাবিতে রাঙামাটিতে পিসিসিপির বিক্ষোভ
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরম ইউনিয়নের চংড়াছড়ি মুখ এলাকায় এক প্রতিবন্ধী মারমা নারীকে স্বজাতি তিন যুবকের হাতে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও স্থানীয় কার্বারীদের প্রথাগত বিচারের নামে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখা।

সোমবার বিকেলে রাঙামাটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে আয়োজিত এ বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা সভাপতি তাজুল ইসলাম তাজ। সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক পারভেজ মোশাররফ হোসেন। এতে বক্তব্য রাখেন জেলা সাধারণ সম্পাদক মো: আলমগীর হোসেন, ৩৫ কাঠুরিয়া স্মৃতি সংসদের আহ্বায়ক শাখাওয়াত হোসেন, পিসিএনপি রাঙামাটি জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মো: হুমায়ুন কবিরসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

সভায় বক্তারা বলেন, ধর্ষণের এই নৃশংস ঘটনায় ভিকটিম বর্তমানে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। অভিযুক্ত তিনজন—অনুচিং মারমা (৫০), কালা মারমা (৫৫) ও মং উ মারমা (৩৫)—এর বিরুদ্ধে স্থানীয়ভাবে গত ১৭ অক্টোবর প্রথাগত এক সামাজিক বিচার অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ভিকটিমের ক্ষতিপূরণ বাবদ মোট ৩ লাখ টাকা ও সমাজের নামে শুকর ক্রয়ের জন্য আরও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, একই বিচারে ভিকটিমকেও সমাজের নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বক্তাদের মতে, এটি কোনো ন্যায়বিচার নয় বরং একপ্রকার অবিচার ও ভিকটিমের প্রতি চরম অপমান।

প্রতিবন্ধী মারমা নারী ধর্ষণের বিচারের দাবিতে রাঙামাটিতে পিসিসিপির বিক্ষোভ

পিসিসিপি সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, “এই শিশুটির জন্মের দায় কে নেবে? ভিকটিম পরিবারটি এখন জেএসএস সশস্ত্রবাহিনীর নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ভয় ও আতঙ্কে রয়েছে, ফলে তারা আইনের আশ্রয় নিতে পারছে না।” তিনি অভিযোগ করেন, স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর বাধার কারণে ভিকটিমকে উদ্ধার করাও সম্ভব হয়নি।

পিসিসিপি সাধারণ সম্পাদক মো: আলমগীর হোসেন বলেন, “পাহাড়ে সামাজিক বিচারের নামে নারীর প্রতি সহিংসতার এই ঘটনা মানবাধিকারের জন্য এক ভয়াবহ বার্তা। অপরাধীদের অর্থদণ্ড দিয়ে দায়মুক্তি দেওয়া কোনো বিচার নয়, বরং অবিচার।”

বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, পাহাড়ের প্রভাবশালী আঞ্চলিক সংগঠনগুলো—ইউপিডিএফ, জেএসএস ও কেএনএফ—ঘটনাটি নিয়ে কোনো নিন্দা জানায়নি। এমনকি তথাকথিত মানবাধিকারকর্মী ইয়েন ইয়েন, মাইকেল চাকমাসহ সুশীল মহলের কেউও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি। বক্তাদের ভাষায়, “যখন কোনো বাঙালির বিরুদ্ধে পাহাড়ি নারীর প্রতি অভিযোগ ওঠে, তখন এই মহলগুলো প্রচার ও আন্দোলনে মুখর হয়, কিন্তু স্বজাতি কর্তৃক সংঘটিত নৃশংস ঘটনাগুলোতে তারা নীরব থাকে।”

প্রসঙ্গত, বক্তারা পাহাড়ে নারী নির্যাতনের ঘটনাগুলোর নিরপেক্ষ তদন্ত ও প্রভাবমুক্ত বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান এবং স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি ভিকটিমের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed