পাহাড়ে স্থানীয় বাজার স্থাপনে জেলা পরিষদের অধীনে চালু হচ্ছে ভুমি বন্দোবস্তি
 
                 
নিউজ ডেস্কঃ
পার্বত্য এলাকায় স্থায়ী বাজার না থাকায় জনগনের ভোগান্তির বিষয়ে চিন্তা করে জেলা পরিষদের অধীনে পাহাড়ে স্থানীয় বাজার স্থাপনের ক্ষেত্রে ভূমির বন্দোবস্তি চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়।
২০০১ সালে বিএনপি সরকারের সময় তৎকালীন পার্বত্য উপমন্ত্রীর নির্দেশনায় পার্বত্য এলাকার বিরাজমান সমস্যার কারণে ভুমি বন্দোবস্তি কার্যক্রম স্থগিত রাখার পর, পরবর্তীতে ২০০৩ এবং ২০১৪ সনে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয় কেইস টু কেইস ভিত্তিতে বিচার বিশ্লেষণ করে ৮টি ক্ষেত্রে ভুমি বন্দোবস্ত শিথিল রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। যেগুলোর ক্ষেত্রে এখন বন্দোবস্তী দেয়া হচ্ছে সেগুলো হচ্ছে : ১) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ২) ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যথা মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ইত্যাদি ৩) শশ্মান, কবরস্থান ইত্যাদি ৪) বাণিজ্যিক কারণে বাজারফান্ডের জমি কেবলমাত্র স্বল্প মেয়াদী ইজারা প্রদানের ক্ষেত্রে, ৫) সরকারের কোন দপ্তরের জরুরী প্রয়োজনে, ৬) মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ (সবোর্চ্চ ৫ শতাংশ, প্রতি উপজেলা সদরে একটি) ৭) স্থানীয় পর্যটন (জেলা পরিষদের ব্যবস্থাপনায় মাষ্টার প্ল্যানের ভিত্তিতে) এবং ৮) জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্কাউটস ভবন নির্মাণ (সর্বোচ্চ ৫শতাংশ)। আর এবার নতুন করে বাজার স্থাপনে ভুমি বন্দোবস্তি শিথিলের বিষয়টির আদেশ জারি হলে ৯ নম্বরে যুক্ত হবে স্থানীয় বাজার স্থাপনে বন্দোবস্তি শিথিল করার বিষয়টি।
১২ জুন দুপুরে ভূমি বন্দোবস্ত প্রদানের ক্ষেত্রে আরোপিত স্থগিতাদেশ শিথিল করে বন্দোবস্তি চালুর বিষয়ে আন্তঃ মন্ত্রণালয়ের সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর এর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খগেশ্বর ত্রিপুরা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জ্ঞানেন্দু চাকমা প্রমুখ।
এসময় পার্বত্য মন্ত্রনালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মেসবাহুল ইসলামের সঞ্চালনায় রাঙামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশীদ, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম, বান্দরবান জেলা প্রশাসক দাউদুল ইসলাম, ভুমি মন্ত্রনালয়ের প্রতিনিধি ও পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বৈঠকে স্থানীয় বাজার স্থাপনের ক্ষেত্রে ভুমি বন্দেবস্তি অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আগে ৮টি ক্ষেত্রে বন্দোবস্তি দেয়া হতো, নতুন এই সিদ্ধান্ত আদেশ আকারে জারির পর থেকে স্থানীয় পর্যায়ে প্রয়োজন অনুযায়ী বাজার স্থাপন ও বন্দোবস্তী জেলা পরিষদ করবে, তবে মন্ত্রনালয় থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০০১ সাল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গার বন্দোবস্তি বন্ধ রাখা হয়েছে, এতে বাড়ছে ভুমি বন্দোবস্তি পাওয়ার আবেদনের জট। অনেকে মনে করছেন, সীমিত আকারে হলেও যদি যাচাই-বাছাই করে ভুমি বন্দোবস্তি চালু করা যায় তাহলে পাহাড়ে ভুমি বিরোধ অনেকটা কমে আসবে।
