খাগড়াছড়িতে ফুল বিঝুতে শুরু প্রাণের ‘বৈসাবি’ উৎসব
 
                 
নিউজ ডেস্ক
চেঙ্গী, ফেনী ও মাইনীর স্রোতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে খাগড়াছড়িতে ভোর থেকে শুরু হয়েছে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক ও প্রাণের উৎসব ‘বৈসাবি’।
বুধবার (১২ এপ্রিল) সকাল থেকে নদীর পাড়গুলো হাজারো তরুণ-তরুণীর মিলন মেলায় পরিণত হয় ফুল বিঝুকে কেন্দ্র করে।
পাহাড়ি সম্প্রদায়ের ছেলে-মেয়েরা হল্লা করে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশে নদী-খালে ফুল ভাসিয়ে পুরাতন বছরের গ্লানি মুছে নতুন বছরের শুভ কামনায় নিজেদের পবিত্রতা কামনা করে। এছাড়া ফুল দিয়ে ঘরের প্রতিটি দরজার মাঝখানে মালা গেঁথে সাজানো হয়। চেঙ্গী নদীতে চাকমা সম্প্রদায়ের সঙ্গে ফুল ভাসান জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান ও পুলিশ সুপার মো. নাইমুল হক। এছাড়া বৈসাবি উৎসব দেখতে এসেছে অনেক পর্যটকও।
এদিকে, বুধবার (১২ এপ্রিল) চাকমা সম্প্রদায় ফুল বিজু পালন করছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার(১৩ এপ্রিল) মূল বিঝু আর পরের দিন শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ বা গজ্জাপয্যা পালন করবে। এ সময় ঘরে ঘরে চলবে অতিথি আপ্যায়ন। একই সাথে আগামীকাল বৃহস্পতিবার(১৩ এপ্রিল) ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের হারিবৈসু, বিযুমা, বিচিকাতাল। ফুল বিজু, মূলবিজু ও বিচিকাতাল নামে নিজস্ব বৈশিষ্টতায় এ উৎসবে আনন্দের আমেজ ছড়ায়।

বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে হবে বর্ষবরণের র্যালি। শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) খাগড়াছড়িতে মারমা সম্প্রদায় সাংগ্রাইং উৎসবে ঐতিহ্যবাহী জলকেলি বা পানি খেলা।
১৯৮৫ সাল থেকে খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত তিন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে ‘বৈসাবি’ নামে এ উৎসব পালন করে আসছে। যা সময়ের ব্যবধানে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের লোকদের কাছে ‘বৈসাবি’ শব্দটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমা সম্প্রদায় তাদের নিজস্ব নামে ‘ত্রিপুরা ভাষায় বৈসু, মারমা ভাষায় সাংগ্রাই এবং চাকমা ভাষায় বিজু’ নামে এ উৎসব পালন করে থাকে। এ তিন সম্প্রদায়ের নিজস্ব ভাষার নামের প্রথম অক্ষর নিয়ে ‘বৈসাবি’ নামকরণ করা হয়।
চাকমা, ত্রিপুরা ও মারমা সম্প্রদায়ের পাশিপাশি তঞ্চঙ্গ্যা, বম, খিয়াং, লুসাই, পাংখোয়া, ম্রো, খুমি, আসাম, চাক ও রাখাইনসহ ১৩ ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠী তাদের ভাষা-সংস্কুতি ও অবস্থানকে বৈচিত্র্যময় করে তুলতে প্রতি বছর চৈত্রের শেষ দিন থেকে ‘বৈসাবি’ উৎসব পালন করে থাকে।
