সাজেকে হামে আক্রান্ত হয়ে ৩৫ দিনে ৯ শিশুর মৃত্যু, অপুষ্টি ও সময় মতো টিকা প্রধান না করাই প্রধান কারণ! - Southeast Asia Journal

সাজেকে হামে আক্রান্ত হয়ে ৩৫ দিনে ৯ শিশুর মৃত্যু, অপুষ্টি ও সময় মতো টিকা প্রধান না করাই প্রধান কারণ!

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের দুর্গম শিয়ালদহ পাড়া, অরুন পাড়া, লাংকাটান পাড়া ও হাইচ্যাপাড়ায় অন্তত তিনটি গ্রামে মহামারি আকার ধারণ করেছে হাম। হামে আক্রান্ত হয়ে গত ৩৫দিনে সেসব এলাকায় অন্তত ৯ জন শিশু নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় দেড় শতাধিক শিশু বর্তমানে আক্রান্ত রয়েছে এবং গত সপ্তাহে ৫জন অধিক আক্রান্ত শিশুকে হেলিকপ্টার যোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় সেনাবাহিনী।

এছাড়া এ ঘটনায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে পরবর্তী ১৪দিনে হামরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া শিশুরা হলো সাগরিকা ত্রিপুরা (১১), সুজন কুমার (৯) কহেন ত্রিপুরা (১০), বিধান ত্রিপুরা (১২) রেজিনা ত্রিপুরা (২), নিক্সন ত্রিপুরা (৩)। রপর ২২মার্চ প্রাণ হারায় গোরাতি ত্রিপুরা(৯), ২৩মার্চ বিকেলে সাগরিকা ত্রিপুরা(১৩), ২৪ মার্চ দিবাগত গভীর রাতে মারা যায় আরও এক শিশু। সর্বশেষ এ রোগে আক্রান্ত হয়ে গতকাল (৩১শে মার্চ) মঙ্গলবার মারা গেছে নিকেতন চাকমা (১৫)। সে সাজেকের বেটলিং এলাকার বাসিন্দা সুরেশ চাকমার সন্তান। সাজেক ইউপি সদস্য গরেন্দ্র ত্রিপুরা ৩১মার্চ মঙ্গলবার রাত ৯টায় মুঠোফোনে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, এ নিয়ে গত একমাসের ব্যবধানে সাজেকে ৯ শিশু মারা গেলো। সোমবার হতে মঙ্গলবার পর্যন্ত ওই সব এলাকায় নতুন করে হাম রোগে দেখা দিয়ে ১৫০জন শিশু আক্রান্ত হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বাঘাইছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএসও ডাঃ ইফতেখার আহম্মেদের সাথে বহু চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

সিভিল সার্জন ডাঃ বিপাশ খীসা জানিয়েছেন, সে এলাকার মানুষজন বিভিন্ন কুসংস্কারে বিশ্বাসী এবং টিকা দিতে অনীহা থাকায় শিশুদের হামের টিকা দিতে চায় নি, যার ফলে এ রোগটির প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ জানিয়েছেন, সাজেকবাসীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে ইতোমধ্যেই সেখানে সেনাবাহিনী-বিজিবি ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ৫টি টিম প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে কাজ করছে। তিনি জানান, বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে সাজেকে পুষ্টিগুন সম্মৃদ্ধ খাদ্য বিতরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অর্থও বরাদ্ধ প্রদান করা হয়েছে এবং সেগুলো বিতরণও করেছে বলে আমাকে জানানো হয়েছে। এছাড়াও উক্ত এলাকায় সম্প্রতি ইপিআইয়ের একটি উচ্চ পর্যায়ের টিমও সাজেকে সরেজমিনে বিষয়টি পর্যবেক্ষণে গিয়েছে এবং পুরো সাজেক ইউনিয়নে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ব্যাপক আকারে কর্মসূচী হাতে নিয়েছে বলেও জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ।

এর আগে, হামের প্রাদুর্ভাব বেশি পরিমানে ছড়িয়ে যাওয়ায় এবং শিশু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় গত ২৫ মার্চ চট্টগ্রামস্থ সেনাবাহিনীর এরিয়া কমান্ডার কার্যালয় থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ টিম হেলিকপ্টারে যোগে সাজেকে যায় এবং সেখান থেকে হামে আক্রান্ত ৫শিশুকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নিয়ে চিকিৎসা দেয়।