সমরখন্দে মোদি, সি-পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা - Southeast Asia Journal

সমরখন্দে মোদি, সি-পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে নির্দিষ্টভাবে কিছু বলা না হলেও গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে ক্রেমলিন সূত্রের বরাতে দুই নেতার বৈঠকের খবর জানিয়েছে রয়টার্স। তাতে বলা হয়েছে, খাদ্য, সারসহ বাণিজ্যসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দুই নেতার কথা হবে। এসসিওর সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী মোদি কাল বৃহস্পতিবার উজবেকিস্তানের সমরখন্দে যাবেন। দুই দিনের সম্মেলন শেষে আগামী শুক্রবার তিনি ফিরে আসবেন।

পুতিনের সঙ্গে মোদির বৈঠক সম্পর্কে রাশিয়া থেকে খবর এলেও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে মোদির বৈঠক হবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়; যেমন জানা যায়নি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গেও মোদির আলাদাভাবে বৈঠক হবে কি না, সে বিষয়ে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে শুধু জানিয়েছে, সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় কয়েকটি বৈঠক করবেন। কিন্তু তা কাদের সঙ্গে, সে বিষয়ে ভারত এখনো নীরব। স্পষ্টতই, দ্বিপক্ষীয় বৈঠক নিয়ে ভারত যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করছে। শোনা যাচ্ছে, উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শাভকত মিরজিওয়েভ ও ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গেও মোদির বৈঠক হবে।

সির সঙ্গে মোদির মুখোমুখি বৈঠক গত তিন বছর হয়নি। শেষবার দুই নেতার বৈঠক হয়েছিল ২০১৯ সালের নভেম্বরে ব্রাজিলে ব্রিকস সম্মেলনে। তারপর ২০২০ সালের জুন মাসে পূর্ব লাদাখের গালওয়ান এলাকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বেধেছিল। সেই থেকে কয়েকটি আন্তর্জাতিক বৈঠকে দুই নেতা ভার্চ্যুয়ালি যোগ দিলেও মুখোমুখি আলোচনা দুজনের হয়নি। এবার সেই সম্ভাবনা বিশেষভাবে আলোচিত হচ্ছে গত সোমবার গোগরা-হট স্প্রিং এলাকা থেকে দুই দেশের বাহিনীর পশ্চাদপসরণের জন্য।

এসসিওর আসরে মোদির সঙ্গে পুতিন ও সির বৈঠক হলে চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে তা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন ইনস্টিটিউট ফর ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিসের (আইডিএসএ) কর্মসমিতির সদস্য ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এস ডি মুনি। আজ বুধবার প্রথম আলোকে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট সির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদির বৈঠক হবে, এটা এ মুহূর্তের জনপ্রিয় বিশ্বাস। সীমান্ত নিয়ে দুই দেশের সমস্যা রয়েছে। সংঘর্ষের পর সম্পর্ক কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। দুই দেশই তাই চাইবে শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে সমস্যার সুরাহা করতে।

অধ্যাপক মুনি বলেন, ‘মোদির সঙ্গে বৈঠকে প্রেসিডেন্ট সিও আগ্রহী বলে আমার ধারণা। কারণটা বাণিজ্যিক। পূর্ব লাদাখে সংঘর্ষের পর কয়েক বছর ধরে বেশ কিছু চীনা সংস্থা ভারতের নজরে রয়েছে। অতএব দুই নেতারই একে অন্যের সঙ্গে বৈঠকের একটা তাগিদ রয়েছে। তা ছাড়া বর্তমান ভূকৌশলগত পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট পুতিনও চান চীন ও পাকিস্তান—দুই দেশের সঙ্গেই ভারতের সম্পর্ক স্বাভাবিক হোক।’ অধ্যাপক মুনি এ প্রসঙ্গে বলেন, শাহবাজ শরিফের সঙ্গে মোদির বৈঠক হলে সেটা হবে এক সুখকর চমক। ক্ষমতা লাভের পর শাহবাজ নিজে থেকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করার ইচ্ছার কথা প্রকাশ করে আসছেন।

এসসিওর সদস্যদেশ আটটি—ভারত, চীন, রাশিয়া, পাকিস্তান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তান। মধ্য এশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি ও বাণিজ্য প্রসারের পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় সার্বিক সহযোগিতা বাড়ানো এ সংগঠনের প্রধান উদ্দেশ্য।