ভারতের ত্রিপুরায় বাস টার্মিনাল থেকে নারী-শিশুসহ ৯ বাংলাদেশি আটক
নিউজ ডেস্ক
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার একটি বাস টার্মিনাল থেকে ৯ বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। তারা প্রথমে গুয়াহাটি এবং পরে সেখান থেকে গুজরাটের আহমেদাবাদে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
ত্রিপুরা পুলিশের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নর্থইস্ট লাইভ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নর্থ ত্রিপুরা জেলার একটি বাস টার্মিনাল থেকে নয়জন বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করা হয়েছে বলে রাজ্যটির একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন। আটককৃতদের মধ্যে তিনজন পুরুষ, তিনজন নারী এবং তিনজন শিশু।
গত সোমবার সন্ধ্যায় আসাম সীমান্তের কাছে ধর্মনগর শহরে আন্তঃরাজ্য বাস টার্মিনাল (আইএসবিটি) থেকে তাদের আটক করা হয়। আটকের সময় বাংলাদেশি এই নাগরিকরা গুয়াহাটির উদ্দেশে বাসে চড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। পরে সেখান থেকে ট্রেনে করে তারা গুজরাটের আহমেদাবাদে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিল।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শেখ সাহেব আলী (৬৮), বিল্লাল শেখ (৩৪), শারমিন বেগম (২৮), আতিকুর রহমান (৪০), চয়নিকা বেগম (২১), হাসি বেগম (২৫) ও তিন শিশু।
ধর্মনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (আইসি) শিবু রঞ্জন দে বলেছেন, ‘আমরা ধর্মনগর আইএসবিটিতে কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিকের বিষয়ে তথ্য পাই। পরে আমাদের দল সেখানে যায় এবং তিনজন পুরুষ, তিনজন নারী ও তিনজন শিশুকে খুঁজে পায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা নিজেদের বাংলাদেশের নাগরিক বলে স্বীকার করে এবং বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই অবৈধভাবে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশের কথা স্বীকার করে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছি এবং এখন তদন্ত চলছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজন অসুস্থ, আমরা তাদের আদালতে হাজির করব।’
আটককৃত নারীদের একজন চয়নিকা বেগম বলেন, ‘আমরা গুজরাটের আহমেদাবাদে যাচ্ছিলাম। সেখানে আমার শ্বশুর এবং শাশুড়ি দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন। আমি অবৈধভাবে প্রবেশ করে আহমেদাবাদ যাচ্ছিলাম।’
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সবচেয়ে বয়স্ক শেখ সাহেব আলী বলেন, ‘দালালকে সাত হাজার টাকা করে দিয়ে আমরা রোববার বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ত্রিপুরায় প্রবেশ করি। মোট সাতজন প্রাপ্তবয়স্ক এবং তিনজন শিশু একসঙ্গে ছিলাম। আমরা এখানে ট্রেনে পৌঁছালেও গুয়াহাটি যাওয়ার জন্য আরেকটি ট্রেন মিস করি। তাই, আমরা গুয়াহাটিতে যাওয়ার জন্য এখানে বাসের টিকিট কাটার চেষ্টা করছিলাম এবং তারপরে আহমেদাবাদে যাবো। আমার ছেলে সেখানে থাকে এবং আমি আগেও তাকে দেখতে গিয়েছি। আমরা চিকিৎসার জন্য এসেছি, বিশেষ করে আমার চোখের অস্ত্রোপচারের জন্য।’
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ওই এলাকায় ব্যাপক পুলিশি অভিযান চলাকালে আরজ মিয়া নামে আরেক বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হওয়ার আগে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের ৮৫৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে সীমান্তের ৫০ কিলোমিটার এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া নেই।