রাঙামাটিতে পিসিআর ল্যাব, আইসিইউ বেডসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম চেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রীর কাছে দীপংকর তালুকদারের চিঠি
![]()
নিউজ ডেস্ক
রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় প্রানঘাতি করোনা পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাব, আইসিইউ বেড, ভ্যান্টিলেশন ও কিডনী রোগীদের জন্য কিডনী ডায়ালাইসিস ইউনিট স্থাপন করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছে রাাঙমাটির সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার।
আবেদনে দীপংকর তালুকিদার বলেন, তিন পার্বত্য জেলার দুর্গম উপজেলা হওয়ায় করোনা ভাইরাসের পরীক্ষার জন্য জেলা সদরে আসতে ২ থেকে ৩ দিন লাগে। তাই করোনা পরীক্ষা দ্রুত করতে রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজে পিসিআর ল্যাব স্থাপন এবং রাঙ্গামাটিতে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের অবকাঠামো উন্নয়নসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবার সুবিধা সমূহ স্থাপন করলে তিন পার্বত্য জেলার বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত হবে। তিনি আরো বলেন, পার্বত্য তিন জেলায় (রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি) এ রোগের বিস্তার লাভ করতে শুরু করেছে। যা এই পর্যায়ে ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামে কোন করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষাগার (পিসিআর ল্যাব) না থাকায় এই তিন জেলার সংগৃহীত নমুনা সমূহ চট্টগ্রামের নমুনা পরীক্ষাগারে পাঠিয়ে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হয়। এ ক্ষেত্রে নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টের জন্য ৬ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় লাগার কারণে পরীক্ষায় পজেটিভ হওয়া রোগীরা নমুনা সমংগ্রহের পরবর্তী সময় থেকে কোয়ারেন্টাইন/আইসোলেশনে থাকার যথাযথ সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছে।
অন্যদিকে নমুনা সংগৃহীত সম্ভাব্য করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীরা রিপোর্ট প্রাপ্তির পূর্বে তারা নমুনা নেগেটিভ বা পজেটিভ কিনা তা নিশ্চিত না থাকায় অবাধে চলাফেরার কারণে এই ভাইরাসের সংক্রামণ পারিবারিক ও সামাজিকভাবে ব্যাপক হারে ছড়াচ্ছে। তাই পার্বত্য জেলা সমূহে করোনা ভাইরাসের সংক্রামন হ্রাস সহ সময়মত রোগীদেও প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এছাড়া পার্বত্য জেলা সমূহে শত শত কিডনী রোগী রয়েছে। যাদের মধ্যে অনেককেই ডায়ালাইসিস করতে হয়, কিন্তু এ অঞ্চলের হাসপাতাল সমুহ কিডনী রোগীর জন্য ডায়ালাইসিস এর ব্যবস্থা না থাকায় এসব রোগীদেও দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাই তিন জেলায় অন্তত ১ জেলা সদর হপাসাতালে কিডনী রোগীদের জন্য ১টি কিডনী ডায়ালইসিস ইউনিট স্থাপন প্রয়োজন।
তাই পার্বত্য ৩ জেলায় বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় লোকবল ও সরঞ্জামাদিসহ রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে করোনা ভাইরাসের ১টি নমুনা পরীক্ষাগার (পিসিআর ল্যাব) এবং ১০ টি আইসিইউ বেড ও ভেন্টিলেটর, প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করা সহ ১ টি কিডনী ডায়ালাইসিস ইউনিট স্থাপন করার জন্য অতি দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার।
উল্লেখ্য, পার্বত্য তিন জেলা দূর্গম পাহাড়ি অঞ্চল হওয়ার কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থাও সীমিত। যার কারণে কিছু কিছু এলাকার করোনা ভাইরাসের পরীক্ষার জন্য সংগৃহীত নমুনা জেলা সদরে পৌছাতে ১ থেকে ৩ দিন সময় প্রয়োজন হয়। তিন পার্বত্য জেলার ক্ষেত্রে দুর্গমতা ও জেলা হতে জেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিবেচনায় রাঙ্গামাটি জেলা মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিতি। এছাড়া রাঙ্গামাটিতে ২৫০ শয্য বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতল এবং একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ (রাঙ্গামাটি সরকারি মেডিকেল কলেজ) রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ও উল্লেখিত স্থাপনা সমূহের জন্য অবকাঠামো সুবিধার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে রাঙ্গামাটি জেলায় এই স্বাস্থ্য সেবার সুবিধা সমূহ স্থাপন কলে সহজে পার্বত্য ৩ জেলার বসবাসকারী জনগোষ্ঠী এই সব সেবা ভোগ করতে সক্ষম হবে।