পার্বত্য চট্টগ্রাম সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে বিওপি বাড়ানো হচ্ছে- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী - Southeast Asia Journal

পার্বত্য চট্টগ্রাম সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে বিওপি বাড়ানো হচ্ছে- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ভারতের মিজোরাম রাজ্য লাগোয়া বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম সীমান্তে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর’ তৎপরতা ঠেকাতে বর্ডার আউটপোস্ট বাড়ানো হচ্ছে। তিনি বলেন, সীমান্ত এলাকায় সন্ত্রাসী গ্রুপ আছে। তাদের ধাওয়া দিলে দুর্গম এলাকা দিয়ে পালিয়ে যায়। এজন্য বিওপির সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে, সীমান্ত সড়ক হচ্ছে। এগুলো হলে তাদের তৎপরতা বন্ধ হয়ে যাবে। ৩০ ডিসেম্বর বুধবার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র বিভিন্ন কর্মকান্ডে ২০২০ সালের বীরত্বপূর্ণ ও কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ৪টি ক্যাটাগরিতে সর্বমোট ৫৯ জনকে পদক প্রদান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বিজিবিকে এখন ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসাবে গড়ে তোলা হয়েছে। আকাশ, পানি এবং স্থলপথে বিজিবি স্বয়ংসম্পন্ন হয়ে উঠছে। বিজিবি এবং বিএসএফের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা করছি। বাংলাদেশের মাটির এক ইঞ্চি জায়গা সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। নববর্ষ ঘিরে নিরাপত্তার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবোলায় প্রস্তুত আছে। সব বিষয় নজরদারির মধ্যে রয়েছে।

পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে দশ জনকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ পদক (বিজিবিএম), বিশ জনকে রাষ্ট্রপতি বর্ডার গার্ড পদক (পিবিজিএম), দশ জনকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ পদক সেবা (বিজিবিএমএস) এবং ঊনিশ জনকে রাষ্ট্রপতি বর্ডার গার্ড পদক সেবা (পিজিবিএমএস) প্রদান করা হয়েছে।

পরে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সম্প্রতি সীমান্ত সম্মলনে ভারতের মিজোরামে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আস্তানার তালিকা দেয়া হয়েছে। তারাও তালিকা দিয়েছে। তাদের তালিকা অনুযায়ী আমরা কিছু পাইনি। বিজিবি মহাপরিচালক তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বর্তমান সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বিজিবি আজ ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এই বাহিনীতে আভিযানিক ক্ষেত্রে সংযোজিত হয়েছে ২টি অত্যাধুুনিক হেলিকপ্টার, যুগোপযোগী ও কার্যকরী ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্র, আর্মাড পার্সোনেল ক্যারিয়ার (এপিসি), রায়ট কন্ট্রোল ভেহিক্যাল, অল টেরেইন ভেহিক্যাল, উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন হাইস্পীড বোট, ইন্টারসেপ্টর বোট ও ইউটিলিটি বোট ইত্যাদিসহ অত্যাধুনিক সরঞ্জামাদি। এছাড়া ভারত ও মায়ানমারের সাথে বাংলাদেশের প্রায় ৮০ কিঃমিঃ সীমান্ত এলাকা ‘স্মার্ট বর্ডার সার্ভেইল্যান্স এন্ড রেসপন্স সিস্টেম’ এর আওতায় আনা হয়েছে। বিজিবি’র আভিযানিক কার্যক্রমকে আধুনিক, যুগোপযোগী ও গতিশীল করার লক্ষ্যে যশোরে একটি অত্যাধুনিক ডাটা সেন্টার ডিজাস্টার রিকভারী সাইট স্থাপন করা হয়েছে। প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিজিবি সদস্যদের পোশাক, আবাসন, বেতন ভাতা বৃদ্ধিসহ প্রভ‚ত উন্নয়ন সধিত হয়েছে। এ ছাড়া সর্বক্ষেত্রে বিজিবি’র উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে। এ জন্য বিজিবি’র প্রতিটি সদস্যের পক্ষ থেকে বিজিবি মহাপরিচালক বর্তমান সরকার ও মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সম্মানিত সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ, বিজিবি’র সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা, সৈনিক ও বেসামরিক কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ভারতের গৌহাটিতে গত ২৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম মিজোরামে পার্বত্য চট্টগ্রামের ‘সশস্ত্র আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ঘাঁটির’ অস্তিত্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সম্মেলন শেষে বিজিবির পক্ষ থেকে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, বিজিবি মহাপরিচালক ভারতের মিজোরাম রাজ্যের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সশস্ত্র আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আস্তানার উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং এই আস্তানাগুলো ধ্বংস করার জন্য অনুরোধ করেন। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারত সরকারের ‘জিরো টলারেন্স নীতির’ কথা উল্লেখ করে বিএসএফ মহাপরিচালক ওইসব আস্তানার (যদি থাকে) বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন।