করোনা ঝুঁকির মধ্যেও রাঙামাটি থেকে মাছের গাড়ি যাচ্ছে ঢাকায়, পৃথক ভাবে থাকবে চালক-শ্রমিকর
 
                 
নিউজ ডেস্ক
রাঙামাটি জেলাবাসীর সকল আবেদন নিবেদন অগ্রাহ্য করেই রাঙামাটি থেকে মাছ রাজধানী ঢাকায় যাবেই, আগামী ১লা মে বন্ধ হওয়ার আগ অবধি। এমন সিদ্ধান্তের কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছে মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রনালয়। ফলে করোনার ঝুঁকির মধ্যেও প্রতিদিন নিয়মিত মাছের ট্রাক রাঙামাটি থেকে যাবে ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে।
ফলে বাংলাদেশ মৎস উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)’র রাঙামাটি ও কাপ্তাই ঘাট থেকে মাছের গাড়ী রাঙামাটি থেকে ঢাকার যাত্রাবাড়িতে যাচ্ছে নিয়মিতই। তবে মানুষের উদ্বেগ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ ও জেলা প্রশাসকের অনুরোধে, বিএফডিসি মৎস পরিবহন কাজে নিয়োজিত ২৪ জন ট্রাক চালক ও হেলপারকে পৃথকভাবে থাকার ব্যবস্থা ও তারা যেনো কারো সাথে না মিশেন সেই দায়িত্ব নেয়ার কথা জানিয়েছে এবং গাড়ীগুলো রাঙামাটি থেকে বের হওয়া ও ফেরার সময় জীবানুনাশক স্প্রে করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে বিএফডিসির ব্যবস্থাপক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের মাছের চাহিদা পূরণে কাপ্তাই হ্রদের মাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, তাই সরকারের উপর মহলের নির্দেশে মাছ আহরণ অব্যাহত রয়েছে। যেহেতু সামনেই মাছ আহরণ বন্ধ হয়ে যাবে, তাই এই মুহুর্তে বন্ধ করাও কঠিন। কিন্তু করোনার কারণে সবার নিরাপত্তার দিকটি মাথায় রেখে জেলা প্রশাসকের পরামর্শে আমরা ট্রাক চালকদের বিচ্ছিন্ন রাখার ব্যবস্থা করেছি এবং গাড়ীগুলোকে জীবানুনাশক স্প্রে করে ঝুঁকিমুক্ত করা উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি, কোন সমস্যা হবে না।’
তবে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক একে এম মামুনুর রশীদ জানিয়েছেন, এটা বন্ধ করতে পারলে আমাদেরও ভালো লাগতো, কিছুটা হলেও বাড়তি স্বস্তি পেতাম। কিন্তু মাছের চাহিদা ও পারিপার্শ্বিক বাস্তবতায় এটা করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই বিএফডিসিকে আমরা স্পষ্ট বলে দিয়েছি, তাদের মৎস পরিবহণের কারণে কোন সংকট তৈরি হয় বা কেউ আক্রান্ত হয়, এর দায় তাদেরকেই নিতে হবে।’ তারা সেই দায়িত্ব নিয়েছে, চালক-হেলপার এবং গাড়ীকে ঝুঁকিমুক্ত করার জন্য কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছে আমাকে। এখন দেখি কি হয়।’
প্রসঙ্গত, করোনার এই সময়ে রাঙামাটি থেকে মাছ পরিবহনের বিরোধীতা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিবাদ করছেন রাঙামাটির বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। এমনকি কাপ্তাই হ্রদে মৎস ব্যবসায়ীদের পৃথক দুটি সমিতি, রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক, রাঙামাটি লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতিসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ মাছ পরিবহন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। বিএফডিসি ‘মাছের চাহিদা’র বিষয়টি উল্লেখ করে এই দাবি অগ্রাহ্য করলেও, গত ১৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার থেকেই রাঙামাটি থেকে আনারস নিয়ে নারায়নগঞ্জগামী সকল ট্রাক পিকআপসহ যেকোন গাড়ী চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। মাছের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ আনারস পরিবহন বন্ধ হলেও মাছ কেনো বন্ধ হবেনা, এই প্রশ্নই তুলছেন সাধারন মানুষ।
