পার্বত্য চুক্তির ২৮ তম বার্ষিকী: অবৈধ অস্ত্রের প্রতিধ্বনিতে প্রত্যাশিত শান্তির প্রত্যাবর্তন ঘটেনি

পার্বত্য চুক্তির ২৮ তম বার্ষিকী: অবৈধ অস্ত্রের প্রতিধ্বনিতে প্রত্যাশিত শান্তির প্রত্যাবর্তন ঘটেনি

পার্বত্য চুক্তির ২৮ তম বার্ষিকী: অবৈধ অস্ত্রের প্রতিধ্বনিতে প্রত্যাশিত শান্তির প্রত্যাবর্তন ঘটেনি
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

ফিচার ডেস্ক

পার্বত্যাঞ্চলের অধিবাসীরা আজ যেনো নিজ স্বদেশেই পরবাসী। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে অনেকেই ফিলিস্তিনীদের মতো নিজ ভাগ্যবিধান মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় দেখছে না। চারদিকে অব্যাহত রয়েছে হত্যাকাণ্ড, অপহরণ, গুম, ধর্ষণ, অস্ত্রবাজি এবং চাঁদাবাজির বিস্তৃত উৎসব। পাহাড়জুড়ে প্রতিধ্বনিত হয় গোলাগুলির শব্দ, বাতাসে ভাসে বারুদের তীব্র গন্ধ, আর মানুষের পদচিহ্নে লেগে থাকে রক্তপাতের দাগ।

পাহাড়ের অসংখ্য মানুষ স্বজনহারা হয়েছে নৃশংসতম সন্ত্রাসীদের হাতে, জেএসএস (সন্তু লারমা চুক্তি পক্ষ গোষ্ঠী), ইউপিডিএফ (চুক্তিবিরোধী স্বায়ত্তশাসনপন্থী), কেএনএফ (কুকি ল্যান্ডের দাবিদার), মগ পার্টি (মারমা নেতৃত্বাধীন), ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক (ইউপিডিএফ মূল বিরোধী), এবং জেএসএস সংস্কার, এই সব সশস্ত্র গোষ্ঠীর নির্মম সহিংসতায়। এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো কেবল বাঙালিদেরই নিশানা করেনি; স্বজাতীয় উপজাতিদেরও একই মাত্রায় নির্যাতন ও হত্যার শিকার হতে হয়েছে। তাদের দাপট এতটাই বিস্তৃত যে চুক্তির পূর্বের মত পাহাড়ের প্রশাসনিক ব্যবস্থাও আজ তাদের অত্যাচারে নিত্য নাজেহাল। রাষ্ট্রীয় সক্ষমতার ওপর আস্থা কমে গেছে, আর সাধারণ মানুষের জীবন পরিণত হয়েছে এক অবিরাম ভয়ের বন্দিত্বে। ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আজ ২৮তম বার্ষিকী। চুক্তিকে ঘিরে নানা আনুষ্ঠানিক আয়োজন থাকলেও পাহাড়ের অধিকারবঞ্চিত মানুষের মধ্যে এর প্রতি কোনো উৎসাহ বা আশাবাদ নেই।

দুই যুগ আগে যে চুক্তিকে শান্তির নতুন ভোর হিসেবে স্বাগত জানানো হয়েছিল, তার প্রত্যাশিত শান্তির প্রতিফলন কতটুকু ঘটেছে, তা আজ স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। বাস্তবতা হলো, প্রতিশ্রুত শান্তি পাহাড়ে ফিরে আসেনি; বরং চুক্তির কার্যকারিতা নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন আরও ঘনীভূত হয়েছে।

গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সাধারণ মানুষের ওপর ধারাবাহিকভাবে ভয়াবহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। তাদের বর্বরতার কয়েকটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো:
২০০১: ইউপিডিএফ মুক্তিপণের জন্য ৩ জন বিদেশি নাগরিককে অপহরণ করে।
২০০৬: নানিয়ারচরে সেনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন গাজিকে হত্যা করা হয়।
২০১৮: বাঘাইছড়িতে ভোট গ্রহণ শেষে ফেরার পথে ইউপিডিএফ (প্রসিত গোষ্ঠী) এর ব্রাশফায়ারে ৭ জন নিহত ও ১৬ জন আহত হন।
২০১৮: নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমা, ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) প্রতিষ্ঠাতা তপন জ্যোতি বর্মাসহ মোট ৬ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
২০১৯: মানিকছড়িতে সেনা মেজর ইউপিডিএফের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন।
২০১৯: জেএসএস (সন্তু গোষ্ঠী) রাজস্থলীতে সেনা সদস্য মো. নাছিমকে হত্যা করে।
২০২৩: বান্দরবানে জেএসএস কর্তৃক সেনা জেসিও নাজিম হত্যা।
২০২২–২০২৪: কেএনএফের হামলায় ৭ জন সেনাসদস্য শহীদ হয়েছেন।

এসবের বাইরে অসংখ্য পাহাড়ি ও বাঙালি সাধারণ মানুষ চাঁদা আদায়, অপহরণ, খুন-গুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এসব সহিংসতা বরাবরই এই সশস্ত্র উপজাতি গোষ্ঠীগুলোর রাষ্ট্রবিরোধী মানসিকতা ও বিশ্বাসঘাতকতার নগ্ন প্রকাশ।

আরও একটি লোমহর্ষক ঘটনা ঘটে ২০২১ সালে, যখন রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে অনুপ্রবেশ করে সন্ত্রাসীরা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সমর বিজয় চাকমাকে গুলিবিদ্ধ করে হত্যা করে। সরকারি কার্যালয়ের ভেতরে একজন জনপ্রতিনিধিকে হত্যা, এমন দুঃসাহস কেবলমাত্র সুসংগঠিত সন্ত্রাসী শক্তির পক্ষেই সম্ভব।

এছাড়া চলতি বছরে ইউপিডিএফ মোটরসাইকেল চালক মামুন হত্যার প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে; এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের ঘটনা ঘটে। একইভাবে গত ২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ির সিঙ্গিনালায় অষ্টম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তাবাহিনীর ওপর হামলা, অবরোধের নামে বাঙালিদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ, গুইমারার রামসু বাজারে আগুন দেওয়া এবং ৩ জন নিহত হওয়ার মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়।

এসব ঘটনাই প্রমাণ করে, পার্বত্যাঞ্চলের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো দীর্ঘদিন ধরে সংগঠিত অস্ত্রবলে রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে এবং জননিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি হিসেবে রয়ে গেছে।

চাঁদাবাজির প্রসঙ্গে আলোচনা করলে প্রকাশ পায় যে, পার্বত্য চট্টগ্রামে এই অপকর্মের পরিমাণ অকল্পনীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বার্ষিক প্রায় এক হাজার থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা উত্তোলিত হয়। এর ত্রিশ শতাংশ ইউপিডিএফ-জেএসএস, কেএনএফ এর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়, অবশিষ্ট অর্থে তাদের বেতনভাতা, অস্ত্রক্রয়, প্রশিক্ষণ এবং দেশবিরোধী শক্তির পোষণ সাধিত হয়। পরিতাপের বিষয়, এই সন্ত্রাসীরা জাতির অধিকারের দোহাই দিয়ে সাধারণ জনগণ থেকে অর্থ আদায় করে, যা দিয়ে তারা বিলাসিতাপূর্ণ জীবনযাপন করে। জনসাধারণ তাদের দাবিমতো চাঁদা পরিশোধে নিঃশ্বাসরুদ্ধ।

চাঁদাবাজির আরও একটি ভয়াবহ তথ্য: সরকারি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রসারিত করতেও চাঁদা প্রদান অপরিহার্য। মূল উৎসসমূহ: সরকারি উন্নয়ন যেকোনো প্রকল্প, বনজ সম্পদ যেমন গাছ-বাঁশ, কৃষিজাত যেমন আদা-হলুদ, জুমচাষ, ফলমূল যেমন কাঁঠাল-আনারস, পশুপালন যেমন: হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলের ক্রয়বিক্রয় এবং যানবাহন, নৌকা, জেলেদের জাল, বাণিজ্যিক কার্যকলাপ ও পরিবার প্রতি গণচাঁদা। সাধারণ মানুষ ইউপিডিএফ প্রসিত, ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক বর্মা, জেএসএস সন্তু, জেএসএস সংস্কার এম.এন. মগ পার্টি এবং কেএনএফ নাথান বম-এর সংগঠনকে বিপুল অর্থ প্রদানে বাধ্য। পার্বত্যবাসীরা এই চাঁদাবাজি থেকে মুক্তির সামান্যতম সুযোগ নেই।

পার্বত্যাঞ্চলে প্রশাসনের ভূমিকা কী? বাস্তবতায় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নামমাত্র উপস্থিত। তারা নীরবতা অবলম্বনে বাধ্য, চাপের কারণে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণে অসমর্থ। আন্তর্জাতিক মহলের চাপে রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ হয় না, যার সুযোগে সন্ত্রাসীরা এই ভূখণ্ডকে নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত করেছে।

এই উপজাতি সন্ত্রাসীদের শক্তির মূল উৎস কোথায়? গোয়েন্দা তথ্য অনুসারে, প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহ অস্ত্র সরবরাহ, প্রশিক্ষণ এবং আশ্রয় প্রদান করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তাদের লেলিয়ে দিয়েছে। স্বাধীনতা লাভের পর থেকে প্রতিবেশীরা নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে উগ্রপন্থী উপজাতিদের অস্ত্রায়িত করেছে। দৃষ্টান্তস্বরূপ, পার্বত্য জেলাগুলির সীমান্তে কাঁটাতারের অনুপস্থিতি; প্রতিবেশী সীমান্তরক্ষী বাহিনী অস্ত্র পারাপারে সহায়তা করে; তাদের ভূমিতে জেএসএস-ইউপিডিএফ, কেএনএফ এর ঘাঁটি স্থাপিত। অন্যান্য সীমান্তে বিএসএফ অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের নির্মমভাবে হত্যা করলেও পার্বত্য তিন জেলায় এমন ঘটনা দুর্লভ, যা প্রতিবেশীর মদদের প্রমাণ।

২-রা চুক্তির ২৮ তম বার্ষিকী। দুঃখজনক যে, অতিবাহিত ২৮ বর্ষেও অবৈধ অস্ত্রধারীদের কারণে কাঙ্ক্ষিত শান্তি প্রত্যাবর্তিত হয়নি। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সন্তু মধ্যকার এই চুক্তি সম্পাদিত হয়, যাতে সরকার শর্তহীনভাবে জেএসএসের অসংখ্য দাবি মেনে নেয়—৭২টি মূল ধারাসহ ৯৯টি ধারা-উপধারা। চুক্তির লক্ষ্য ছিল দীর্ঘকালীন রাজনৈতিক সংকট এবং জেএসএস সশস্ত্র শাখা শান্তিবাহিনীর সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনী ও বাঙালিদের সঙ্গে সংঘর্ষ ও বিরোধ অবসান। কিন্তু জেএসএস মৌলিক শর্ত ‘অস্ত্র পরিত্যাগ’ লঙ্ঘন করে চুক্তির পরও অব্যাহত রেখেছে চাঁদাবাজি, অপহরণ, হত্যা এবং রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। চুক্তির সুবিধা ভোগ করে তারা ক্ষমতাসীন হয়েছে, অস্ত্র সংগ্রহ বৃদ্ধি করে সন্ত্রাসবাদ প্রসারিত করেছে। চুক্তির পর জেএসএস চার ভাগে বিভক্ত হয়েছে, কিন্তু তাদের লক্ষ্য অভিন্ন—চাঁদাবাজির ভাগবাটোয়ারা এবং আধিপত্য বিস্তারকেন্দ্রিক সংঘাত। ফলে সন্ত্রাস এবং চাঁদাবাজি বহুগুণিত হয়েছে, যা হতদরিদ্র পার্বত্যবাসীদের, যাদের জীবিকা কৃষি কাজ, লাকড়ি সংগ্রহ এবং জুমচাষনির্ভর, আরও নিপীড়িত করেছে। তারা অনিচ্ছাসত্ত্বেও চাঁদা প্রদানে বাধ্য। পার্বত্য নির্যাতিতদের যন্ত্রণা দেশের সুশীল, বুদ্ধিজীবীরা উপেক্ষা করে। এখানে মধ্যযুগীয় নৃশংসতায় মাতৃ-পুত্রীর সামনে পরস্পর ধর্ষণ, দিনদুপুরে হত্যাকাণ্ড দ্বারা আতঙ্ক সৃষ্টি, চাঁদা অপ্রাপ্তিতে নারী হলে গণধর্ষণ এবং পুরুষ হলে অপহরণ পূর্বক হত্যা। হত্যাকারীদের বিচার হয় না, প্রতিবাদকারীদের জরিমানা বা হত্যা দ্বারা দমিত করা হয়। আন্তর্জাতিক চাপ এবং রাষ্ট্রের উদাসীন নীতির কারণে আইনশৃঙ্খলা অবনতিগ্রস্ত।

তৎকালীন রাজনৈতিক দলসমূহ এই চুক্তিকে ‘কালো চুক্তি’ আখ্যায়িত করে দেশবিক্রির সঙ্গে তুলনা করেছে। এর অসাংবিধানিক ধারাগুলি সংশোধনের দাবিতে আন্দোলন সংগঠিত হয়েছে। চুক্তি সংবিধানবিরোধী, পার্বত্য বাঙালিদের মৌলিক অধিকার হরণকারী এবং রাষ্ট্রদ্বিখণ্ডনের দ্বারপ্রান্তে। সন্তু লারমার বিশ্বাসঘাতকতা এর মূলে। সরকার এবং জেএসএস সন্তু পক্ষ চুক্তির বার্ষিকী উদযাপন করলেও পার্বত্যবাসীরা প্রতিবাদের ভাষা হারিয়েছে, অস্ত্রের জোরে অসহায়।
পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে জেএসএস সন্তু লারমার অভিযোগ বাস্তবতা থেকে দূরবর্তী। চুক্তি অনুসারে সরকার ২৩৯টি সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার করেছে, যা নিরাপত্তা সংকট সৃষ্টি করেছে। সেনাক্যাম্প অপসারণে অবৈধ অস্ত্র বৃদ্ধি পেয়েছে, জনগণ নিরাপত্তাহীন, হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার নীরব। রাঙামাটির সাবেক এমপি দীপংকর তালুকদার বলেছিলেন, চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৬৫টি পূর্ণ বাস্তবায়িত, ৩টি প্রক্রিয়াধীন এবং ৪টি আংশিক। তবু জেএসএস অভিযোগ করে সরকারের বিরুদ্ধে। বাঙালি ও সচেতন মহল মনে করে, জেএসএস অস্ত্রসমর্পণের নামে ভাঁওতাবাজি করেছেন, কিছু অকেজো অস্ত্র জমা দিয়ে। বাকি অস্ত্র নিয়ে পাহাড়ে সন্ত্রাসবাদ কায়েম করছে। বিভিন্ন দাবিদাওয়া ঘিরে একাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠীর উদ্ভব পাহাড়কে আজ সন্ত্রাসকবলিত অঞ্চলে পরিণত করেছে, যেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা চরমভাবে বিঘ্নিত। চুক্তির ২৮ বছর পরও পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্রধারীদের অবাধ বিচরণ পার্বত্য চুক্তিকে স্বভাবতই প্রশ্নবিদ্ধ করে। ফলে চুক্তির লক্ষ্য, প্রত্যাশিত শান্তির প্রত্যাবর্তন, বাস্তবে কোনোভাবেই অর্জিত হয়নি।

বাঙালি সম্প্রদায়ের অভিযোগ, পার্বত্য চুক্তিতে বাঙালিদের স্পষ্টভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে। তাঁদের দাবি, এই চুক্তি একতরফাভাবে শুধু উপজাতি সম্প্রদায়ের অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রেই প্রাধান্য দিয়েছে, অথচ সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বাঙালিদের অধিকারকে উপেক্ষিত রেখেছে। চুক্তির মাধ্যমে ৩৮ হাজার বাঙালি গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত জেএসএস নেতাদের বিচার থেকে দায়মুক্তি প্রদান করা হয়েছে বলেও তারা অভিযোগ তুলে ধরেন। এতে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পার্বত্য বাঙালিদের প্রতি এক ধরনের ঐতিহাসিক বিশ্বাসঘাতকতা সংঘটিত হয়েছে বলে মনে করেন তারা।

এদিকে স্থানীয় অধিবাসীরা আরও জানান, চুক্তির পরে পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্রধারীদের ব্যাপক উপস্থিতি জননিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। তাঁদের মতে, সন্ত্রাস দমনে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি অপরিহার্য। রাষ্ট্রের অখণ্ডতা এবং স্থিতিশীলতা রক্ষায় প্রত্যাহারকৃত সেনাক্যাম্পগুলো পুনঃস্থাপন করাই এখন সময়ের দাবি।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *