তিন বছরের কারাদণ্ড, ইমরান খান গ্রেফতার
নিউজ ডেস্ক
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানকে গ্রেফতার করেছে পাঞ্জাব পুলিশ। তোষাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর লাহোরের জামান পার্কের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার (৫ আগস্ট) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ ও ডন এসব তথ্য জানায়।
ইমরান খানকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে টুইট করেছেন পিটিআইয়ের পাঞ্জাব শাখা। টুইট বার্তায় বলা হয়েছে, ইমরান খানকে কোট লাখপাত জেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তার আইনজীবী দল বলেছে, এই রায়ের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আপিল করতে যাচ্ছেন তারা।
জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর আগে শনিবার সেশন জজ ইমরান খানের জামিন আবেদন খারিজ করে দেন। সেই সঙ্গে তোষাখানা মামলায় পিটিআই চেয়াম্যানকে অভিযুক্ত করে তার তিন বছরের কারদণ্ড দেন অতিরিক্ত ও দায়রা জজ বিচারক হুমায়ুন দিলাওয়ার। এ অবস্থায় আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন আইনি বিশেষজ্ঞরা।
বিচারক দিলাওয়ার তার রায়ে উল্লেখ করেছেন, পিটিআই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সম্পদের ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তিনি দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। নির্বাচনী আইনের ১৭৪ ধারার অধীনে পিটিআই প্রধানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এক লাখ রুপি জরিমানাও করা হয়েছে। এরপরই বিচারক সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে অবিলম্বে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে তার আইনজীবী ইন্তাজার হুসেন তাক্ষণিকভাবে রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাড়ি থেকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
পিটিআইয়ের অভিযোগ, রায় ঘোষণার আগেই তাকে অপহরণ করতে বাসায় পৌঁছে যায় পুলিশ।
জানা গেছে, শুনানির আগে আদালত চত্বরে নিরাপত্তা বাহিনীর অসংখ্য সদস্যকে মোতায়েন করা হয়। এছাড়া আদালতের ভেতর শুধুমাত্র আইনজীবী ছাড়া আর কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলেও জানা যায়। যদিও এ রায় ঘোষণার সময় ইমরান খান ও তার আইনজীবী কেউই উপস্থিত ছিলেন না।
তোশাখানা মামলা
গত বছর ক্ষমতাসীন জোটের আইনপ্রণেতারা বলেছিলেন, ইমরান খান তোশাখানা থেকে (প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন) যে উপহারগুলো রেখেছিলেন, তা বিক্রি থেকে আয় যা করেন, তার বিবরণ তিনি কাউকে জানাননি। সে বছরের ২১ অক্টোবর পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) জানায়, ইমরান খান সত্যিই উপহার সম্পর্কে মিথ্যা বিবৃতি ও ভুল তথ্য দেন।
তোশাখানা হলো মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অধীন একটি বিভাগ, যা অন্যান্য সরকার প্রধান ও বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের শাসক ও সরকারি কর্মকর্তাদের দেওয়া উপহার সংরক্ষণ করে। তোশাখানার নিয়ম অনুসারে, উপহার ভেদে একটা নির্দিষ্ট অর্থ জমা দিয়ে প্রাপ্ত উপহার নিজের কাছে রাখা যায়।
এর আগে, গত ৯ মে আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গেলে পিটিআই প্রধানকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বাইরে থেকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানি রেঞ্জার্স। এর প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠে গোটা পাকিস্তান। পরে দুই দিনের মাথায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।