ইয়েন ইয়েনের নেতৃত্বে ষড়যন্ত্রমূলক প্ল্যাকার্ড প্রদর্শনের প্রতিবাদ, রাঙামাটিতে পিসিসিপির বিক্ষোভ

ইয়েন ইয়েনের নেতৃত্বে ষড়যন্ত্রমূলক প্ল্যাকার্ড প্রদর্শনের প্রতিবাদ, রাঙামাটিতে পিসিসিপির বিক্ষোভ

ইয়েন ইয়েনের নেতৃত্বে ষড়যন্ত্রমূলক প্ল্যাকার্ড প্রদর্শনের প্রতিবাদ, রাঙামাটিতে পিসিসিপির বিক্ষোভ
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

নববর্ষের উৎসবকে কেন্দ্র করে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখা। চাকমা সার্কেল চীফ দেবাশীষ রায়ের স্ত্রী ইয়েন ইয়েন-এর নেতৃত্বে ঢাকায় আয়োজিত শোভাযাত্রায় ‘কুকি-চিন’ সন্ত্রাসীদের পক্ষে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শনের প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

সকালে শহরের কাঠালতলী থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ মিছিলটি প্রধান সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ করে বনরূপা সিএনজি স্টেশন চত্বরে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। পিসিসিপির জেলা সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসেন এর সভাপতিত্বে ও পৌর সভাপতি পারভেজ মোশাররফ হোসেন এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি)’র চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান, পিসিসিপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মোঃ খলিলুর রহমান, জেলা প্রচার সম্পাদক হুমায়ুন কবির, লংগদু উপজেলা শাখার সভাপতি মনির হোসেন প্রমুখ।

ইয়েন ইয়েন-এর বিরুদ্ধে সরব বক্তারা

সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, বাঙালি সংস্কৃতির সবচেয়ে আনন্দময় দিন পহেলা বৈশাখকে ব্যবহার করে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে পরিচিত প্রপাগান্ডা। চাকমা সার্কেল চীফ দেবাশীষ রায়ের স্ত্রী ইয়েন ইয়েন রাজধানীতে আয়োজিত নববর্ষ শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দিয়ে এমন কিছু প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন, যা কেএনএফ (কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট) সন্ত্রাসীদের পক্ষে মিথ্যা আবেগ তৈরি করার অপচেষ্টা হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়।

বক্তারা বলেন, “প্ল্যাকার্ডে বন্দী নারী-শিশুর চিত্র তুলে ধরে ইয়েন ইয়েন সরাসরি এমন এক বার্তা দিতে চেয়েছেন, যেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরীহ জনগণকে আটকে রেখেছে। বাস্তবতা হলো, এরা বন্দী হয়েছে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য—ব্যাংক ডাকাতি, নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলা ও হত্যার দায়ে।”

ইয়েন ইয়েনের নেতৃত্বে ষড়যন্ত্রমূলক প্ল্যাকার্ড প্রদর্শনের প্রতিবাদ, রাঙামাটিতে পিসিসিপির বিক্ষোভ

তাঁরা আরও বলেন, “যদি ইয়েন ইয়েন এসব সন্ত্রাসীদের মুক্তির দাবি করে থাকেন, তবে এটি কোনো মানবিক আহ্বান নয়, বরং রাষ্ট্রবিরোধী অবস্থান। তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া এখন সময়ের দাবি।”

পাহাড়ে ‘সেনা শাসন’ নয়, চলছে ‘চাকমা শাসন’

বক্তারা অভিযোগ করেন, পাহাড়ে তথাকথিত সেনাশাসনের অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। বরং পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্ষমতার শীর্ষস্থানে রয়েছেন চাকমা সম্প্রদায়ের নেতারাই—উপদেষ্টা, আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান, এমনকি শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান পর্যন্ত।

তাঁরা বলেন, “যেখানে প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে চাকমা প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত, সেখানে সেনা শাসনের অভিযোগ হাস্যকর। বরং পাহাড়ে চলছে একচেটিয়া ‘চাকমা শাসন’, যার ফলে আজ সত্যিকারের শান্তি ও সহাবস্থান হুমকির মুখে।”

চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও ‘আদিবাসী’ ইস্যু

সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর চাঁদাবাজি এখন রীতিমতো ‘শিল্পে’ পরিণত হয়েছে। তিন জেলায় বছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার চাঁদা তোলা হয়। সাধারণ কৃষক, ব্যবসায়ী এমনকি গৃহবধূরাও সন্ত্রাসীদের চাঁদার ভয়ে দিন কাটান।

তাঁরা বলেন, “‘আদিবাসী অধিকার’ এখন একটি ছদ্মবেশ মাত্র, যা ব্যবহার করা হচ্ছে পাহাড়ে নতুন করে অশান্তি সৃষ্টি ও আন্তর্জাতিক মহলে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য। পার্বত্য শান্তিচুক্তির পর সরকারের দেওয়া অধিকারে সন্তুষ্ট না হয়ে এখন কিছু চিহ্নিত গোষ্ঠী ‘আদিবাসী’ তকমা লাগিয়ে চুক্তি অমান্য করছে।”

বক্তারা সরকারের কাছে আহ্বান জানান, ইয়েন ইয়েন-এর মতো ব্যক্তিদের রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। সেইসঙ্গে পাহাড়ে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর অবস্থান নিতে।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।