রাশিয়া সফরে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান
নিউজ ডেস্ক
মস্কোতে এক সম্মেলনে যোগ দিতে রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং। রবিবার বার্মার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে রাশিয়ার উদ্দেশে তার যাত্রা করার কথা জানানো হয়েছে। অং সান সু চি-কে হটিয়ে ক্ষমতা দখলের পর এটি তার দ্বিতীয় প্রকাশ্য বিদেশ সফর। এর আগে আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দিতে ইন্দোনেশিয়া গিয়েছিলেন তিনি।
সফরের অংশ হিসেবে আগামী ২২ থেকে ২৪ জুন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ক মস্কো সম্মেলনে যোগ দেবেন তিনি। এমন সময়ে তিনি এ সফরে গেলেন যার মাত্র দুই দিন আগে মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধে একটি প্রস্তাব পাস করে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ। ১৮ জুন শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত প্রস্তাবটিতে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের ঘটনায় জান্তা সরকারের নিন্দা জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে অং সান সু চি-সহ রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি এবং শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। আইনগতভাবে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাব মানা বাধ্যতামূলক না হলেও, রাজনৈতিকভাবে এটি গুরুত্বপূর্ণ। মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিন স্কোরানের বার্গেনার সাধারণ পরিষদে বলেছেন, ‘বড় ধরনের গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা সেখানে বাস্তব হয়ে দেখা দিয়েছে। সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ কমে আসছে।’
এই প্রস্তাবের পক্ষে সাধারণ পরিষদের ১১৯টি দেশ সমর্থন জানিয়েছে। শুধুমাত্র বেলারুশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। ৩৬টি দেশ ভোটদানে বিরত থেকেছে। এর মধ্যে মিয়ানমারে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র বিক্রি করা দুই দেশ চীন ও রাশিয়ার নাম রয়েছে। রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গ উল্লেখ না থাকায় বাংলাদেশও এ প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল। ভোটদানে বিরত থাকা দেশগুলোর মধ্যে কোনও কোনও দেশের প্রতিনিধি বলছেন, এটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। জাতিসংঘে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ওলফ স্কোগ বলেছেন, ‘এই প্রস্তাবের মাধ্যমে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা, তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার এবং নিজেদের জনগণের ওপর সহিংসতাকে তুলে ধরা হয়েছে। সেই সঙ্গে আড়াল থেকে এসব বিষয় বিশ্বের নজরে আনা হয়েছে।’
শনিবার অবশ্য এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে নিজ দেশের অবস্থান স্পষ্ট করেছে বর্মি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়, এই প্রস্তাব মেনে চলার কোনও আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। ‘একপাক্ষিক অভিযোগ ও ভুল ধারণার’ ভিত্তিতে এটি করা হয়েছে। প্রস্তাবটি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে মিয়ানমারের তরফে জাতিসংঘ মহাসচিব এবং সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্টকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।