দেশজুড়ে ইসকন নিষিদ্ধের দাবি, ৬ দফা দাবি ইন্তিফাদার

দেশজুড়ে ইসকন নিষিদ্ধের দাবি, ৬ দফা দাবি ইন্তিফাদার

দেশজুড়ে ইসকন নিষিদ্ধের দাবি, ৬ দফা দাবি ইন্তিফাদার
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

ইসকন নিষিদ্ধ এবং মুফতি মহিবুল্লাহকে গুমকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে দেশের সচেতন নাগরিক সমাজ।

রংপুরে বিক্ষোভ

ইসকন নিষিদ্ধ এবং মুফতি মহিবুল্লাহকে গুমকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে রংপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে সর্বস্তরের সচেতন মুসলিম সমাজ।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) জুমার নামাজের পর সদর উপজেলা মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভটি শুরু হয়ে নগরীর সুপার মার্কেট, পায়রা চত্বর, জাহাজ কোম্পানী মোড়, প্রেসক্লাব চত্বর হয়ে এসে শেষ হয়। সেখানে সমাবেশ করেন তারা।

ইসকন নিষিদ্ধ ও মুফতি মহিবুল্লাহকে গুমকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে রংপুরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন করিমিয়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা ইউনুস আলী, মাওলানা সহিদুল ইসলাম, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা ইয়াছিন আরাফাত প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, ইসকন পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে দিল্লি এবং হাসিনার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে। তারা মুফতি মহিবুল্লাহকে গুম করে ঢাকা থেকে পঞ্চগড় দিয়ে দিল্লীতে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু ইন্টিরিম সরকার তাদের নিষিদ্ধ না করে লায় দিচ্ছে। অবিলম্বে ইসকনকে নিষিদ্ধ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী এই চক্রকে আইনের আওতায় আনা না হলে সারাদেশে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে তৌহিদি মুসলিম জনতা।

৬ দফা দাবিতে ইন্তিফাদার বিক্ষোভ

ইসকন নিষিদ্ধসহ ৬ দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ইন্তিফাদা বাংলাদেশ। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে ইন্তিফাদা বাংলাদেশ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।

উগ্র হিন্দুত্ববাদ, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষপাতপূর্ণ আচরণ, ইসলাম অবমাননা ও রাষ্ট্রীয় নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে সংগঠনটি।

সংগঠনটির অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- গাজীপুরে ধর্ষণের ঘটনায় ভিকটিমের প্রতি দোষারোপ বন্ধ করে পুলিশ ও প্রশাসনের আচরণের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। ধর্ষক এবং সহায়তাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচার ও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। টঙ্গি এলাকায় অপহরণ-হত্যার ঘটনায় দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ‘কাঠামোগত ইসলাম বিদ্বেষ’ ও ইসলামবিদ্বেষী আচরণ রোধে একটি জাতীয় নীতি ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। মুসলিম নারীর সম্মান ও নিরাপত্তা রক্ষায় সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও রক্ষা ব্যবস্থাসহ আইনি কাঠানো গঠন করতে হবে। ইসলামবিদ্বেষ-বিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করছেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

ইসকন নিষিদ্ধসহ ৬ দাবিতে ইন্তিফাদার বিক্ষোভ

বিক্ষোভ সমাবেশে ইন্তিফাদা বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. মেহেদী হাসান, সদস্য আহমেদ রফিক, ইসলামি বক্তা মুহাম্মদ জসীমউদ্দিন রহমানী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা ইসকন নিষিদ্ধ করাসহ টঙ্গীতে ইমাম গুমের ঘটনায় দায়ীদের গ্রেফতার, গাজীপুরে মাদরাসাছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের শাস্তি ও দেশের নাজুক পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রশাসনের নীরবতার প্রতিবাদ জানান। এ সময় বক্তারা নানান স্লোগান দেন।

ইন্তিফাদা বাংলাদেশের সদস্য আহমেদ রফিক বলেন, এক খতিব ইসকনের বিরুদ্ধে কথা বলায় তাকে অপহরণ করা হয়। এমন ঘটনা একের পর এক ঘটেই চলেছে। কিন্তু বিপরীতে আমরা কী দেখতে পাচ্ছি? আমরা বিপরীতে দেখতে পাচ্ছি রাষ্ট্র চুপ করে তামাশা দেখছে। প্রশাসন অপরাধীদের বাঁচানোর জন্য আয়োজন করছে। সুশীল সমাজকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ দায় নিতে চায় না।

তিনি আরও বলেন, কেউ কেউ আবার ইসলামি রাজনীতির কথা বলেন। কিন্তু যখন কোরআন অবমাননা হয়, যখন রাসুলের অবমাননা হয়, যখন মুসলিম নারীদের নিশানা বানানো হয়- তখন তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না।

মুহাম্মদ জসীমউদ্দিন রহমানী বলেন, ইসকন কোনো হিন্দু সংগঠন নয়। এটি ইহুদিদের তৈরি চরমপন্থি সংগঠন। এরা একের পর এক অপরাধ করে যাচ্ছে।

ইন্তিফাদা বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. মেহেদী হাসান বলেন, আমরা বিচার চাইতে এসেছি। সরকার বিচার করলে আমরা শান্ত থাকবো। কিন্তু আমরা বিচারের নামে প্রহসন দেখছি। এসব ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে কোনো বিবৃতি দেখছি না।

বিক্ষোভ সমাবেশ শেষ তারা একটি মিছিল নিয়ে শাপলা চত্বরের দিকে যান।

ঈশ্বরগঞ্জে বিক্ষোভ

গাজীপুরের টঙ্গীতে মসজিদের ইমামকে অপরহণ ও নির্যাতনের ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে উগ্র হিন্দু ধর্মীয় সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে বিক্ষোভ করেছে ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহী ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা শাখা।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) জুমার নামাজ শেষে উপজেলার মার্কাজ মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভটি শুরু হয়ে পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে উপজেলা পরিষদের সামনে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া ইত্তেফাক নেতারা বলেন, ইসকন শুধু কোনো ধর্মীয় গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়; তারা দেশের জনগণের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে হুমকিস্বরূপ। তারা দাবি করেন, ইসকনের কাজকর্ম দেশের সামাজিক ঐক্য ক্ষতিগ্রস্ত করছে। ফলে রাষ্ট্রীয়ভাবে এ সংগঠনটির কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে ঈশ্বরগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে

নেতৃবৃন্দ বলেন, শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়নকারী ও মুসলিমবিদ্বেষী ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গত বছরের নভেম্বরে গ্রেফতার হলে তার অনুসারী ইসকনি সন্ত্রাসীরা চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে সহিংস হামলা চালিয়ে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে শহীদ করে। সে সময় চট্টগ্রামের মুসলমানদের অভাবিত ধৈর্য ও বিচক্ষণতা প্রদর্শনকে ‘দুর্বলতা’ হিসেবে নিয়েছে ইসকন। তা নাহলে কিভাবে তারা আজ ভিন্নমতের কারণে একজন ইমামকে গুম করার স্পর্ধা দেখায়!

তারা বলেন, ইসকন মুসলমান ও সনাতনী সম্প্রদায় উভয়ের শত্রু। সম্প্রীতি রক্ষার্থে মুসলমান ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আমরা সারাদেশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে উগ্র হিন্দুত্ববাদী ইসকনের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।

সমাবেশে ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহী ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মুফতি মাহমুদুল হক আজিজী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি মুফতি হাবিবুল্লাহ, দফতর সম্পাদক ও ঈশ্বরগঞ্জ মডেল মসজিদের ইমাম মুফতি আহসানুল্লাহ কাসেমী, ঈশ্বরগঞ্জ মারকাজ মসজিদের ইমাম মাওলানা যাইনুল আবেদীন জমিরী, হাফেজ সাইদুর রহমান, আব্দুল্লাহ আল মামুন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা হাসানুর রহমান সজিবসহ আরো অনেকে অংশ নেন।

তিতুমীর কলেজে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল

হিন্দুত্ববাদী উগ্রতা, ইসলাম অবমাননা, পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষপাত এবং রাষ্ট্রীয় নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদ ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) জুমার নামাজ শেষে তিতুমীর কলেজ দাওয়াহ্ সার্কেলের উদ্যোগে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক থেকে শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে মহাখালী টিভি গেট পর্যন্ত যায় এবং পুনরায় কলেজ ফটকের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার’, ‘ইসলামের শত্রুরা হুশিয়ার’, ‘ইসকনের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ইসকনের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’, ‘ব্যান ইসকন’, ‘ইসকন তুই জঙ্গি, স্বৈরাচারের সঙ্গী’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ইসকন কেবল একটি ধর্মীয় সংগঠন নয়, বরং এটি ভারতের একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, যারা বাংলাদেশে হিন্দুত্ববাদী প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। তাদের দাবি, প্রশাসনের নীরবতা ও রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে সংগঠনটি বারবার ইসলাম ও মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানছে।

এসময় কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আল নোমান নীরব বলেন, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন বাংলাদেশের জন্য অভিশাপ। তারা আওয়ামী শাসনামলে রাষ্ট্রীয় সহায়তা পেয়ে ইসলামফোবিয়ার উস্কানি দিয়ে এসেছে। এখন আবার প্রশাসনের নীরবতার সুযোগে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানছে।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ তিতুমীর কলেজ শাখার সভাপতি ইউনুস আহমেদ বলেন, হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা আমাদের ভাই, কিন্তু ইসকন হিন্দু নয় এটি একটি উগ্র সন্ত্রাসী সংগঠন, যারা ভারতের হয়ে বাংলাদেশের হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছে। আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাই, ইসকনের কার্যক্রম অবিলম্বে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ তিতুমীর কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে দেশে উগ্র হিন্দুত্ববাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। অথচ অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিচ্ছে যে এই বাংলার মাটিতে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকনের কোন স্থান নেই।

জবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ

গাজীপুরের টঙ্গীতে ইমাম অপহরণ, হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসন বন্ধ, দেশবিরোধী অব্যাহত ষড়যন্ত্রের দায়ে ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বাদ জুমা এই বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে বাহাদুর শাহ পার্ক প্রদক্ষিণ করে ক্যাম্পাসেই এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ইসকন তুই জঙ্গি, স্বৈরাচারের সঙ্গী’, ‘জঙ্গিবাদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’ ইত্যাদি স্লোগান দেন’।

সমাবেশে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, বাংলাদেশে ইসকনের কাজ হচ্ছে মন্দির নির্মাণ করা, হিন্দুদের মাঝে সম্প্রীতির বন্ধন বজায় রাখা। কিন্তু আমরা দেখি তারা হিন্দুত্ববাদী কার্ড খেলে পুরো দেশ অশান্ত করার পাঁয়তারা করছে। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পরও তারা দেশকে অশান্ত করার চেষ্টা করেছে। তারা আমাদের ভাই আইনজীবী আলিফকে প্রকাশ্যে হত্যা করেছে। বিশ্বের অনেক দেশেই ইসকন নিষিদ্ধ আছে। তাহলে বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে বাধা কোথায়?

তিনি আরও বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই- ইসকন শুধু মুসলিম না তারা হিন্দুদেরও শত্রু, তারা মানবতার শত্রু। আমরা অবিলম্বে ইসকনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা চাই।

‘ইসকন তুই জঙ্গি, স্বৈরাচারের সঙ্গী’ স্লোগানে মুখর জবি ক্যাম্পাস

জবি শাখা ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক নূর মোহাম্মদ বলেন, ইসকন একটি ধর্মীয় সংগঠন। কিন্তু তারা ধর্মীয় কার্যক্রমের আড়ালে রাজনৈতিক স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা দাবি জানাই, এটা স্পষ্ট করুক তাদের কার্যক্রম আসলে কী কী এবং তারা কোন কোন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তাদের বাহির থেকেও আর্থিকভাবে সাহায্য করা হয়। কী উদ্দেশে এবং কী জন্য করা হয় সেটাও আমরা জানতে চাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম খলিল বলেন, আমরা ভেবেছিলাম জুলাই বিপ্লবের পর ইন্টেরিম সরকার সব ধরনের জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা নিষিদ্ধ করবে। কিন্তু আমরা দেখছি তারা সেটি করতে ব্যর্থ হয়েছে। ইসকন তাদের জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। এরইমধ্যে বিভিন্ন দেশে ইসকন নিষিদ্ধ আছে। কিন্তু আমাদের দেশে বিগত সময় দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে। বর্তমানেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ইসকন একটা জঙ্গি সংগঠন। সুতরাং আইন করে তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।

জবির আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল আলিম আরিফ বলেন, ইসকন এমন একটি সংগঠন যারা আমেরিকার আদালতে ৪০০ এর ওপরে শিশুদের যৌন নির্যাতনের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। হিন্দুদের ভেতরেও তারা সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করছে। এছাড়াও, তারা পূর্বে সিলেটে একজন ইমামকে হত্যা করেছে। চিম্ময় এর আগে একবার বলেছিল- আওয়ামী লীগের আন্দোলন মানে ইসকনের আন্দোলন। মুসলিম দেশের পাশাপাশি অনেক অমুসলিম দেশেও ইসকনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং অনেক দেশে তারা নজরদারিতে আছে। সুতরাং সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থেই ইন্টেরিমকে আইন করে ইসকন নিষিদ্ধ করতে হবে।

জাবিতে বিক্ষোভ

লাগাতার ধর্ষণ-নিপীড়ন, উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকনের অপতৎপরতা ও টঙ্গীতে মসজিদের খতিবকে অপহরণের প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বেলা ২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় থেকে মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে পুনরায় বটতলায় এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা, ‘ব্যান ব্যান ইসকন ‘, ‘হিন্দুত্ববাদের গথিতে আগুন জ্বালাও একসাথে’, ‘স্বৈরাচারী সঙ্গী ইসকন তুই জঙ্গী’,‘পেতে চাইলে মুক্তি ছাড়ো ভারত ভক্তি’, ‘তুমিও জানো আমিও জানি ইসকন মানে হিন্দুস্তানি’, ‘দিল্লি না ঢাকা ঢাকা, ঢাকা’, ‘শাপলার হাতিয়ার জেগে ওঠো আরেকবার’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

মিছিল শেষে জাকসুর পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মো. সাফায়েত মীর বলেন, ইসকন কোনো রিলেজিয়াস সংগঠন নয়। ইসকন দ্বারা ভালোবাসার টপে ফেলে মুসলিম নারীদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। এত এত অঘটন, ক্রাইম ঘটানোর পরও সরকার কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। চট্টগ্রামে আলীফ হত্যার বিচারের কোনো অগ্রগতি হয়নি।

ইসকনের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে জাবিতে বিক্ষোভ

অন্তর্বর্তী সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে এই জাকসু নেতা বলেন, সাধারণ জনগণের ধৈর্যের পরীক্ষা নেবেন না। যদি তারা ইসকনের বিরুদ্ধে কোনো কঠিন পদক্ষেপ না নেয় তবে আমরা সহিংস হয়ে উঠবো। আইন আমাদের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবো।

সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আনজুম শাহরিয়ার বলেন, আমাদের মা-বোনদের ধর্ষণ করা হচ্ছে, যারা আমাদের ঈমানের শিক্ষা দেয় সেই ইমামদের বলে বলে গুম করা হচ্ছে। অথচ আমরা দেখতে পাচ্ছি, পুলিশ ধর্ষিতাকে দোষী সাব্যস্ত করে অফিসিয়াল বিবৃতি দিচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের আবেগ নিয়ে খেলবেন না, আমাদের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নেবেন না। গতবছর ইসকন নামের হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আমাদের ভাই সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করেছিল, এক বছর পার হয়ে গেলেও সেই হত্যার বিচার এখনো পাইনি। আমাদের মা বোন ও দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র আমরা বরদাস্ত করবো না।

গোবিপ্রবিতে বিক্ষোভ

গাজীপুরের টঙ্গীতে এক মসজিদের ইমাম ইসকনের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ায় অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) জুমার নামাজ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে হলচত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

ছবি: প্রতিনিধি

বিক্ষোভে শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা “ইসকন নিষিদ্ধ কর”, “ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষা কর”, “ইমামের ওপর হামলার বিচার চাই”—এমন নানা শ্লোগান দিতে থাকেন।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, ইসকন শুধু কোনো ধর্মীয় সংগঠন নয়; তারা নিয়মিতভাবে অন্য ধর্মের অনুসারীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। এতে দেশের ধর্মীয় সহনশীলতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

তারা অভিযোগ করেন, ইসকনের কার্যক্রম এখন সমাজের ঐক্য ও শান্তি বিনষ্টের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে।

বিক্ষোভে উত্তাল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

হিন্দুত্ববাদী চক্র কর্তৃক মুসলিম নারীদের সম্ভ্রম নষ্ট, গাজীপুরে আশামনি ধর্ষণ, খতিব মুহিবুল্লাহকে অপহরণ, চট্টগ্রামের আলিফ হত্যা সহ ইসকনের সব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বাদ জুমা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে ‘মুসলিম শিক্ষার্থী’র ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে একই স্থানে সমবেত হন এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।

post.title

এসময় বক্তারা বলেন, ‘ পাঁচ আগস্ট পরবর্তী সময়ে এদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য ইসকন নামক এই বিষফোঁড়া, ভারতের দালাল বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। অতিসত্বর এই বাংলাদেশ থেকে ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আমরা দেখেছি, ফ্যাসিস্ট আমলে ইসকন এদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা গুলো নিয়ন্ত্রণ করেছে। বাংলাদেশের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে তারা ইসকনদের জায়গা করে নিয়েছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় থেকে একদম রুট-লেভেল পর্যন্ত ইসকন পরিকল্পিতভবে তাদের লোকদের ঢুকিয়েছে। অন্তবর্তীকালীন সরকারকে এই বাংলাদেশ থেকে ইসকন’কে নিষিদ্ধ করতে হবে। ইসকনকে যদি নিষিদ্ধ করা না হয়, এদেশের তাওহীদি জনতা এবং ছাত্র সমাজ কখনো মেনে নিবে না। ‘জেন-জি’ যদি একবার ইসকনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেঁটে-পড়ে তাহলে এই বাংলায় ইসকনের কবর রচিত হতে বাধ্য।’

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব আশরাফ উদ্দিন খান বলেন, ‘ইসকন এই বিশ্বে ধর্ম প্রচার করছে না বরং তারা ধর্মের ছদ্মবেশে উগ্র হিন্দুত্ববাদকে প্রচার এবং প্রসার করার জন্য মাঠে নেমেছে। মুসলিম মা বোনদের নিয়ে তামাশা করছে। ইসকনের মত সন্ত্রাসী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের দাবি। সিঙ্গাপুর আফগানিস্তান সহ বিভিন্ন দেশে ইসকনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ। হিন্দুদের বিভিন্ন সংগঠন থেকে বলা হয়েছে ইসকন তাদের ধর্ম প্রচারের কোন সংগঠন না। তারা উগ্র হিন্দুত্ববাদ প্রচার-প্রসারের জন্য এখানে আদা জল খেয়ে নেমেছে।’

সীতাকুণ্ডে বিক্ষোভ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মুসলিম তাওহীদি জনতার উদ্যোগে এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) জুম্মার নামাজ শেষে সীতাকুণ্ড আলিয়া মাদ্রাসার সামনে থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি পৌর সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সামনে পৌরসদের উওর বাজার এসে মিছিলটি শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্বদেন উওর জেলা ভোক্তা অধিকারের সভাপতি সমাজ সেবক, মাওলানা তাওহিদুল হক চৌধুরী।

বিক্ষোভকারীরা ইসকন নিষিদ্ধকরণ ও সাম্প্রতিক নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ফাঁসির দাবিতে নানা স্লোগান দেন।

বুটেক্স শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) সাধারণ শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি গাজীপুরে ইসলামবিদ্বেষী কর্মকাণ্ড, মুসলিম নারীদের প্রতি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, এবং একাধিক ধর্ষণ ও হুমকির ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ১টার পর বুটেক্সের পকেট গেটের সামনে শিক্ষার্থীরা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে দিতে প্রতিবাদ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধনে পরিণত হয়।

মানববন্ধনে ওয়েট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহ পরান বলেন, “সম্প্রতি ইসকন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্যরা মুসলিম মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করছে। বিশেষ করে গাজীপুরের শিশু আশামণি ধর্ষণ, বুয়েটের শিক্ষার্থীর এক তরুণীকে ধর্ষণ, এবং মুসলিম নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের মতো ঘটনাগুলো মুসলিম সমাজের প্রতি গভীর বিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ।”

তিনি আরও বলেন, “গাজীপুরের এক মসজিদের খতিবকে ইসকন সদস্যদের হত্যার হুমকি ও অপহরণের ঘটনাও অত্যন্ত উদ্বেগজনক।“ শিক্ষার্থীরা এসব ঘটনার দ্রুত বিচার ও দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান।

সংগৃহীত ছবি

কওমি মাদরাসা শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ইসকনকে জঙ্গি সংগঠন আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা।

আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদ থেকে এই বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়।

বাঙ্গালহালিয়ায় বিক্ষোভ সমাবেশ

শহীদ এডভোকেট আলিফ হত্যা, গাজীপুরের টিএন্ডটি কলোনি জামে মসজিদের ইমাম মুফতি মুহিবুল্লাহ মিয়াজিকে গুম করে হত্যার চেষ্টা, মুসলিম মেয়েদের ফাঁদে ফেলে সংঘবদ্ধ ধর্ষণসহ দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে রাজস্থলীর বাঙ্গালহালিয়ায় বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) জুমার নামাজ শেষে বাঙ্গালহালিয়া বাজারে স্থানীয় মুসল্লি ও সাধারণ জনগণের উদ্যোগে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

মিছিলটি বাঙ্গালহালিয়া বাজারের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে যাত্রীছাউনিতে এসে শেষ হয়। পরবর্তীতে সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বক্তারা বলেন, “ইসকন দীর্ঘদিন ধরে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা দেশে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করে শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট করছে। তাই অবিলম্বে এ সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।” যদি নিষিদ্ধ করা না হয়, আগামীতে আরও কঠিন আন্দোলনের ঢাক আসবে ইনশাআল্লাহ।

সমাবেশে হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ রাজস্থলী উপজেলা শাখার সভাপতি আবু হুরাইরা, সাংগঠনিক সম্পাদক ফোরকান, আরও মাঃ আব্দুল কাদের, মাঃ ফজলুল করিম, মাঃ শাহেদসহ স্থানীয় ধর্মীয় নেতা, ব্যবসায়ী, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

সৈয়দপুরে আলেমদের মানববন্ধন

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে সৈয়দপুরে তরুণ আলেমদের অংশগ্রহণে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) জুমার নামাজের পর সৈয়দপুর পাঁচ মাথা মোড় (পুলিশ বক্সের সামনে) ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

আলিফ হত্যা, গাজীপুরের আশামনি ধর্ষণ, টঙ্গীর খতিব অপহরণ, বুয়েটের আত্মস্বীকৃত ধর্ষক শ্রীশান্ত রায়সহ ইসকনের সকল উগ্রবাদী ও ধর্ষকদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার দাবিতে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এটি আয়োজন করে সর্বস্তরের তাওহীদি জনতা। তাদের ব্যানারে অনুষ্ঠিত ওই মানববন্ধনে মাওলানা রাহাতুল আশেকীন, মাওলানা হাসনাইন রেজা, মাওলানা মুফতি হামিদ জামাল, মাওলানা আব্দুল আজিম, মাওলানা জিল্লুর রহমানসহ সৈয়দপুরের বিভিন্ন মতের তরুণ আলেম সমাজ এতে বক্তব্য রাখেন।

Image description

সর্বস্তরের তাওহীদি জনতার ব্যানারে মানববন্ধন হলেও এতে সার্বিক সহযোগিতা করে ইয়ুথ ফাউন্ডেশন সৈয়দপুর নামে একটি সংগঠন। ফাউন্ডেশনের মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় শাহরিয়ার আলমসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সর্বস্তরের জনসাধারণ।

এ সময় বক্তারা বলেন, উগ্রবাদী ইসকন যে অখন্ড ভারতের স্বপ্ন নিয়ে নিরীহ মুসলিমদের উপর অত্যাচার করছে তা সকল মুসলিম এক হয়ে প্রতিহত করবে। ভারতের উগ্রবাদী বিজেপি আরএসএস বজরং দলের প্রেসক্রিপশনে ইসকন যে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, প্রয়োজনে এসব অপতৎপরতার জন্য তরুণ আলেম সমাজ জিহাদে নামতে প্রস্তুত। ইসকনের অখন্ড ভারতের স্বপ্ন ধূলিসাৎ করতে আজ বিভিন্ন মতের আলেম এক ব্যানারে উপস্থিত হয়েছে। এদেশে ইসকনের মত উগ্রবাদীদের ঠিকানা হবে না। অবিলম্বে তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে অন্যথায় আলেম সমাজ কঠোর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে বাধ্য হবে।

শেকৃবিতে বিক্ষোভ

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) ক্যাম্পাসে ইসকনের উগ্রতার বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার, ধর্ষণ-হত্যার শাস্তি ও ক্যাম্পাসে উগ্রপন্থা-উপস্থিতি প্রসঙ্গে এবং নিষিদ্ধ এর দাবিতে একটি প্রতিবাদী বিক্ষোভ মিছিল হয়।

মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) রাত ১০:৫০ মিনিটে মিছিলটি সেকেন্ড গেইট থেকে বের হয়ে উপাচার্য বাড়ি (ভিসির বাংলো) সামনে গিয়ে প্রথম গেইট, চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র প্রদক্ষিণ করে এবং রাত ১২টায় পুনরায় সেকেন্ড গেইটে শেষ হয়।

এই সময় আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীরা,” ইসকন জঙ্গী, ইন্ডিয়ার সঙ্গী। ইসকন জঙ্গি সংগঠন, ইসকন নিষিদ্ধ করুন। ইসকনের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না। ইসকন জঙ্গী, হাসিনা তাদের সঙ্গী। ইসকনের আস্তানা,এই বাঙলায় হবে না। ইসকন হটাও, দেশ বাঁচাও। হিন্দুত্ববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ। ইসকন মুক্ত বাংলাদেশ চাই” ইত্যাদি স্লোগান দেয়।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ ছাত্রশিবির এর শেকৃবি শাখার সভাপতি আবুল হাসান বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকার পতনের পর ইসকন আজ ধর্ষণ, গুম, খুনের সাথে জড়িত তবুও কেন প্রশাসন আজ নীরব। এটা বাংলাদেশ, এখানে কোনো জঙ্গিবাদের স্থান নাই।

তিনি বুয়েট প্রশাসনের উদ্দেশ্য করে আরো বলেন, সাড়ারাত আন্দোলন করে কেন শ্রীশান্ত রায়কে গ্রেপ্তার করা হলো। আগেই কেন গ্রেপ্তার করা হলো না?

শেকৃবি ক্যাম্পাসে অবস্থানরত উগ্রবাদী হিন্দুদের উদেশ্যে করে বলেন, তারা যদি ক্যাম্পাসে উগ্রতা প্রদর্শন করেন তাহলে হাসিনার মতো তাদেরকেই শাস্তি পেতে হবে।

বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত অনেক শিক্ষার্থী বলেন, তারা চান ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল কিংবা যে কোনো বাহ্যিক গোষ্ঠী যদি ক্যাম্পাসের শান্তি নষ্ট করে তখন তার যথাযথ তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে শাস্তি প্রদান।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *