সংঘাত বন্ধ ও স্থায়ী শান্তির লক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রামে চুক্তির র্পূণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবী জেএসএস (এমএন লারমা)’র - Southeast Asia Journal

সংঘাত বন্ধ ও স্থায়ী শান্তির লক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রামে চুক্তির র্পূণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবী জেএসএস (এমএন লারমা)’র

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

 

নিউজ ডেস্ক

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৪ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে প্রত্যাশা-প্রাপ্তি ও নানা বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি -জেএসএস (এমএন লারমা)। মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চলমান রাজনীতি ও দীর্ঘ সময়ের পাহাড়ের মানুষের জন্য করে যাওয়া আন্দোলনে প্রাপ্তি ও প্রত্যাশায় হতাশার কথা জানান জেএসএস নেতারা।

দ্রুত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূণাঙ্গ বাস্তবায়নে দাবী জানিয়ে সংগঠনটির নেতারা বলেছেন, চব্বিশ বছর অতিক্রান্ত হলেও চুক্তি দুই তৃতীয়াংশ ধারাগুলো অবাস্তবায়িত থাকায় পাহাড়বাসী হতাশ ও সন্দিহান।

তারা বলছেন, শাসক গোষ্ঠী চুক্তির সুফল ভোগ করলেও চুক্তির অপর পক্ষসহ পাহাড়বাসী বঞ্চিত হচ্ছে। জেলা পরিষদগুলোতে শাসক গোষ্ঠীর অনির্বাচিত নেতারা চালাচ্ছে।

তবে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির র্পূণাঙ্গ বাস্তবায়নে সংঘাত বন্ধসহ পাহাড়ের শান্তির পথ সুগম হবে মন্তব্য করে চলমান উন্নয়ন তরান্বিত করতে চুক্তি বাস্তবায়ন জরুরী বলেও মন্তব্য করেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য ও সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি -জেএসএস (এমএন লারমা)’র কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি বিভূ রঞ্জন চাকমা, কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সভাপতি আরাধ্য পাল খীসা, সাধারণ সম্পাদক সিন্ধু কুমার চাকমা, কেন্দ্রীয় মহিলা সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদিকা ববিতা চাকমা, খাগড়াছড়ি সদর থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুশমিতা চাকমা প্রমূখ।

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি মোতাবেক ভূমি কমিশন আইনের বিধিমালা প্রণয়ন করে কার্যক্রম শুরুর দাবী জানিয়ে সংগঠনটির সিনিয়র নেতারা, ভূমি কমিশন আইন ২০১৬ সালে পাশ হলেও বিধিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে বিচারিক কার্যক্রম চালু হয়নি বলে অভিযোগ করেন।

এছাড়াও চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো বাস্তবায়ন না হওয়া, আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য জেলা পরিষদ সাধারণ প্রশাসন, স্থানীয় প্রশাসন, ভূমি ব্যবস্থাপনা, উপজাতীয় আইন ও সামাজিক কার্যাবলী নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আইন ও বিচারিক বিষয়ে স্বচ্ছতা না থাকায় অনিয়ম-দূর্নীতির ফলে পাহাড়ের মানুষের আশা-আকাঙ্খার কেন্দ্র বিন্দু পার্বত্য চুক্তি বর্তমানে নিরাশ ও হতাশার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা।

পাহাড়ে সংঘাত বন্ধ ও স্থানীয় শান্তির জন্য চুক্তি বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করে, চুক্তি বাস্তবায়ন বর্তমান সরকারের নৈতিক দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেন সংগঠনটির নেতারা। এ ছাড়াও জনমানুষের লক্ষ অর্জনের জন্য পার্টির প্রায় ৮৫ জন সদস্যকে ঘাতকদের হাতে প্রাণ দিতে হয়েছে বলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান এমএন লারমা সমর্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি নেতারা।

এ সময় চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষে ৭ দফা দাবী তুলে ধরেন তারা। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএন) অপর দাবীগুলো হচ্ছে, পার্বত্য চুক্তির আলোকে ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি কার্যকর করা, চুক্তি মোতাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে সাধারণ প্রশাসন, স্থানীয় পুলিশ, ভূমি ব্যবস্থাপনা, উপজাতীয় আইন ও সামাজিক বিচার কার্যাবলী ও ক্ষমতা নির্বাহী আদেশে মাধ্যমে হস্তান্তর, চুক্তি মোতাবেক স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়ে ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন অনুষ্ঠান, প্রত্যাগত জনসংহতি সমিতির সদস্যদের পুনর্বাসন করা, ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরনার্থী ও আভ্যন্তরীন উদ্বাস্তুদের যথাযথ পুনর্বাসন ও পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সমতলের আদিবাসীদের জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা।