আলীকদমে খ্রিস্টান মিশনারীদের সন্দেহজনক তৎপরতা
 
নিউজ ডেস্ক
পার্বত্য জেলা বান্দরবানের আলীকদমে বিভিন্ন এনজিও সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত খ্রিস্টান মিশনারীদের বেশকিছু তৎপরতায় উদ্বেগ তৈরী হয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। একটি খ্রিস্টান মিশনারী স্কুল প্রতিষ্ঠা ও সড়কের নামকরণ নিয়ে নানা বিতর্কের তৈরী হয়েছে সেখানে। সেন্ট মেরি’স নাম এর স্কুলটি শিক্ষার অন্তরালে দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠীকে খ্রিস্টান ধর্মে আকৃষ্ট করে ধর্মান্তকরণ করার চেষ্টা করতে পারে এমনই আশংকা স্থানীয়দের।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৮ সালের পহেলা জানুয়ারি পার্বত্য জেলা বান্দরবানের আলীকদম পানবাজার এলাকায় স্কুলটি নির্মিত হয়। সময়ের কালক্রমে ওই এলাকার রোডটিও “গীর্জা রোড” নামে পরিচিতি পেতে থাকে। বতমানে স্কুলটির সাইনবোর্ডে খ্রিস্টানদের ক্রশ চিহ্ন ব্যবহার করা হয়েছে। সেই সাথে রোড এর নাম “গির্জা রোড ” এই ভাবে সাইনবোর্ডে লিখিত হয়েছে।
প্রতিষ্ঠিত স্কুলটিতে উপজেলার অন্যান্য বিদ্যালয়ের মতো একসাথে চাকমা, মারমা, মুসলিম, খ্রিস্টান সকল ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের একসাথে লেখাপড়ার সুযোগ নেই। সেখানে শুধুমাত্র ভিন্ন ধর্ম থেকে খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে আসা শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়।
খ্রিস্টান মিশনারিদের ছত্রছায়ায় পরিচালিত এনজিওদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত অসচ্ছল ও নিরীহ উপজাতিদের অর্থ-বিত্তের টোপ দিয়ে পাহাড়ে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত করে।
আলিকদমের পানবাজার এলাকার সড়কটির নাম “গীর্জা রোড” নামকরণ নিয়েও এক ধরণের অসন্তোষ রয়েছে। জানা যায়, খ্রিস্টান একটি মিশনারী নিজেদের খেয়াল-খুশি মতো উক্ত সড়কটির নামকরণ করায় স্থানীয়দের অসন্তুষ্টি রয়েছে। এর আগেও পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে এসব মিশনারীরা তাদের ইচ্ছেমতো বিভিন্ন সড়ক ও স্থাপনার নামকরণ করেছিলো।
সূত্র মতে, বাংলাদেশের পার্বত্য এলাকাকে ঘিরে এনজিও এবং আন্তর্জাতিক খ্রিষ্টান সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ধর্ম প্রচারের লক্ষ্যে সুদীর্ঘ কাল ব্যাপী নানান মুখী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। চিকিৎসা, সমাজ ও মানবতার সেবার আড়ালে তারা মূলত পার্বত্য এলাকার দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠীকে ইউরোপীয় জীবনাচার ও দর্শনের দিকে আকৃষ্ট করার প্রয়াস চালাচ্ছে। স্কুল প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, হাসপাতাল স্থাপন, ঋণ প্রদান, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ, দারিদ্র্য বিমোচন, কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট ও নারীর ক্ষমতায়ন প্রভৃতি মুখরোচক কর্মসূচীর মাঝে নিরবে চলছে পাহাড়ে ধর্মান্তকরণ।
এর আগে, পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে সরকার কর্তৃক মেডিকেল কলেজ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিরোধীতা করে পাহাড়ী আঞ্চলিক সংগঠনসহ বেশ কিছু বিদেশী এনজিওর পক্ষ হতে বলা হয়েছিলো, পাহাড়ে ভূমি বে-দখল, উপজাতীয় সংস্কৃতি দূষণ ও পাহাড়ে ইসলামীকরণের লক্ষ্যেই সরকার এ প্রতিষ্ঠানটি রাঙামাটিতে স্থাপন করছে। অথচ, বর্তমানে পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায় খ্রিস্টান মিশনারীদের সন্দেহজনক এসব তৎপরতায় নিরব ভূমিকা পালন করছে পাহাড়ী আঞ্চলিক সংগঠন ও এনজিওগুলো।
অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নিযুক্ত ইসলামিক ফাউন্ডেশন-এর পেশকৃত তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, পার্বত্য জেলা রাঙামাটিকে কেন্দ্র করে পুরো পার্বত্য অঞ্চলকে খ্রিস্টানীকরণ তৎপরতা চালানো হচ্ছে। বিদেশী কূটনীতিকদের আনাগোনা এখানে সবচাইতে বেশি।
