তীব্র পানি সংকটে দীঘিনালায় জনজীবন বিপর্যস্ত - Southeast Asia Journal

তীব্র পানি সংকটে দীঘিনালায় জনজীবন বিপর্যস্ত

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

 

নিউজ ডেস্কঃ

তীব্র পানি সংকটে বিপর্যস্ত খাগড়াছড়ির দীঘিনালার জনজীবন। সাধারণত ছড়া, ঝিরির উপর নির্ভরশীল প্রত্যন্ত এলাকার মানুষজন । ছড়াতে কূপ খনন করে কিংবা পাহাড় থেকে চুয়ে পড়া পানির মুখে বাঁশ বসিয়ে সেগুলো সংগ্রহ করতো। যা দিয়ে খাওয়া, রান্নাবান্নাসহ সংসারের দৈনদিন কাজ চলতো। এখন প্রাকৃতিক উৎসগুলোতে পানি নেই। বর্তমানে পানির উৎসগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় তারা পড়েছে চরম ভোগান্তিতে। খাওয়াসহ, সংসারের দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য পানি পাচ্ছে না তারা। সারাদিন জুমচাষে ব্যস্ত থাকা জুমিয়ারা এখন দিনের অর্ধেক সময় ব্যয় করছে পানি সংগ্রহে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোঁটা ফোঁটা পড়া পানিগুলো সংগ্রহ করছেন স্থানীয়রা। গভীর খাদ ও পাথুরে পাহাড় হওয়ার কারণে কোথাও বসানো যাচ্ছে না টিউবওয়েল বা রিংওয়েলও।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তন, অতি খরা, অব্যাহতভাবে গাছপালা কেটে ফেলার কারণে প্রাকৃতিক পানির উৎসগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে।

খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়কের আট মাইল যৌথ খামার এলাকার বাসিন্দা দেলু রাণী ত্রিপুরা বলেন, পানির অভাবে অনেক কষ্টে আছি। যে কুয়া থেকে পানি সংগ্রহ করতাম সেখানে এখন ফোঁটা ফোঁটা পানি পড়ছে। খাওয়া, স্নানসহ সংসারের দৈনদিন কাজে ভালো করে পানি ব্যবহার করতে পারছি না। দিনের অর্ধেক সময় এখন পানি সংগ্রহে ব্যয় করতে হয়।

নয় মাইল এলাকার বাসিন্দারা জানান, ডিসেম্বর থেকে প্রাকৃতিক উৎসগুলো অনেকটা শুকিয়ে যায়। তবে এবারের অবস্থা বিগত বছরগুলোর তুলনায় ভয়াবহ। ঝিরি, ছড়া শুকিয়ে গেছে। দুই ঘণ্টা অপেক্ষার পর এক জগ পানি পাওয়া যায়। আশপাশে ছোটখাটো পানির উৎসগুলোতে ভোর থেকে দীর্ঘ লাইন থাকে। এদিকে এলাকায় তিনটি রিংওয়েল ও টিউবওয়েল থাকলেও তা অচল। অপরদিকে পাথুরে পাহাড়, পাহাড়ের খাদ থাকার কারণে চাহিদা মোতাবেক রিংওয়েল কিংবা টিউবওয়েল স্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না। পানির সংকটে জুমিয়ারা।

পেরাছড়া ৯ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্য ফলেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, এলাকায় তিনটি রিংয়েওল ও টিউবওয়েল থাকলেও সেগুলো দীর্ঘদিন ধরে অকেজো। যেখানে সকাল থেকে জুমিয়াদের জুমে চাষাবাদ নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা সেখানে এখন তারা দিনের অর্ধেক সময় পানি সংগ্রহে ব্যয় করছে। ঘর থেকে প্রায় ৫/৬ কিলোমিটার দূরবর্তী এলাকায় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে প্রাকৃতিক উৎস থেকে পানি সংগ্রহ করছে।

নয় মাইল ত্রিপুরা পাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তপু ত্রিপুরা বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের বলেছি যতটুকু সম্ভব বাসা থেকে পানি নিয়ে আসার জন্য। আর আমরাও যতটুকু পারছি তাদের জন্য পানি সংগ্রহ করছি। তবে তা পর্যাপ্ত নয়। এতে শিক্ষার্থীদের চাহিদা মিটছে না। এছাড়া শিক্ষার্থীদের পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য আমরা তাদের পানি সরবরাহ করতে পারছি না। এতে তারা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। পানি সমস্যা দূরীকরণে প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

শুধু দীঘিনালা নয়, জেলার পানছড়ি, লক্ষীছড়িসহ অন্য উপজেলার বিভিন্ন এলাকাতেও দেখা দিয়েছে পানির তীব্র সংকট।

You may have missed