রাষ্ট্রহীনতাই হলো ভয়াবহ রোহিঙ্গা সঙ্কটের মূল কারণ: জাতিসংঘ
![]()
নিউজ ডেস্কঃ
জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের অন্যতম তদন্তকারী রাধিকা কুমারাস্বামী বলেছেন, “কর্মজীবনে বিভিন্ন স্থানে বহু নৃশংসতা দেখেছি আমি। কিন্তু রোহিঙ্গাদের ধর্ষণ ও তাদেরকে জোর করে উৎখাতের ঘটনা আমার অন্তরাত্মাকে নাড়িয়ে দিয়েছে। রাষ্ট্রহীনতাই হলো ভয়াবহ রোহিঙ্গা সঙ্কটের মূল কারণ। এমন ভয়াবহতা তিনি দেখেছেন রুয়ান্ডা গণহত্যায়। মিয়ানমারে কিভাবে পলায়ণরত মানুষকে সেনাবাহিনী গুলি করেছে, কিভাবে নারীদের গণধর্ষণ করেছে, কিভাবে ঘরের ভিতর শিশুদের পর্যন্ত রেখে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে সে সম্পর্কেও তিনি বলেছেন। ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন এসব গণহত্যার জন্য মিয়ানমারের শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের বিচার করার আহ্বান জানিয়েছে। তবে জাতিসংঘের এ রিপোর্টকে প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমার। তারা বলছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ভুয়া অভিযোগ উত্থাপন করছে।
২০১৭ সালের আগস্ট থেকে রাখাইনে যে নৃশংসতা চালানো হয় তার তদন্ত করে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন ওই তদন্ত শেষে বলেছে, সেখানে গণহত্যা চালানো হয়েছে। ওই মিশনের অন্যতম সদস্য ছিলেন রাধিকা। গতকাল হেগে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাধিকা বলেছেন, রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গাদের শিকড় রয়েছে মিয়ানমারে। তাদেরকে অবশ্যই নাগরিকত্ব দিতে হবে।
তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীদের অবশ্যই নাগরিকত্ব দিতে হবে মিয়ানমার সরকারকে। একই সঙ্গে তিনি মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচিকে আরো গণতান্ত্রিক হওয়ার আহ্বান জানান।
প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মিয়ানমারে বসবাস করলেও বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমার মুসলিম রোহিঙ্গাদেরকে নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না। ২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গাদের মুসলমানদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী নৃশংস দমনপীড়ন চালানোর পর কমপক্ষে ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের তদন্তকারীরা তদন্ত শেষে বলেছেন, গণহত্যার উদ্দেশ্যে এসব নির্যাতন করা হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরে যেতে চাপ প্রয়োগ বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাধিকা। তিনি বলেছেন, একই সঙ্গে সহিংসতার জন্য যারা দায়ী তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। তার ভাষায়, এসব মানুষকে মিয়ানমারে জোর করে ফেরত পাঠানোর আগে আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে যে, সেখানকার পরিবেশ উপযুক্ত কিনা এবং রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের পথ পরিষ্কার কিনা।