বন বিভাগের গাফিলতি: সেনা অভিযানে উদ্ধারকৃত কাঠ রাতের আঁধারে সরিয়ে নিল ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা

বন বিভাগের গাফিলতি: সেনা অভিযানে উদ্ধারকৃত কাঠ রাতের আঁধারে সরিয়ে নিল ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা

বন বিভাগের গাফিলতি: সেনা অভিযানে উদ্ধারকৃত কাঠ রাতের আঁধারে সরিয়ে নিল ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার লক্ষীছড়ি উপজেলার গহীন জঙ্গল বর্মাছড়ি এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লক্ষীছড়ি জোনের অভিযানে শনাক্ত ও উদ্ধার প্রস্তুত অবস্থায় থাকা বিপুল পরিমাণ অবৈধ কাঠ বনবিভাগের বিলম্বিত পদক্ষেপের সুযোগে রাতের আঁধারে সরিয়ে নিয়েছে পাহাড়ের আঞ্চলিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ সশস্ত্র সদস্যরা ও তাদের সহযোগী কাঠ পাচারকারী চক্র।

সেনাবাহিনী ও স্থানীয় সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি বর্মাছড়িমুখ সংলগ্ন দেওয়ানপাড়া এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনী টহল অভিযানে ঐ কাঠের মজুদ শনাক্ত করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের কাছে বিষয়টি অবহিত করে।

বন বিভাগের গাফিলতি: সেনা অভিযানে উদ্ধারকৃত কাঠ রাতের আঁধারে সরিয়ে নিল ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা

তবে সেনাবাহিনী অভিযানের পরপরই বনবিভাগকে কাঠ আহরণ ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করলেও টানা তিন থেকে চার দিন বনবিভাগ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এতে সৃষ্ট পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসী চক্র গভীর রাতে সংগঠিত হয়ে কাঠগুলো অন্যত্র পাচার করে নেয়। সোমবার সকালে বনবিভাগের দল ঘটনাস্থলে গেলে কাঠ মজুদ করা স্থানে খালি বাঁশের মাচা দেখতে পায়।

স্থানীয়দের দাবি, বর্মাছড়ি ও আশপাশের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং কাঠ পাচারকারী গোষ্ঠীর সাথে আঁতাত করে নির্বিচারে বনসম্পদ ধ্বংস করে আসছে। সেনাবাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের অবৈধ স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল, আর সেই কারণেই সম্প্রতি সেনা উপস্থিতি ব্যাহত করতে বিভিন্ন অপপ্রচারেরও আশ্রয় নিচ্ছে গোষ্ঠীটি।

ইউপিডিএফের অবৈধ অর্থের উৎসে সেনাবাহিনীর হানা: ১ কোটি ২০ লাখ টাকার কাঠ উদ্ধার

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জানিয়েছে, পাহাড়ের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা, বনসম্পদ রক্ষা এবং অপরাধী চক্র দমনে তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। পরিবেশ ও বনসম্পদ রক্ষার স্বার্থে বন বিভাগের দ্রুত ও সমন্বিত ভূমিকা প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লক্ষ্মীছড়ি ভারপ্রাপ্ত বন কর্মর্তা মোঃ জাহাঙ্গির আলম জানান, গত অক্টোবর কাঠ আটক হলেও আমাদের কাছে খবর আসে আরো দেরিতে। আমাদের প্রস্তুুতি নিতে বিলম্ব হওয়ার কারণেই কাঠ পাচারকারিীরা আটককৃত কাঠগুলো সরিয়ে ফেলে। কাঠগুলো হেফাজতে আনতে কেনো বিলম্ব করলেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, জায়গাটি দুর্গম এলাকা হওয়ায় নিরাপত্তার সমস্যা থাকায় সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি কোনো কাঠ সেখানে নেই। সবগুলো কাঠ দুস্কৃতিকারীরা নিয়ে গেছে।

এদিকে, ইউপিডিএফ চক্রের অবৈধ কাঠ পাচার ও সশস্ত্র কার্যক্রম অঞ্চলের পরিবেশ, নিরাপত্তা ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে দীর্ঘদিন ধরে হুমকির মুখে ফেলেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বর্মাছড়িমুখ এলাকায় ফের সেনা অভিযান: অবৈধভাবে পাচারকালে ৪ লক্ষ টাকার কাঠ উদ্ধার

উল্লেখ্য, গত ২৯ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে বর্মাছড়িমুখ বাজার সংলগ্ন দেওয়ানপাড়া এলাকা থেকে প্রায় ৪০০০ ঘনফুট অবৈধ কাঠ উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর সদস্যরা, যার বাজার মুল্য আনুমানিক ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। সেসময় পাচারকারীরা সেনা টহলের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে গেলে উদ্ধারকৃত কাঠ বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এরপর গত শনিবার (১ নভেম্বর ২০২৫) লক্ষীছড়ি জোনের খিরাম সেনা ক্যাম্প কর্তৃক বকছড়িপাড়া এলাকা থেকে আরও ২০০ ঘনফুট কাঠ উদ্ধার করা হয়। যার বাজার মুল্য আনুমানিক ৪ লক্ষ টাকা।

লক্ষীছড়িতে অবৈধ ভাবে পাচারকালে সেনাবাহিনীর অভিযানে বিপুল পরিমাণ কাঠ জব্দ

সর্বশেষ, গতকাল রবিবার (২ নভেম্বর ২০২৫) লক্ষীছড়ি জোনের অধীন উল্টাছড়ি অস্থায়ী টহল ঘাঁটি হতে পরিচালিত আধিপত্য টহলের সময় কেরেক্কাটা এলাকায় পাহাড়ি ঝিরিতে অবৈধ কাঠের মজুদ শনাক্ত করা হয়। এদিন সেনা অভিযানে ৫০০ ঘনফুট অবৈধ কাঠ শনাক্ত করা হয়, যা সাথে সাথেই সংশ্লিষ্ট বন বিভাগ অফিসে অবগত করে তাদের হস্তান্তর করা হয়।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed