সীমান্তে রেকর্ড সাফল্য: এক মাসে বিজিবির অভিযানে সাড়ে ৬ কোটি টাকার অবৈধ মালামাল আটক
![]()
নিউজ ডেস্ক
দেশের সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার ও চোরাকারবারি দমনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।খাগড়াছড়ি সেক্টরের আওতাধীন পানছড়ি ব্যাটালিয়ন (৩ বিজিবি) আয়োজিত এক বিশেষ প্রেস ব্রিফিংয়ে চট্টগ্রাম রিজিয়ন জানায়, মাত্র এক মাসের টানা অভিযানে ৬ কোটি ৩১ লাখ ৮২ হাজার ৫৭৫ টাকার বেশি মূল্যের বিপুল পরিমাণ অবৈধ মালামাল আটক করা হয়েছে। এটি সাম্প্রতিক সময়ের সর্বোচ্চ সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বিজিবির দক্ষিন-পূর্ব রিজিয়নের আওতাধীন ১৩টি ব্যাটালিয়ন এসব অভিযান পরিচালনা করে।
সকালে প্রেস ব্রিফিং এ এসব তথ্য জানান, ৩ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্নেল রবিউল ইসলাম।
বিজিবির তথ্যমতে, মাদকবিরোধী ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির অংশ হিসেবে পরিচালিত বিশেষ টহল ও অভিযানে চোরাকারবারিরা সীমান্ত এলাকায় কার্যত পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। গত এক মাসে আটক হওয়া মাদকের মধ্যে রয়েছে ৩৮৮.৩১ কেজি গাঁজা, ৪৭৭ বোতল বিদেশি মদ, ২০০ বোতল বিয়ার এবং ৪২৯ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট।
এ ছাড়া স্বাস্থ্যঝুঁকি ও দেশীয় বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলা গবাদিপশু পাচার প্রতিরোধে বিজিবির কঠোর নজরদারিতে ৫০১টি গরু ও ৩৬টি ছাগল আটক করা হয়েছে। একই সময়ে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ১৯ লাখ ৩১ হাজার ২৯৩ ঘনফুট অবৈধ কাঠ, ১১ লাখাধিক সিগারেট ফিল্টার, ৩২১০ প্যাকেট বিদেশি সিগারেট এবং পাচারের চেষ্টা করা ১৭টি বিভিন্ন প্রকার যানবাহন।
পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরাপত্তা ও জনআস্থার প্রতীক হিসেবে বিজিবির উপস্থিতি আরও শক্তিশালী হয়েছে গুইমারা সেক্টরের অধীনে রামগড় ব্যাটালিয়নে (৪৩ বিজিবি) নতুন ছোটফরিংগা বিওপি স্থাপনের মধ্য দিয়ে। এতে সীমান্ত পর্যবেক্ষণ ও নজরদারি আরও জোরদার হয়েছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
‘অপারেশন উত্তরণ’-এর অংশ হিসেবে পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিজিবি নিরবচ্ছিন্নভাবে দায়িত্ব পালন করছে। দায়িত্বপ্রাপ্তরা জানান, দায়িত্ব পালনকালে এখন পর্যন্ত ১১০ জন বিজিবি সদস্য শহীদ হয়েছেন। সাম্প্রতিক খাগড়াছড়ি অবরোধ চলাকালে সহিংসতার মুখেও বিজিবি সর্বোচ্চ সংযম ও পেশাদারিত্ব প্রদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছিল।
জনসেবায় বিজিবির মানবিক কার্যক্রমও সমানভাবে প্রশংসিত হয়েছে। গত এক মাসে দুটি মেডিক্যাল ক্যাম্পে ৭৪৪ জন দরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ দেওয়া হয়েছে। একই সময়ে এক হাজারের বেশি মানুষকে বিভিন্ন সহায়তা, গৃহনির্মাণ সামগ্রী, আর্থিক সহায়তা, সেলাই প্রশিক্ষণ ও শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। শিক্ষা সহায়তা হিসেবে ২৩০০ দরিদ্র শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে শিক্ষা উপকরণ। গত ৫ অক্টোবর গুইমারার জালিয়াপাড়া বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বিজিবির দ্রুত অংশগ্রহণ বড় ধরনের ক্ষতি থেকে বাজারটিকে রক্ষা করে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বিজিবি কর্মকর্তারা বলেন, তথ্যভিত্তিক সাংবাদিকতা তাদের অপরাধ দমনে কার্যকর ভূমিকা রাখে। ভবিষ্যতেও গণমাধ্যমের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে সীমান্তে নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী হবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, সীমান্তরক্ষা ও চোরাচালান দমনে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিজিবির কঠোর অবস্থান স্থানীয় জনমনে ব্যাপক সন্তুষ্টি সৃষ্টি করেছে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।