শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স ও শান্তি চুক্তির যোগাযোগ কমিটির সদস্য এসএম শফি আর নেই, বিভিন্ন মহলের শোক
 
                 
নিউজ ডেস্ক
খাগড়াছড়িতে আ. লীগ নেতা এসএম সফি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
এসএম সফি খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও সেবামূলক কর্মকাণ্ডে অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তার দুটি কিডনিই ৯৫ ভাগ অকেজো হয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রীসহ আ. লীগ নেতাকর্মীরা চিকিৎসার দায়িত্ব ভার নেন। তিনি হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
আওয়ামীলীগের বর্ষীয়ান এই নেতা বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের আগে চট্টগ্রামের ফতেপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে হত্যার পর মদনহাটে (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা) বিক্ষোভের জেরে আরও কয়েকজনের সঙ্গে তার ওপরও হুলিয়া জারি করা হয়। পরে একই বছরের ২৫ আগস্ট তিনি পালিয়ে খাগড়াছড়ি আসেন। তিনি টানা তিনবার পৌরসভার কাউন্সিলর, উপজাতীয় শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের সদস্য ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। তিনি দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন। তার অসুস্থতার সময় খাগড়াছড়ি পৌর মেয়র রফিকুল আলম, আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম, ক্রীড়া সংগঠক জুয়েল চাকমা ও পরিবহন সেক্টরের পক্ষ থেকে আর্থিকভাবে সাহায্য করা হয়।
এসএম সফি ১৯৯০ সালের দিকে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ২০০০ সালের পর থেকে গত বিশ বছর ধরে নিষ্ঠার সাথে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামকে সশস্ত্র সংঘাতের পথ থেকে শান্তির পথে ফিরিয়ে আনতে পার্বত্য চুক্তির পক্ষে বিশেষ অবদান রেখেছিলেন এ নেতা।

এসএম সফির মৃত্যুতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক বিভিন্ন সংগঠন শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন।
এদিকে সন্ধ্যায় খাগড়াছড়িতে এসএম সফির ১ম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে তার আত্মার শান্তি কামনায় খতমে কোরআন ও দোয়া মোনাজাত করা হয়। খাগড়াছড়ি দলীয় কার্যালয়ে লাশ আনা হলে নেতাকর্মীরা শেষ দেখা দেখতে কার্যালয়ের সামনে ভীড় জমায়। এ সময় খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগ, সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, সংরক্ষিত আসনের এমপি বাসন্তি চাকমাসহ বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের পক্ষে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান।
খাগড়াছড়ি রিজিয়নের জিটুআই মেজর সালাউদ্দিন, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া, সমীর দত্ত চাকমা, সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার, পাজেপ সদস্য এড. আশুতোষ চাকমা, জুয়েল চাকমাসহ সংগঠনের নেতাকর্মী ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

পরে পৌর ঈদগাহ মাঠে জানাযার নামাজের পর খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলমসহ বিভিন্ন সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এতে জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন স্থরের মানুষ অংশ নেয়। জানাযা শেষে নিহতের লাশ চট্টগ্রামস্থ গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাকে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হবে বলে তার পারিবারিক সূত্র নিশ্চিত করে।
